—ফাইল চিত্র।
নির্বাচন মোটের উপরে উতরে গিয়েছে। এ বার লালবাজার ভাবছে, শহরে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে। পুলিশের খবর, সেই কারণেই রবিবার রাত থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, শহরে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মিলবে না বলেই ধরে নিয়েছেন তাঁরা। সেই মতোই পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এ দিনই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোটের পরে বিজেপির কর্মীদের উপরে হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন। রাত পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে লালবাজারকে কিছু জানানো হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। তবে স্ট্রংরুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ১৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ইভিএমের পাহারায় থাকবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন থানার সংবেদনশীল এলাকা বেছে নিয়ে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী রাখা হচ্ছে। রাজনৈতিক সংঘর্ষ ঠেকানোর জন্য হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড কিংবা আরটি মোবাইল গাড়ি থাকছে। সেই সঙ্গে থানার অতিরিক্ত মোটরবাইক বাহিনীকেও রাখা হচ্ছে। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ভোট গণনা পর্যন্ত শহরে ওই পুলিশি ব্যবস্থা বজায় থাকবে। নির্বাচনের জন্য তৈরি হওয়া অতিরিক্ত কন্ট্রোল রুম চলবে।’’
কলকাতার ভোটে কী হবে, তা নিয়ে নানা মহলের নানা আশঙ্কা ছিল। কিন্তু রবিবার, নির্বাচনের দিন, নানা প্রান্তে খুচরো ঝামেলা হলেও কলকাতায় বড় গোলমালের ঘটনা ঘটেনি। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘গোটা বাহিনী পূর্ণশক্তিতে কাজ করায় এই সাফল্য মিলেছে।’’ তবে পুলিশের অন্দরের খবর, শেষবেলায় কিছু বিশেষ ‘দাওয়াই’ দিয়েছিল লালবাজার। তাতেই দাগি দুষ্কৃতীরা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। নির্বিঘ্নে ভোট করানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের তরফেও চাপ ছিল।
লালবাজারের খবর, শনিবার সন্ধ্যা থেকেই কলকাতার বিভিন্ন দুষ্কৃতীকে থানায় ডেকে পাঠিয়ে ‘সতর্ক’ করে দেওয়া হয়। যাদের হাবভাব ভাল ঠেকেনি, তাদের নজরবন্দি করা হয়েছিল। তবে পুলিশের একটি সূত্রের খবর, বেশ কিছু দুষ্কৃতী উত্তর শহরতলিতে চলে গিয়েছিল। তার ফলে খাস কলকাতার উপরে চাপ কমেছে। তার উপরে এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ‘কুইক রেসপন্স টিম’ এবং কলকাতা পুলিশের ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ ভাল কাজ করেছে। ফলে বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত হলেও তা গোলমালের আকার নেয়নি।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, শনিবার রাত থেকেই যে ভাবে শহরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছিল, তাতে হাঙ্গামাকারীরা এ দিন বাড়াবাড়ি করার সাহস দেখায়নি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে হাঙ্গামাকারীদের চাঁইদের নজরবন্দি করে রাখায় শাগরেদরা শহরে দাপট দেখাতে পারেনি। কিন্তু এই দাপট কি ভোটের পরেও থাকবে?
এটাই বড় প্রশ্ন আম-নাগরিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy