Advertisement
E-Paper

বিচ্ছিন্ন বেহালা, ঘুরপথে পৌঁছতে হয়রানি চরমে

মাঝেরহাট শাখায় ট্রেন চলাচলও গিয়েছিল থমকে। রাতে তা শুরু হলেও সেতু সংলগ্ন অংশে ট্রেনের গতি কম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৬
ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

মেট্রোর কাজের জন্য বেহালায় গা়ড়ি চলাচলে সমস্যা ছিলই। মঙ্গলবার ভেঙে পড়ল খাস কলকাতার সঙ্গে তার মূল যোগসূত্রও! যার জেরে বেহালা থেকে শহরের কেন্দ্রে আসতে ভোগান্তি আরও বাড়বে। যা শুরু হয়ে গিয়েছে এ দিনই। শুধু তা-ই নয়, মাঝেরহাট শাখায় ট্রেন চলাচলও গিয়েছিল থমকে। রাতে তা শুরু হলেও সেতু সংলগ্ন অংশে ট্রেনের গতি কম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ায় বেহালার দিকে যেতে বা সে দিক থেকে আসতে হলে সব গাড়িকেই ঘুরপথে চলতে হবে। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, হেস্টিংসের দিক থেকে আসা যানবাহনকে সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড, হাইড রোড দিয়ে তারাতলা এবং বেহালার দিকে পাঠানো হবে। তারাতলা ও বেহালার যানবাহনকেও ওই পথে আসতে হবে। দক্ষিণ কলকাতা থেকে যাওয়া গা়ড়িগুলির একাংশ টালিগঞ্জ ও করুণাময়ী সেতু হয়ে হরিদেবপুর দিয়ে বেহালার দিকে যাবে। জেমস লং সরণি এবং রায়বাহাদুর রোড দিয়েও বেহালার দিকে যাওয়া যাবে।

পুলিশের বক্তব্য, প্রতিদিন শহরের বাকি অংশ ও বেহালার মধ্যে প্রচুর গাড়ি এবং বাস যাতায়াত করে। ফলে ঘুরপথে চালালেও সেই গাড়ি যে খুব মসৃণ ভাবে যাতায়াত করবে, এমন নয়। বেহালায় যাতায়াতকারী যানবাহন বন্দর এলাকা, নিউ আলিপুর বা হরিদেবপুরে ঢুকলে সেখানে ট্র্যাফিকের চাপ বাড়বে। ফলে যানজট হবেই। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘মাঝেরহাট সেতু ছিল মূল সংযোগকারী পথ। তা বন্ধ হলে ঘুরপথে চালাতে গিয়ে যানজট হবে না, এ কথা বলা যায় না। তবে যন্ত্রণা যাতে কমে, সেই চেষ্টা করা হবে।’’

যানজটের যন্ত্রণা কী হতে পারে, এ দিন বিকেলের পরে তার আঁচ পেয়েছেন অনেকে। পার্নো বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক তরুণী জানান, পর্ণশ্রী থেকে ধর্মতলায় যেতে বাসে উঠেছিলেন। কিন্তু সেতু ভাঙার খবর পেয়ে বেহালা চৌরাস্তার কাছে বাস দাঁড়িয়ে যায়। নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। পার্নো অন্য একটি বাসে ওঠেন। সেটি যানজট ঠেলতে ঠেলতে নিউ আলিপুরের ভিতর দিয়ে চেতলা, রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে আসে। পার্নো বলছেন, ‘‘নিউ আলিপুর, চেতলাতেও মারাত্মক যানজট ছিল। ধর্মতলা পৌঁছতে দু’ঘণ্টা লেগেছে।’’ আশঙ্কার সুরে তিনি বলছেন, ‘‘কাল থেকে যে কী হবে, কে জানে!’’ সেতু ভেঙে পড়ায় এ দিন দুম়়ড়ে গিয়েছে মাঝেরহাট স্টেশনের কাছে একটি সিগন্যাল পোস্টও। যার ফলে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায় কয়েক ঘণ্টার জন্য। স্টেশনে থাকা যাত্রীরা উঠে আসেন রাস্তায়। ফলে যানজটের সঙ্গে উপরি পাওনা হয়েছে ভিড়।

আরও পড়ুন:
প্রকাণ্ড সেতুটা ঝুলে রয়েছে ‘ভি’-এর আকারে

‘আমি ভাঙা সেতুর নীচে আটকে, বাঁচান ভাইজান’

এ দিন সেতু ভেঙে পড়ার পর থেকেই অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া চড়চড়িয়ে বেড়েছে। নিয়মিত ক্যাবে যাতায়াত করা এক যাত্রী বলেন, ‘‘অন্য দিন যেখানে ৫০ থেকে ৭০ টাকা ভাড়া লাগে, সেটাই এ দিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দেখিয়েছে!’’ আর এক যাত্রী জানান, ধর্মতলা থেকে বেহালা যেতে একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা ভাড়া চেয়েছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা। এ দিন যানজটে আটকে পড়ায় অনেককেই বেহালার দিকে যেতে হয়েছে হেঁটে।

পরিস্থিতি সামলাতে পরিবহণ দফতর তারাতলা-টালিগঞ্জ মেট্রো এবং বেহালা চৌরাস্তা থেকে আটটি রুটে অতিরিক্ত বাস চালানোর ব্যবস্থা করে। তবে তাতেও ভোগান্তি কমেনি।

বিপাকে পড়েন চক্ররেলের যাত্রীরাও। রেল জানায়, সিগন্যাল পোস্ট ভেঙে পড়ায় চক্ররেলের লাইনের ক্ষতি হয়েছে। সেই কারণে ওই দিক থেকে ট্রেন চলবে না। চক্ররেলে চেপে যাঁরা মাঝেরহাট স্টেশনে যেতেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েন। এ দিন রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)

Majerhat bridge collapse Majerhat Bridge মাঝেরহাট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy