Advertisement
E-Paper

মশা হটাতে চাঁদা তুলে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন থানা

ডিউটি শেষ করে ফিরে ক্লান্ত শরীরে ব্যারাকের মধ্যে মশারি ছাড়াই শুয়ে ছিলেন এক পুলিশকর্মী। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে গেলেন থানার এক আধিকারিক। নির্দেশ দিলেন, মশারি না টাঙিয়ে কেউ যেন শুয়ে না থাকেন।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

এক জন পুলিশকর্মী লাঠি হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন থানার বিভিন্ন দিকে। যেখানেই কোনও পাত্রে জল জমে থাকতে দেখছেন, লাঠি দিয়ে সেই পাত্রটি উল্টে দিচ্ছেন।

ডিউটি শেষ করে ফিরে ক্লান্ত শরীরে ব্যারাকের মধ্যে মশারি ছাড়াই শুয়ে ছিলেন এক পুলিশকর্মী। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে গেলেন থানার এক আধিকারিক। নির্দেশ দিলেন, মশারি না টাঙিয়ে কেউ যেন শুয়ে না থাকেন।

থানার ভ্যান নিয়ে এলাকায় টহলদারিতে বেরোচ্ছিলেন একদল পুলিশকর্মী এবং অফিসার। এক পুলিশকর্মী দৌড়ে এসে গাড়ির ভিতরে ছড়িয়ে দিলেন মশা মারার তেল।

উপরের তিনটি চিত্র কলকাতা পুলিশ এলাকার তিনটি থানার। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা যাতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত না হন, সে জন্য স্থানীয় থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ড নিজেরাই পুরসভার পাশাপাশি সতর্কতামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। লালবাজারের নির্দেশের অপেক্ষায়
না থেকেই।

জমে থাকা পরিষ্কার জলে জন্মায় মশার লার্ভা। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে ঋতুর তোয়াক্কা করছে না ডেঙ্গি। বর্ষা শেষ হয়ে শীত প্রায় চলে এলেও ডেঙ্গির প্রভাব কমা তো দূর, তা শহর জু়ড়ে আতঙ্কের চেহারা নিয়েছে। যার প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানাও। আর তাই স্থানীয় স্তরে ডিউটি করতে গিয়ে থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরা যাতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত না হন, তার জন্যই ওই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছে পুলিশের একাংশ।

চলতি বছরে কলকাতায় বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। আক্রান্তের সংখ্যা বহু। পুর প্রশাসনের তরফে ডেঙ্গির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তাদের গাফিলতি
নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। তাই পুরসভার অপেক্ষায় না থেকে থানা বা ট্র্যাফিকের পুলিশকর্মীরা নিজেরাই ডেঙ্গির বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

লালবাজারের একাংশ জানিয়েছে, কাশীপুর থানার এক দিকে একটি নর্দমা খোলা অবস্থায় রয়েছে। আর একটি নর্দমা বদ্ধ। বৃষ্টির পরে পরিষ্কার জলে যাতে মশার লার্ভা না জন্মায়, তার জন্য সেখানে মাছ ছাড়া হয়েছে। আবার ওই থানারই এক পুলিশকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি সারা দিন থানার বিভিন্ন দিকে ঘুরে কোথাও জল বা আবজর্না জমে আছে কি না, তা দেখে ব্যবস্থা নেবেন। অন্য দিকে দক্ষিণ শহরতলি বিভাগের দুই থানার আধিকারিক ব্যারাকে
থাকা কর্মীদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, গরম লাগলেও এখন মশারি টাঙিয়েই শুতে হবে। থানায় ডিউটি করার সময়ে মশা মারার ওষুধ যাতে ব্যবহার করা হয়, সেই ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে ওই সব থানা।

পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজার থেকে ডেঙ্গি নিয়ে কোনও রকম সতর্কতা জারি করা হয়নি। কিন্তু তাতে পিছিয়ে থাকতে নারাজ নিচু তলার পুলিশকর্মীরা। তাঁরা নিজেদের মতো করে চাঁদা তুলে মশা মারার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। স্থানীয় ভাবেই ডেঙ্গি ঠেকাতে মশার তেলের পাশাপাশি দিনে দু’বার করে কেরোসিনও ছিটোনো হচ্ছে থানার আশপাশে। থানার সামনে জমে থাকা ভাঙা গাড়িতে যাতে জল না জমে, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের প্রতিটি থানা না হলেও অধিকাংশ থানাই এমন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রতিটি থানা চত্বর পরিষ্কার রাখতে বলা হয়েছে। আবার বন্দর এলাকার প্রান্তিক কিছু থানা পুরসভার সাহায্য নিয়ে নিজেদের কোয়ার্টার্সে মশা মারার তেল ছড়াচ্ছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন থানার ভবন সংস্কার করা হয়েছে। সেগুলি বাদ দিয়ে কিছু থানার সেরেস্তা এবং মালখানায় যাতে মশা না জন্মায়, তার ব্যবস্থাও নিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।

Dengue Mosquitoes ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy