Advertisement
E-Paper

তড়িঘড়ি গ্রেফতার নয়, যাদবপুরে সতর্ক পুলিশ

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় সাবধানে পা ফেলতে চাইছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মতো এগিয়েওছিল পুলিশ। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, এই ঘটনায় তাড়াহুড়ো করে কাউকে গ্রেফতার করলে ছাত্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৩

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় সাবধানে পা ফেলতে চাইছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মতো এগিয়েওছিল পুলিশ। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, এই ঘটনায় তাড়াহুড়ো করে কাউকে গ্রেফতার করলে ছাত্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সরাসরি গ্রেফতারের বদলে বিচারকের কাছে অভিযোগকারিণী ছাত্রীকে গোপন জবানবন্দির জন্য হাজির করানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

লালবাজারের একটি সূত্র বলছে, আজ, সোমবার ওই ছাত্রীকে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার ব্যাপারে আলিপুর আদালতে আর্জি জানানো হতে পারে। আর্জি মঞ্জুর হলে ওই তরুণী গোপন জবানবন্দি দেবেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত যে রকম নির্দেশ দেবে, সে ভাবেই এগোবে পুলিশ। আজ, সোমবার কলকাতা পুলিশের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলবেন।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ ‘ফেটসু’ আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক উৎসবে (ফেস্ট) ব্যাগ তল্লাশি করা নিয়ে এক ছাত্রীর সঙ্গে কয়েক জন পড়ুয়ার বচসা হয়। কলা বিভাগের ওই ছাত্রীর অভিযোগ, সে সময় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তিন ছাত্র তাঁকে ধাক্কা দেন, শ্লীলতাহানিও করেন। ওই রাতেই তিনি এ নিয়ে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে যাদবপুরের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বিশ্ববিদ্যালয়। সেই ঘটনায় কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীকে ঘেরাও করে পড়ুয়ারা। উপাচার্যের কথায় সেই ঘেরাও তুলতে গিয়ে পড়ুয়াদের উপরে পুলিশের লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় লালবাজারকে। অন্য দিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রবল চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত উপাচার্য পদ থেকে সরতে হয় অভিজিৎবাবুকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছরের সেই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল, তেমনই পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিপেটা করে ছাত্র আন্দোলন দমন করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। তাই এ বারের ঘটনার পরে লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা প্রথমেই সিদ্ধান্ত নেন, দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে অভিযুক্তদের। সেই মতো গোয়েন্দা বিভাগের এক পদস্থ কর্তাকে বিষয়টি ‘মনিটর’ করতে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে শনিবার কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল যাদবপুর থানায় যায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের কয়েকটি সূত্র মারফত পুলিশ খবর পায়, এই ঘটনায় যাদবপুরের পড়ুয়াদের একটি বড় অংশই অভিযোগকারিণীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে মত পোষণ করছেন। শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ফেটসু নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, অভিযুক্ত ছাত্রদের গ্রেফতার করা হলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয় ওই সভায়। তা থেকেই পুলিশ অনুমান করছে, শ্লীলতাহানির এই ঘটনায় ছাত্রদের গ্রেফতার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বর্ণেন্দু বর্মণ জানান, ঘটনার পর দিনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তাঁদের তরফে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। সেখানে দ্রুত, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।

যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ বলছেন, ফেস্ট-এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে নেশা-বিরোধী প্রচার করা হয়েছিল। উৎসব প্রাঙ্গণে যাতে কেউ নেশা না করেন, তার জন্যই ব্যাগ পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এই তল্লাশিতে কর্তৃপক্ষের সায় ছিল বলেও জানিয়েছে ছাত্র সংগঠন। পড়ুয়াদের একাংশ জানিয়েছেন, মেয়েদের ব্যাগ মেয়েরাই তল্লাশি করছিলেন। ছেলেদের ব্যাগ ছেলেরা। সে সময় ওই পড়ুয়ার সঙ্গে কয়েক জনের বচসা হলেও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেনি বলেই পড়ুয়াদের ওই অংশটি দাবি করেছে।

jadavpur university molestation fest rape police agitation arts department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy