ফাইল চিত্র।
শুধু বুথের ভিতরেই নয়, বুথের বাইরেও যাতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং ভোটারদের নিরাপত্তা বজায় থাকে, তার জন্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করছে বিধাননগর কমিশনারেট।
পুর নির্বাচন, বিধানসভা নির্বাচন কিংবা রাজারহাটের পঞ্চায়েত নির্বাচন —সব ভোটেই অশান্তি হয়েছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিউ টাউন বিধানসভা এলাকার একাধিক জায়গায় বোমা পড়েছিল। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের দিনে সল্টলেকে ভোটারেরা বহিরাগতদের হাতে আক্রান্ত হন। নিস্তার পায়নি সংবাদ মাধ্যমও। ফলে এ বার অতীতের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করাতে তৎপর বিধাননগরের পুলিশ।
শুক্রবার নিউ টাউনে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার এন আর রমেশ বাবুর উপস্থিতিতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর আধিকারিকদের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক হয়। পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, মূল সল্টলেক তো বটেই কমিশনারেট এলাকায় বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চল রয়েছে। রয়েছে রাজারহাট ও নিউ টাউনের আশপাশের বেশ কিছু গ্রাম— যে সব জায়গায় গোলমালের আশঙ্কা সব সময়ই থাকে। ফলে সেই সব জায়গায় বিশেষ নজরদারি রাখা হবে।
বারাসত, দমদম ও বসিরহাট- এই তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের কিছু কিছু অঞ্চলের ভোট হবে বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে। সব মিলিয়ে ৮০২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে সেখানে। প্রতিটি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
এর আগে ৬ দফার ভোটেই কুইক রেসপন্স টিমের এলাকা চিনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে ঘাটতির অভিযোগ উঠেছে। কমিশনারেট সূত্রের খবর, কুইক রেসপন্স টিমের সঙ্গে ১ জন করে রাজ্য পুলিশের কর্মী থাকবেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চও শুরু হয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় মোট ৩২টি কুইক রেসপন্স টিম তৈরি রাখা হচ্ছে। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড, হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড, আরটি মোবাইলও ভোটের দিন থাকবে। বিধাননগর কমিশনারেটের দফতরে বিশেষ কন্ট্রোল ইউনিটও বসানো হয়েছে। যেখানে উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা সমন্বয়ের কাজ করবেন।
মূল সল্টলেকে সম্ভাবনা না থাকলেও রাজারহাট কিংবা নিউ টাউনের প্রান্তিক অঞ্চলগুলিতে বুথে পৌঁছনোর সময়ে কোনও বাধার সম্মুখীন হলে সে ক্ষেত্রে কী করণীয়?
পুলিশ জানিয়েছে, কুইক রেসপন্স টিম যেমন পথে থাকবে তেমনই অন্যান্য বাহিনীও রাস্তায় ঘুরবে। সেই সব বাহিনী এমন ভাবেই নজরদারির কাজ করবে যাতে কোনও ঘটনা ঘটলেই দ্রুত পুলিশ কিংবা অন্য যে কোনও দল সেখানে পৌঁছতে পারে। সে কারণে কুইক রেসপন্স টিমের সঙ্গে বাকি টিমগুলির সমন্বয়ও রক্ষা করা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সল্টলেক এবং বিমানবন্দর ডিভিশন এলাকায় ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি থানা এলাকার জন্য থাকছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকও। এমনকি, প্রয়োজনে পুলিশ কমিশনার নিজেও রাস্তায় থাকতে পারেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। নিরাপত্তা জোরদার করতে ভোটের আগে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে কমিশনারেট। বিভিন্ন জায়গায় নাকা তল্লাশি চলছে। নিয়মিত বিভিন্ন হোটেল, গেস্টহাউসে হানা দিয়ে বহিরাগতদের উপরে নজরদারিও চালাচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যে পুলিশ কয়েক লক্ষ টাকাও উদ্ধার করেছে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বলা হয়েছে ভোটারদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করার জন্য।
এক পুলিশ কর্তা জানান, কমিশনারেট এলাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি। ভোটপর্ব মিটে না যাওয়া পর্যন্ত লাগাতার ভাবে সেই কাজ চলবে বলে ওই পুলিশকর্তা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy