ফাঁকা জমি পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। বৃষ্টির জল জমে সেখানে জন্মাচ্ছে মশা। দিনের পর দিন স্থানীয় বাসিন্দারা আবর্জনা ফেলায় সেই জমি কার্যত হয়ে উঠেছে মশার কারখানা। দক্ষিণ দমদম পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে ছবিটা কমবেশি একই। অথচ, বছরের গোড়াতেই মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করার সময়ে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, অব্যবহৃত জমির মালিকদের সেই জমি পরিষ্কার করতে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, তাতে পর্যাপ্ত সাড়া মেলেনি। তাই পুরসভাকেই সেই সব জমি সাফাইয়ের কাজ করতে হচ্ছে।
দমদম, রাজারহাট-গোপালপুর কিংবা বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রের যে সমস্ত এলাকা দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্তর্গত, সেখানে এমন অনেক ফাঁকা জমি, পরিত্যক্ত গুদাম ও মাঠে জল জমে রয়েছে, যা বেরোতে পারছে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার অধিকাংশ নর্দমাই অবরুদ্ধ। বৃষ্টি হলে বহু জায়গায় জল জমে থাকে। ওই সমস্ত ফাঁকা জমিতে জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। পুরসভার পাল্টা অভিযোগ, এই পরিস্থিতির জন্য বাসিন্দাদের একাংশও দায়ী। আবর্জনা সংগ্রহের সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকলেও তাঁরা এই ধরনের ফাঁকা জমিতে নিয়মিত আবর্জনা ফেলেন। প্লাস্টিকে মুড়ে আবর্জনা থেকে শুরু করে প্লাস্টিকজাত বিভিন্ন সামগ্রীও ফেলা হয়। বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরসভা নিয়মিত নর্দমার পলি তোলে না। অব্যবহৃত সব জমিও নিয়মিত সাফাই হয় না। এ নিয়ে বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি নির্দল পুরপ্রতিনিধিরাও প্রশ্ন তুলেছেন। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নজরদারি ও দ্রুত পদক্ষেপের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৯-১০ জনের বিশেষ দল গঠন করা হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ডেঙ্গির লেখচিত্র কিছুটা নিম্নমুখী হলেও চিন্তা এখনও দূর হয়নি। আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০ পার করেছে। চার জন ডেঙ্গিতে এবং তিন জন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে স্কুল ও কলেজের পড়ুয়ারাও রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ পুরোপুরি মানতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাসের দাবি, জমির মালিকদের নোটিস পাঠিয়ে পর্যাপ্ত সাড়া মেলেনি। পুরসভাই জমি সাফাই করছে। ইতিমধ্যে নিকাশি নালা সাফাই, পলি তোলার কাজ হয়েছে। নজরদারিও চালানো হচ্ছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। তবে, সচেতনতার অভাব যে সমস্যা বাড়াচ্ছে, সে কথা স্বীকার করে পুর চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরী জানান, সচেতনতা এবং জনসংযোগে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)