Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা: খাদির ঐতিহ্য সন্ধানে

হাতে বোনা পোশাকআশাক নিয়েই মূলত ওঁর কাজ। বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতের বস্ত্রশিল্প। পাশাপাশি মানুষের প্রতি আগ্রহ থেকে তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ব্রতী হয়ে ওঠেন সিনেমা নির্মাণে।

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৩৯

সে বার অসমে কলকাতার সংস্থা ফ্রিড-এর উদ্যোগে কাজ চলছিল এ দেশের দুই বিশ্বখ্যাত বস্ত্রশিল্প বালুচরি আর মসলিন নিয়ে। সেখানেই এই বিষয়গুলি নিয়ে উৎসাহী হয়ে ওঠেন ইতালির নির্দেশক গোইয়া সেরিয়ানা ফ্রাঞ্চেত্তি (ছবিতে)। টেক্সটাইল শিল্প নিয়ে ওঁর ভীষণ আগ্রহ। এই জন্য ঘুরে বেড়ান বিশ্ব জুড়ে। ১৯৯৪-এ প্রতিষ্ঠা করেন ইন্দোরোমান নামে একটি সংস্থা। হাতে বোনা পোশাকআশাক নিয়েই মূলত ওঁর কাজ। বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতের বস্ত্রশিল্প। পাশাপাশি মানুষের প্রতি আগ্রহ থেকে তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ব্রতী হয়ে ওঠেন সিনেমা নির্মাণে। এ যাবৎ প্রায় ১৪টি চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন, যার ৬টির কাজ হয়েছে ভারতে। এরই মধ্যে একটি তথ্যচিত্র দ্য হুইল অব খাদি। স্বাধীনতা থেকে আজকের আধুনিক ভারতে এই খাদির নির্মাণ একটি ঐতিহ্য হয়েই রয়েছে আজও। এই ছবিতে খাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিষয়কেই তুলে ধরা হয়েছে। ছবিতে ভাষ্যপাঠ করেছেন গাঁধীজির প্রপৌত্রী তারা গাঁধী ভট্টাচার্য। খাদি এখন সারা ভারত জুড়েই রয়েছে, চাহিদা রয়েছে বিদেশেও। ১৯৫৬-য় ভারত সরকার খাদির প্রচার ও প্রসারে তৈরি করে খাদি গ্রামোদ্যোগ কমিশন। বৈদিক যুগ থেকে আজ পর্যন্ত খাদির শুদ্ধতা একই রকম রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত এবং অন্ধ্রপ্রদেশ— এই প্রধান তিন রাজ্যের কথা ধরা পড়েছে এখানে। এই ছবিতে মহাত্মা গাঁধীর জন্মসার্ধশতবর্ষের সঙ্গেই তুলে ধরা হয়েছে ভারত এবং ইতালির সম্পর্কের সত্তর বর্ষপূর্তি। গত তিন বছর ধরে ছবিটির শুটিং হয়েছে এ দেশে। ২০ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় ভারতীয় সংগ্রহশালার আশুতোষ শতবার্ষিকী হলে প্রদর্শিত হবে এই ছবিটি। শোনা যাবে পরিচালকের কথা। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক, বসু ফাউন্ডেশন ফর দি আর্টস, নতুন দিল্লির ইতালি দূতাবাস সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং কলকাতার ইতালি দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শন। সঙ্গে ‘কনস্টেলেশনস মাইগ্রেশন’ শীর্ষকে ইতালির শিল্পী পিয়েত্রো রুফোর একটি শিল্প প্রদর্শনী শুরু হয়েছে, এটি চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ১০-৫টা।

শতবর্ষে দেবীপ্রসাদ

তাঁর পঞ্চাশেরও বেশি সংখ্যক বইয়ের মধ্যে সব থেকে পরিচিত বোধ হয় ‘লোকায়ত’। ১৯৫৬ সালে প্রথমে বাংলায় প্রকাশিত, তিন বছর পরে ইংরেজিতে পুনর্লিখিত হয়ে প্রকাশ পায় ‘লোকায়ত: আ স্টাডি ইন এনশিয়েন্ট ইন্ডিয়ান মেটিরিয়ালিজ়ম’। ভারতে বস্তুবাদ চর্চায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের (১৯১৮-৯৩) বইটি। বিএ ও এমএ দু’টিতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম, দর্শনের ছাত্র ও অধ্যাপক দেবীপ্রসাদ কিন্তু শুধু দর্শনচর্চার গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকেননি। এক দিকে ছোটদের জন্য লেখালিখি, দাদা কামাক্ষীপ্রসাদের সঙ্গে ‘রংমশাল’ পত্রিকা সম্পাদনা, জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই-পুস্তিকা রচনা, অন্য দিকে ‘সায়েন্স অ্যান্ড সোসাইটি ইন এনশিয়েন্ট ইন্ডিয়া’র মতো বইতে ভারতে বিজ্ঞান-ভাবনার মূলানুসন্ধান। আজ ১৯ নভেম্বর তাঁর জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হচ্ছে। সন্ধে ৬টায় নন্দন-১-এ অনুষ্টুপের আয়োজনে স্মারক বক্তৃতা, বক্তা গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, বিষয় ‘দর্শন ও সাহিত্য’। ডিসেম্বরে প্রকাশিত হবে অনুষ্টুপের দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় জন্মশতবর্ষ বিশেষ সংখ্যা।

চিত্রনির্মাতা

গীতিকার, সুরকার, কবি, গায়ক, বাদ্যযন্ত্রী— সলিল চৌধুরীর এই সব পরিচয় কারও অজানা নয়। এমনকি তাঁর লেখা গল্প থেকেই যে ‘দো বিঘা জমিন’, ‘পরখ’, মিনু’-র মতো ছবি তৈরি হয়েছে তা-ও অনেকে জানেন। এ বারে সলিল চৌধুরী ফাউন্ডেশন অব মিউজ়িক, সোশ্যাল হেল্প অ্যান্ড এডুকেশন ট্রাস্ট নন্দন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় তুলে ধরতে চাইছেন এক অন্য সলিলকে। চিত্রনির্মাতা সলিল। ১৯৬৬ সালে ‘পিঞ্জরে কে পঞ্ছী’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন সলিল স্বয়ং, সমাদৃতও হয়েছিল সেটি। কাহিনি চিত্রনাট্য সঙ্গীত ছিল তাঁরই, মুখ্য ভূমিকায় বলরাজ সাহনি, মীনা কুমারী প্রমুখ। শৈলেন্দ্র ও গুলজ়ারের লেখা গান গেয়েছিলেন লতা, আশা ও মান্না দে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও গৌতম ঘোষের উপস্থিতিতে সেই ছবিরই প্রদর্শন আজ, সলিল চৌধুরীর ৯৩তম জন্মদিনে, বিকেল ৫টায়, নন্দন-২ প্রেক্ষাগৃহে। সঙ্গের ছবিটি তুলেছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য, সলিলের সঙ্গে দীর্ঘ দিন কাজ করা তালবাদ্যযন্ত্রী।

ঐতিহ্য-পদযাত্রা

কলকাতার রাস্তা, কিন্তু কলকাতার থেকেও পুরনো! হ্যাঁ, জোব চার্নকের আগেই তীর্থযাত্রীরা এই পথ ধরে চিৎপুরের চিত্তেশ্বরী মন্দির আর কালীঘাটের কালীমন্দিরের মধ্যে যাতায়াত করতেন। তখন অবশ্য রাস্তা ছিল কাঁচা। পরে সেই চিৎপুর রোড, আজকের রবীন্দ্র সরণির সংলগ্ন এলাকাই হয়ে ওঠে প্রাচীন কলকাতার ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শিল্প-কারিগরি এমনকি বাবুয়ানিরও কেন্দ্র। এ বার বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের উদ্যোগে ২৩ নভেম্বর সকাল ৮টায় সেই রাস্তারই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে শুরু হচ্ছে ঐতিহ্য-পদযাত্রা। ওঁরা ছুঁয়ে যাবেন জোড়াসাঁকো রাজবাড়ি, ঘড়িওয়ালা মল্লিকবাড়ি, লোহিয়া মাতৃসদন, রামলোচন ঘোষ-খেলাত ঘোষের বাড়ি, যদুলাল মল্লিকের বাড়ি, মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনের মতো ঐতিহ্যবাহী ভবন। যাত্রা-সমাপ্তি ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে।

তেইশের বি

সত্তরের দশকে এক সঙ্গে নাটক করতেন তাঁরা। তখন টগবগে যুবতী সবাই। তার পর, পেশা আর সংসারের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল নাটক। আজ তাঁরা প্রবীণা। ইতি রায়চৌধুরী, চন্দ্রা বসু, মধুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়রা ফের একত্র হলেন সেই নাটকের টানেই। কী আশ্চর্য, চার দশকের ও পার থেকে ফিরে এল রিহার্সালের ঘরটাও। সেই ঘরের ঠিকানাকেই নাম করে তৈরি হল নাটকের দল ‘তেইশের বি’। মঞ্চস্থ করছেন চন্দন সেনের ‘ফিরে দেখা’। ২৫ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায়, অবন মহলে। অভিনয়ে শুধু মহিলারাই, পুরুষের চরিত্রেও। পরিচালনার দায়িত্বে অবশ্য এক পুরুষ— শৈলিক নাট্যগোষ্ঠীর পরিচালক প্রবীর বসু। খানিক নিয়ম পাল্টেই, সফল মহিলাদের পিছনে পুরুষের অস্তিত্ব!

জন্মদিন

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর বাংলা কোষগ্রন্থ ‘ভারতকোষ’ সঙ্কলনের কাজ চলছে সে সময়, তাতে তিনি সম্পাদনাকর্মের অন্যতম প্রধান সংগঠক, বয়স সবে ত্রিশের কোঠায়, তাঁর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ শঙ্খ ঘোষের: ‘‘সব বয়সের বিজ্ঞানী সাহিত্যিক দর্শনবিদ ইতিহাসবিদেরা ভিড় করে আছেন মস্ত এক গোল টেবিলের চারধারে, আর এই সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছে বত্রিশ বছরের এক তরুণের নিষ্ঠা।’’ নির্জনতাপ্রিয় সেই মগ্ন তরুণ ও সারস্বতসাধকই প্রদ্যুম্ন ভট্টাচার্য। নদীবিশেষজ্ঞ কপিল ভট্টাচার্যের পুত্র, জন্ম ভাগলপুরে, ১৯৩২। বহুবিধ চর্চায় ছিল অপরিমেয় নিষ্ঠা। সম্পাদনার পাশাপাশি উল্লেখ্য বই: ‘টীকাটীপ্পনী’, ‘আখ্যান ও সমাজ: তারাশঙ্কর’। ২০ নভেম্বর প্রয়াত মানুষটির জন্মদিন, পালিত হবে ২১ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ৬টা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হলে। আয়োজনে শামিল।

কবিতা উৎসব

আরব সাগরমুখী বাড়ির বারান্দায় একটা সুদৃশ্য মেহগনি চেয়ার। বসে মুম্বইয়ের বর্ষা-শোভা দেখা যাবে, চেয়ারের দুই হাতল জুড়ে দিয়ে লেখার ব্যবস্থাও আছে। সেই চেয়ারেই জন্ম তিন কবির কবিতাবই আর অগণিত স্কেচের। চেয়ারের মালিক, তুষারধবল সিংহ যখন কলকাতা এলেন, সঙ্গে এল একটা উৎসবের ভাবনাও। এই শহরে বসেই যদি দেশবিদেশের কবিদের কবিতা শোনা যায়, বিনিময় হয় পারস্পরিক কবিতা-ভাবনা, কেমন হয়! সেই স্বপ্নই রূপ পেতে চলেছে আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব ‘চেয়ার পোয়েট্রি ইভনিংস’-এ। ২৩-২৫ নভেম্বর কলকাতায় একত্র হচ্ছেন ফ্লেমিশ, ডাচ, ম্যাসিডোনিয়ান, আইরিশ, ফরাসি, স্লোভেনিয়ান, হিন্দি, মালয়ালম, বাংলা ভাষার কবিরা। ২৩ নভেম্বর রোটারি সদনে উৎসব-শুরুতে থাকবেন শঙ্খ ঘোষ। ক্যালকাটা হেরিটেজ বাংলো, সাশা স্টুডিয়ো ছুঁয়ে সমাপ্তি গঙ্গাবক্ষে নৌকোয়।

প্রবহমান

রেবা হোর ও চন্দনা হোর। মা ও মেয়ে। দু’জনেই শিল্পী, কিন্তু আলাদা মনের। ছবি আঁকার দু’টি পথ দু’দিকে প্রবাহিত। তবে সেই প্রবাহ শিকড়-ছিন্ন নয়। প্রবহমান। রেবা হোরের ছবিতে পরিপার্শ্ব জেগে ওঠে রঙে। চন্দনার জল ও তেল রং আত্মজীবনকে স্পর্শ করে থাকে। এই দুই শিল্পীর সূত্রে আমাদের স্মরণে এসে যায় শিল্পী সোমনাথ হোরের কথাও। রেবা— সোমনাথ জায়া, আর চন্দনা তাঁদের কন্যা। কিন্তু এঁদের তিন জনের ছবির সুরে কী যে আশ্চর্য প্রভেদ! তবুও প্রবহমান এ কারণেই, যেন এক শিল্প-কর্মশালার মধ্যে নিজেদের জীবনযাপনে তাঁরা মগ্ন থেকেছেন। অনেক দিন পর রেবা হোরের প্রদর্শনী (সঙ্গে তারই একটি ছবি) কলকাতায়। আর এই প্রথম, মায়ের সঙ্গে আছে মেয়ের ছবিও। দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাসে (৯/২ ফার্ন রোড, গড়িয়াহাট) প্রদর্শনী চলবে ২৫ নভেম্বর অবধি, রোজ ১-৯টা।

কল্পবিজ্ঞান

এই মুহূর্তে বাংলা তথা ভারতীয় কল্পবিজ্ঞানের চেহারাটা ঠিক কেমন? তারই আভাস মিলবে ২২-২৪ নভেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও বাংলার প্রথম কল্পবিজ্ঞান-ফ্যান্টাসি বিষয়ক ওয়েব পত্রিকা ‘কল্পবিশ্ব’ আয়োজিত আন্তর্জাতিক কল্পবিজ্ঞান সমাবেশ ‘ওয়ার্কশপস অব হরিবল ক্রিয়েশন’-এ। মেরি শেলির অমর সৃষ্টি ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’ প্রকাশের ২০০ বছর উপলক্ষেই এই অনুষ্ঠান। ইংরেজি বিভাগের প্রেক্ষাগৃহে এই সমাবেশে থাকবেন এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়, অমিতানন্দ দাশ, রণেন ঘোষ, সমিত বসু, বোধিসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায়ের মতো বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বহু বিশিষ্ট প্রবীণ ও নবীন কল্পবিজ্ঞান লিখিয়ে ও গবেষক। বাংলা কল্পবিজ্ঞানের ভূত ও ভবিষ্যৎ এবং ইংরেজি ভাষায় লেখা ভারতীয় কল্পবিজ্ঞান— দু’টি বিষয়েই থাকছে আলোচনা। স্মরণ করা হবে কিংবদন্তি কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা প্রেমেন্দ্র মিত্র ও অকালপ্রয়াত কল্পবিজ্ঞান লেখক সিদ্ধার্থ ঘোষকে। কল্পবিশ্ব প্রকাশ করবে ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন ২০০’ বইটি। প্রকাশিত হবে জয়ঢাক প্রকাশনীর বই ‘চিরকালের হকিং’ ও ‘এফটিএল’ নামের একটি কল্পবিজ্ঞান অনুবাদ সঙ্কলনও। সম্মানিত করা হবে সত্তর দশকের বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা ‘বিস্ময়’-এর সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনকে। থাকবে আফরা শফিক সুলতানার একটি ডিজিটাল আর্ট প্রোজেক্ট। আলোচনা হবে কল্পবিজ্ঞান কমিকস নিয়েও।

জীবন ও ধর্ম

মাত্র ৪৯ বছরের জীবনে সংস্কৃত ও দর্শনের চর্চায় আমৃত্যু মগ্ন থেকেছেন কাত্যায়নীদাস ভট্টাচার্য। ১৯১৭ সালে বর্তমান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়ার চুন্টা গ্রামে জন্ম। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রটি হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ থেকে লজিক ও সংস্কৃতে রেকর্ড নম্বর পেয়ে আইএ, আশুতোষ কলেজ থেকে দর্শনে বিএ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেন, দু’টিতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তের প্রিয় ছাত্রটির শিক্ষকতা শুরু আশুতোষ কলেজে, পরে প্রেসিডেন্সি-সহ নানা সরকারি কলেজে। লেখালিখিও করতেন নিয়মিত। ১৯৬৬ সালে আকস্মিক প্রয়াণ ঘটে তাঁর। গত বছর জন্মশতবর্ষ পূর্তিতে শুরু হয়েছিল স্মারক বক্তৃতা, এ বার ২০ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় গোলপার্কে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের বিবেকানন্দ হলে দ্বিতীয় স্মারক বক্তৃতা দেবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিষয় ‘জীবন ও ধর্ম’।

সংরক্ষণ

ফি  বছর এ দেশে প্রচুর সিনেমা তৈরি হয়, কিন্তু তার সংরক্ষণ! বাস্তব শুনলে অবাক হতে হয়। ‘‘আমাদের নির্বাক ছবির ৯৯ শতাংশ আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের অজ্ঞতায়, এখনও হারিয়ে চলেছি নিয়ম করে,’’ বলছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র সংরক্ষণবিদ শিবেন্দ্র সিংহ দুঙ্গারপুর। ‘‘গুলজ়ার পরিচালিত ‘মাচিস’ আর কত পুরনো, কিন্তু তারই একটি ফিল্ম পাওয়া যায় না! বি এন সরকার তবু কিছুটা সাবধানী ছিলেন বলেই নিউ থিয়েটার্সে আগুন লাগা সত্ত্বেও অন্যত্র রাখা কপি ফিল্মগুলি বেঁচে গিয়েছিল। তবে আর নয়, সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।’’ তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার্সে গিয়ে এই সংরক্ষণ নিয়ে বলে এলেন। স্করসেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উদ্ধার করেছেন উদয়শঙ্করের ‘কল্পনা’। এ দিকে সত্যজিৎ রায়ের অপু ট্রিলজিও ওঁর হাত ধরে পুনরুদ্ধার হয়েছে। এ বারেই তা প্রথম প্রদর্শিত হল কলকাতায়। নিজে প্রতিষ্ঠা করেছেন ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। ক্রিস্টোফার নোলান সম্প্রতি দেখে গিয়েছেন ওঁর এই কাজ। ওঁর ভাবনায় এখন রয়েছে ইতিহাস তৈরি করা শতাধিক বাংলা ছবির সংরক্ষণ। আইসিসিআর-এ চলছে ওঁর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সংরক্ষণ নিয়ে কর্মশালা। দেশবিদেশ থেকে এখানে যোগ দিয়েছেন অনেকেই। কিছু দিন আগেই শিবেন্দ্র ফিল্ম সংরক্ষণ নিয়ে বলতে এসেছিলেন সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে। সেই সময়েই চলছিল কথা। রাজ্য সরকারের সহায়তায় এ বারে সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে এখানে। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যেই তার সূচনা হল ১৫ নভেম্বর, রবীন্দ্রসদনে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে জহর সরকার এবং বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টরা।

KOlkata Korcha কলকাতার কড়চা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy