দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজের পাশাপাশি রহড়ার অস্ত্র কারবারি মধুসূদন মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে মিলেছে অসংখ্য কার্তুজের খোল। ওই সমস্ত খালি কার্তুজ তাঁর কাছে কী ভাবে এল, তদন্তে নেমে তা-ও খতিয়ে দেখছে ব্যারাকপুর সিটি পুলিশ।সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, বন্দুক চালানোর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কার্তুজের ওই সমস্ত খোল জোগাড় করতেন মধুসূদন। সেই খোল জমা দিয়েই লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান থেকে কার্তুজ কিনতেন তিনি।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বহু দোকানেই কিছু কার্তুজ পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে বলে রেজিস্টারে দেখানো থাকে। আদতে সেগুলি ঘুরপথে চলে যায় অস্ত্র কারবারিদের হাতে। রহড়ার ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, কোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কোন দোকানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল মধুসূদনের। তা ছাড়া, শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানেই বিক্রি হওয়া দোনলা, একনলা বন্দুক এবং পাম্প অ্যাকশন গানের মতো আগ্নেয়াস্ত্র কী ভাবে তাঁর কাছে এসেছিল, তা-ও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
সূত্রের খবর, ওই সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্স যাঁদের নামে ছিল, তাঁদের মৃত্যুর পরে পরিবারের লোকজন বহু ক্ষেত্রেই সেগুলি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনও দোকানে জমা রাখেন। অনেক বছর পরেও সেই সব আগ্নেয়াস্ত্র যদি তাঁরা আর ফেরত না নেন, তা হলে এক সময়ে সেগুলি ঘুরপথে অস্ত্র কারবারিদের হাতে পৌঁছে যায় দোকান থেকেই। মধুসূদনও সেই ভাবেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পেয়েছিলেন কিনা, তা আপাতত খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে জানা গিয়েছে, ইদানীং মূলত ব্যারাকপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অস্ত্র সরবরাহের কাজ করতেন মধুসূদন।
জানা যাচ্ছে, ১৯৯৫ সালের পরে পুলিশের ‘সোর্স’ হিসাবে কাজ করার সময়েই দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা বিক্রির কারবারও শুরু করেছিলেন মধুসূদন। কলকাতা থেকে কম দামে ভিন্ দেশের মুদ্রার পাশাপাশি পুরনো দিনের পাঁচ, পঁচিশ, পঞ্চাশ পয়সাও কিনে এনে তা বিক্রি করতেন চড়া মূল্যে। অন্য দিকে, জানা গিয়েছে, ওই অস্ত্র কারবারির ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সোনার গয়না তাঁর বান্ধবীর। সেই বান্ধবী পরবর্তী কালে মারা গেলেও তাঁর স্মৃতি হিসাবে ওই গয়না নিজের ঘরে রেখে দিয়েছিলেন মধুসূদন। ২০০৬ সালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন সেই বান্ধবীর পরিজনেরাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)