ইচ্ছে ছিল রোজগারের টাকায় পরিবারের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনে পুজোর আগে বাড়ি ফিরে যাবেন। কিন্তু মঙ্গলবার ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুর তলায় চাপা পড়ে গিয়েছে ওঁদের সর্বস্ব। আপাতত ইচ্ছেপূরণ তো দূর, কী ভাবে পেট চালাবেন সে ভাবনাতেই দিশাহারা জোকায় নির্মীয়মাণ মেট্রোর শ্রমিকেরা।
বুধবার শ্রমিকেরা জানান, ওই সেতুর নীচে চারটি ঝুপড়িতে তাঁরা জনা পঞ্চাশেক মিলে থাকতেন। শ্রমিকদের বেশির ভাগই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। তাঁদের জামাকাপড়, রোজগারের টাকাপয়সা, মোবাইল সর্বস্ব রাখা ছিল ওই ঝুপড়িতেই। মঙ্গলবারের দুর্ঘটনায় ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে চারটি ঝুপড়িই। বুধবার ঘটনাস্থলের কাছেই উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে রাহুল মণ্ডল, রফিকুল মোল্লা, অনিমেষ মণ্ডল, রণজিৎ মণ্ডলেরা জানালেন, তাঁদের সঙ্গী গৌতম মণ্ডল এখনও নিখোঁজ। মিঠু শেখ নামে এক তরুণ জানান, দুর্ঘটনার একটু আগেই ঝুপড়িতে বসে সঙ্গীদের জন্য রান্নার যোগাড় করছিলেন গৌতম। তখনই মিঠুকে তিনি ডিম কিনতে পাঠান। দোকান থেকে ফিরে মিঠু দেখেন, সেতু ধসে গিয়ে তত ক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছে।
পথিক মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা কাজ করছিলাম। হঠাৎ শুনি বিকট আওয়াজ। তাকিয়ে দেখি গোটা সেতুটাই ভেঙে পড়ছে। প্রথমে হকচকিয়ে যাই। তার পরেই মনে পড়ে গৌতম আর প্রণব তো ঘরে রয়েছে। ছুটে যাই কিন্তু ওদের কাছে পৌঁছতে পারিনি। আশপাশে থাকা আমাদেরই কয়েক জন সঙ্গী চাপা পড়েছিল। দুই সঙ্গীকে রক্তাক্ত অবস্থায় টেনে বার করে আনি।’’ সূত্রের খবর, সেই শ্রমিকেরা আপাতত এসএসকেএম-এ ভর্তি।