লেক টাউনে প্রৌঢ়া খুনের ঘটনায় লখনউ থেকে উদ্ধার হল লুঠের সামগ্রী। ওই ঘটনায় আততায়ীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। রাজা জৈন (৩৫) নামে ওই ব্যক্তি লখনউয়ের ঠাকুরগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, তার নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। যদিও তাকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি, লুঠের উদ্দেশ্যে রীতিমতো পরিকল্পনা করেই ওই খুন করে রাজা।
২৬ ফেব্রুয়ারি লেক টাউনে খুন হন মধু জৈন। এক বান্ধবীর মাধ্যমেই রাজার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। পুলিশ জানায়, রাজা আগে কলকাতায় থাকত। শেয়ার ব্যবসায় লাভ না করতে পেরে সে লখনউ ফিরে যায়। সেখানে পোশাকের ব্যবসা শুরু করে। ব্যবসার সূত্রেই মধুর সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। যোগাযোগ এতটাই বাড়ে যে রাজাকে একটি সিম কার্ড কিনে দেন মধু, এমনকী খুনের দিন রাজার কলকাতায় যাতায়াতের খরচও তিনিই বহন করেছিলেন বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন লখনউ থেকে ট্রেনে ওঠার আগে নিজের মোবাইল ও মধুর দেওয়া সিম বন্ধ করে দেয় রাজা। দক্ষিণেশ্বরে ট্রেন থেকে নেমে সে একটি ট্যাক্সিতে ওঠে। ট্যাক্সিচালকের মোবাইল থেকে মধুর দেওয়া নম্বরে ফোন করতে বলে সে। মধু ওই নম্বরে ফোন করে রাজার সঙ্গে কথা বলেন বলে জানায় পুলিশ।
কিন্তু ঘটনার দিন রাজা মধুর বাড়িতে এলেও তাকে কেয়ারটেকার দেখতে পায়নি। পুলিশের দাবি, বাড়ির কেউ যাতে রাজাকে দেখতে না পায়, তাই কেয়ারটেকারকে দু’বার ভিন্ন ভিন্ন কারণে বাইরে পাঠিয়েছিলেন মধু।
কিন্তু মধু কেন রাজার কথা গোপন করেছিলেন পরিবারের কাছে? পুলিশ জেনেছে, রাজা ও ওই বান্ধবী মধুকে আশ্বস্ত করেছিল যে, উত্তরপ্রদেশের এক গুরুজী তাঁর সমস্যা দূর করতে পারবেন। সেই গুরুজীকে কলকাতায় নিয়ে আসার কথাও মধুকে বলেছিল রাজা। পুজো বা যজ্ঞ পছন্দ করত না মধুর পরিবার। তাই রাজার বিষয়টি গোপন করেছিলেন মধু। এমনকী, মোবাইলে তিনি রাজার নম্বর ‘রীতা-গীতা’ নামে রেখেছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে লুঠের উদ্দেশ্যেই এই খুন। তবে ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা রাজা ধরা প়ড়লে স্পষ্ট হবে। লখনউয়ে গিয়ে রাজার সন্ধান মেলেনি। এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুঠ করা সামগ্রী রেখে সে চম্পট দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।