Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Schools

পড়ুয়াদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়ার ভাবনা

টিভি চ্যানেলগুলি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্টুডিয়োয় বসিয়ে পড়ুয়াদের লেখাপড়ায় সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছে। অনলাইনেও পড়াশোনা চলছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০২:৩৮
Share: Save:

করোনার আতঙ্কে রাজ্য সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ নিয়েছে। রাজ্যের সরকারি, সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষাবর্ষ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ায় সেখানকার পড়ুয়ারা ইতিমধ্যেই নতুন ক্লাসের পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে। কিন্তু সমস্যায় পড়েছে অন্য বোর্ডের পড়ুয়ারা। মার্চ-এপ্রিলে শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়া ওই সব বোর্ডের পড়ুয়াদের হাতে লকডাউনের কারণে নতুন ক্লাসের পাঠ্যবই এখনও পৌঁছয়নি। ফলে আগামী দিনে সিলেবাস কী করে শেষ হবে, তা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকেরা। টিভি চ্যানেলগুলি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্টুডিয়োয় বসিয়ে পড়ুয়াদের লেখাপড়ায় সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছে। অনলাইনেও পড়াশোনা চলছে। তবে নতুন ক্লাসে উঠলেও অনেক পড়ুয়াই বই হাতে পায়নি।

এই পরিস্থিতিতে কোনও কোনও স্কুল উদ্যোগী হচ্ছে পড়ুয়াদের বাড়ির ঠিকানায় বই পাঠাতে। অথবা অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই পাঠ্যবই তাঁদের হাতে তুলে দিতে। কয়েকটি স্কুল আবার পড়ুয়াদের ই-বুক ডাউনলোড করতে বলছে।

ক্যালকাটা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বাসন্তী বিশ্বাস জানান, লকডাউনের জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা এখনও বই পায়নি। তিনি বলেন, ‘‘ওই কয়েকটি শ্রেণির অভিভাবকদের ফোন করে তাঁদের বাড়ির ঠিকানা জানতে চেয়েছি। গাড়ি করে ওই পড়ুয়াদের বাড়িতে পাঠ্যবই পৌঁছে দিতে আমরা স্থানীয় থানার কাছে অনুমতি চেয়েছি। যাদের বাড়ি শহরতলিতে, তাদের জন্যও একটি নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে বই পাঠানো হবে।’’

দক্ষিণ কলকাতার রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস জানান, পড়ুয়াদের সব কিছু অনলাইনে পড়ানো সম্ভব নয়। অনেকেরই স্মার্টফোন নেই। ইন্টারনেট অনেক সময়ে ঠিক মতো কাজ করে না। তাই বই ছাত্রদের হাতে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তাঁরাও। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছি লকডাউন উঠলে মে মাসের শুরুতে অভিভাবকদের পর্যায়ক্রমে ডাকব। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁরা স্কুলে লাইন দিয়ে সন্তানদের জন্য পাঠ্যপুস্তক নিয়ে যাবেন।’’

লকডাউনের মধ্যে পড়ুয়াদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার বদলে তাদের ই-বুক ডাউনলোড করার পরামর্শ দিয়েছে শ্রীশিক্ষায়তন। স্কুলের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কিছু কিছু প্রকাশনা সংস্থার ই-বুক বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়। সেই সব বই ডাউনলোড করতে বলছি পড়ুয়াদের। সেই সঙ্গে যে বিষয়টা পড়ানো হচ্ছে সেই বিষয়ের উপরে লিঙ্ক বলে দেওয়া হচ্ছে। সেই লিঙ্ক দেখে বিস্তারিত জানতে পারবে পড়ুয়ারা।’’ তবে ব্রততীদেবীর মতে, পুরো পদ্ধতিটা যেহেতু অনলাইনে, তাই ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল হলে চলবে না। কিন্তু অনেক সময়েই ইন্টারনেট দুর্বল থাকে। ফলে সমস্যা হয় পড়ুয়াদের।

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানান, তাঁরাও ই-বুক ডাউনলোড করে পড়ুয়াদের পড়তে বলেছেন। হেরিটেজ স্কুলের প্রিন্সিপাল সীমা সাপ্রু বলেন, ‘‘যে শিক্ষকেরা যে বই দিয়ে পড়াচ্ছেন, সেই বই স্ক্যান করে পড়ুয়াদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আর কোনও বিকল্প পদ্ধতিতে বই পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Books
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE