Advertisement
E-Paper

মুচলেকা ছাড়া মিছিল নয়

পুলিশের এই পদক্ষেপকে অবশ্য ভাল ভাবে নিচ্ছেন না বিরোধীরা। আন্দোলনের ক্ষেত্রে এই মুচলেকা না দেওয়ার পক্ষেই সরব হয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ১৩:৩০
মিটিং-মিছিলের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে মুচলেকা ব্যবহার করতে চাইছে লালবাজার।

মিটিং-মিছিলের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে মুচলেকা ব্যবহার করতে চাইছে লালবাজার।

আইনের বইয়ে সবই ছিল। কিন্তু মিটিং-মিছিলের অনুমতি দেওয়ার সময়ে তার লেখাজোখা হতো না। এ বার কলকাতার রাজপথে আন্দোলনের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই আইনগুলিকেই কার্যত মুচলেকা হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি আন্দোলনের অনুমতিপত্রের সঙ্গে ছ’দফা শর্ত ছাপানো হয়েছে। সেই শর্ত লিখিত ভাবে মানার কথা জানালে তবেই অনুমতি দেওয়া হবে।

পুলিশের এই পদক্ষেপকে অবশ্য ভাল ভাবে নিচ্ছেন না বিরোধীরা। আন্দোলনের ক্ষেত্রে এই মুচলেকা না দেওয়ার পক্ষেই সরব হয়েছেন তাঁরা।

লালবাজারের খবর, অনুমতিপত্রে ৬টি শর্তের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট শব্দমাত্রায় মাইক বাজানোর পাশাপাশি কোনও উস্কানিমূলক স্লোগান দেওয়া, লাঠি বা তরোয়াল নিয়ে মিছিল করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, মিছিল থেকে আইন-শৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটানো এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হলে আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিছিল-মিটিংয়ে পুলিশের নির্দেশ মেনে চলতে হবে এবং সর্বশেষ শর্তে লেখা রয়েছে, পুলিশ যে কোনও সময়ে অনুমতি তুলে নিতে পারে।

পুলিশের একাংশ বলছেন, এ সবই আইনসিদ্ধ। কিন্তু এত দিন তা এ ভাবে হতো না। সবটাই মৌখিক হতো। অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘বড় ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকলে পুলিশ অনুমতি প্রত্যাহার করতেই পারে। কিন্তু এই ক্ষমতার ব্যবহার সাধারণত করা হয় না।’’ তবে এখন এমন ব্যবস্থা কেন?

এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়্যাটসঅ্যাপেও সাড়া মেলেনি। তবে পুলিশের একাংশের ব্যাখ্যা, গত মে মাসে বামেদের নবান্ন এবং বিজেপির লালবাজার অভিযান ঘিরে হাঙ্গামার পরিপ্রেক্ষিতেই এই নয়া কৌশল নেওয়া হয়েছে। কারণ, এই মুচলেকা দিলে রাজনৈতিক দলগুলির নেতাদের আইনি লাগাম পরানো সম্ভব হবে। লালবাজারের এক প্রবীণ পুলিশ অফিসারের ব্যাখ্যা, লিখিত ভাবে শর্ত মেনে নিলে নেতারা হাঙ্গামা বাধানোর ক্ষেত্রে সচেতন থাকবেন।

পুলিশের এই কৌশলকে অবশ্য জরুরি অবস্থার নামান্তর বলেই মনে করছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলছেন, ‘‘রাজ্য সরকার ভয় পেয়েছে। জোর করে প্রতিবাদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে। এ ভাবে কাজ হবে না।’’ ১০ জুলাই ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজভবন অভিযান রয়েছে। তাদের যুব সংগঠন যুবলীগের নেতা সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘পুলিশ তো শুধু আধার কার্ডের নম্বর চাইতে বাকি রেখেছে!’’

এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করব, তার কাছেই মুচলেকা দিয়ে অনুমতি নেব! এ ভাবে আন্দোলন হয় না। এ সব মানার প্রশ্নই ওঠে না।’’ রাহুলবাবুর বক্তব্য, সরকার চায় তৃণমূল ছাড়া আর কারও মিছিলের অধিকার থাকবে না। ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মিছিল করলে এই মুচলেকা দেবেন তো?’’ প্রশ্ন তাঁর।

Lalbazar rally covenant মুচলেকা KP সুপ্রতিম সরকার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy