লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
শহরের রাস্তায় নজরদারি আরও জোরদার করতে ‘লং রেঞ্জ’ ক্যামেরা কিনতে চলেছে লালবাজার। এই ক্যামেরার মাধ্যমে দেড় থেকে দু’কিলোমিটার দূরত্বের সব কিছুর উপরে নজরদারি চালানো যাবে। শুধু তা-ই নয়, এই ক্যামেরা দিয়ে যে কোনও কিছু জ়ুম করেও দেখে নিতে পারবেন পুলিশকর্মীরা। লালবাজার জানিয়েছে, এই ক্যামেরার সাহায্যে বিভিন্ন দিকের ছবি দেখা যাবে। এর পাশাপাশি, সমাবেশ, মিছিল বা গোলমালের ছবি তুলতে এ বার হেলমেটে বসানো ক্যামেরার ব্যবহার করতে চলেছে লালবাজার। সেই ক্যামেরা কেনারও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিএসএফ লং রেঞ্জ ক্যামেরা ব্যবহার করে। মাইলের পর মাইল ফাঁকা জায়গায় কাঁটাতার পেরিয়ে কেউ বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে কি না, তা নজরে রাখতে এই ধরনের ক্যামেরা কাজে লাগে। এ বার শহরের নিরাপত্তার কাজেও এই ক্যামেরা ব্যবহার করতে চাইছে লালবাজার।
সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আপাতত চারটি লং রেঞ্জ ক্যামেরা কেনা হবে। এক-একটি ক্যামেরার দামই কয়েক লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তায় এই ক্যামেরা বসিয়ে মহড়া দেওয়া হয়েছে। এই ক্যামেরাগুলি কেনার পরে কোথায় কোথায় বসানো হবে, তা নিয়ে লালবাজারের কোনও কর্তা এখনই কিছু বলতে চাননি। তবে, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, রেড রোড সংলগ্ন রাস্তায় প্রথমে তা বসানো হবে।
বর্তমানে শহরের যান নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নজরদারির জন্য কয়েক হাজার ক্যামেরা রয়েছে। ‘নির্ভয়া’ প্রকল্পের অধীনে আরও কয়েক হাজার ক্যামেরা বসতে চলেছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু ওই সমস্ত ক্যামেরা স্বল্প দূরত্বের। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কয়েক মিটার এলাকার উপরেই নজরদারি চালানো যায়। যার ফলে একটি রাস্তার গোটা অংশ কোনও ভাবেই ক্যামেরার নজরে থাকে না। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, রেড রোডে বিভিন্ন দূরত্বে ক্যামেরা বসানো রয়েছে। কিন্তু এই লং রেঞ্জ ক্যামেরা বসানো হলে একটি ক্যামেরার মাধ্যমেই রেড রোডের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সহজে নজরদারি চালানো যাবে। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ক্যামেরায় অপটিক্যাল জ়ুমিং লেন্স থাকার ফলে খুব সহজেই দূরের দৃশ্য কাছে চলে আসবে। আবার কুয়াশা বা মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও পরিষ্কার ছবি মিলবে এই ক্যামেরায়।
অন্য দিকে, মিছিল-সমাবেশ বা কোনও গোলমালের ছবি তুলে রাখতে হেলমেট ক্যামেরা কিনতে চলেছে লালবাজার। যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর সদস্যদের মাথায় থাকা হেলমেটে লাগানো থাকবে। ওই ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো ঘটনা রেকর্ড করা যাবে। আবার হেলমেটের মধ্যে যে ক্যামেরা রয়েছে, সহজে তা কেউ বুঝতেও পারবে না। আপাতত দশটি হেলমেট ক্যামেরা কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তার জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে। পুলিশকর্তারা আশা করছেন, চলতি বছরের শেষেই হেলমেট ক্যামেরা হাতে চলে আসবে। এক পুলিশকর্তা জানান, হেলমেট ক্যামেরার ব্যবহার সফল হলে ভবিষ্যতে আরও কেনা হবে। উল্লেখ্য, ক্যামেরায় ছবি তোলার জন্য কলকাতা পুলিশের পৃথক কর্মী-বাহিনী রয়েছে। যাদের কাজ বিক্ষোভ, গোলমাল, সমাবেশ কিংবা মিছিলের ছবি তুলে লালবাজারে পাঠানো।
পুলিশ জানিয়েছে, হেলমেট ক্যামেরা থেকে সরাসরি ফুটেজ পাঠানো যাবে না। ক্যামেরার মধ্যে থাকবে ৩২ জিবি মেমরি কার্ড। তাতেই ওই ফুটেজ জমা হবে এবং পরে তা দেখতে পারবেন পুলিশকর্তারা। ক্যামেরা বসানো ওই হেলমেট দেখতে অবিকল ক্রিকেটের হেলমেটের মতোই। তাতে শুধু বাইরে থেকে লাগানো থাকবে ক্যামেরা। যা সহজে নজরে পড়বে না সকলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy