নীচে বজবজ লাইন ছাড়িয়ে তারাতলার দিক থেকে কয়েক কদম এগোলেই বুকটা কেঁপে উঠবে। শহর কলকাতার দক্ষিণ-পশ্চিমে বেহালার সঙ্গে সংযোগের মূল সেতুটাই প্রকাণ্ড এক ‘ভি’-এর আকারে নীচে ঝুলে রয়েছে। সপ্তাহের কেজো দিন মঙ্গলবার, বিকেল চারটের ব্যস্ত সময়ে মাঝেরহাট সেতুর এই বিপর্যয় প্রাণ কাড়ল এক জনের। পাশাপাশি নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল শহরের জনজীবন।
গত পাঁচ দশক ধরে চেতলা, আলিপুরের দিক থেকে বেহালামুখী কলকাতার ‘লাইফলাইন’ মাঝেরহাট ব্রিজ। সেই সেতুর প্রায় ৩০ মিটার অংশ যে কখনও পলকা খেলনার মতো খসে পড়তে পারে, তা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও কেউ ভাবেননি। এর আগে ২০১৩-য় উল্টোডাঙার সেতু ইঞ্জিনিয়ারিং কৃৎকৌশলের কিছু ত্রুটিতে ভেঙে পড়ে। আর ২০১৬-য় নির্মীয়মাণ পোস্তা উড়ালপুল দুর্ঘটনা কলকাতার সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের ইতিহাসে দগদগে ক্ষত বলে চিহ্নিত।
মাঝেরহাটে সেতুর ভেঙে-পড়া অংশটি প্রধানত বজবজের রেললাইন লাগোয়া খালের উপরে না-পড়ে জনবহুল রাজপথে পড়লে অঘটনের মাত্রা ঢের বেশি হতে পারত। রাত পর্যন্ত পুলিশের হিসেবে মৃতের সংখ্যা এক। তিনি বেহালার শীলপাড়ার বাসিন্দা, বছর তেইশের সৌমেন বাগ। এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। তবে সেতুর নীচে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর কাজের শ্রমিকদের অস্থায়ী ঘর চাপা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এ ছাড়া, ১৩ জন আহতকে এসএসকেএম এবং ১৮ জনকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এসএসকেএম থেকে ৮ জনকে এবং সিএমআরআই থেকে ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।