Advertisement
E-Paper

সেতু দেখভালে পুলিশি প্রস্তাবে অনীহা পূর্তের 

যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয় নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিতণ্ডা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে মাঝেমধ্যেই। একই ধরনের চাপান-উতোর শুরু হল রাজ্যেরই দুই দফতর পূর্ত ও পুলিশের মধ্যে।

শুভাশিস ঘটক ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৪
বেহাল: ভেঙে পড়ার আগের দিন, সোমবার এমনই ছিল মাঝেরহাট সেতুর দশা। ফাইল চিত্র

বেহাল: ভেঙে পড়ার আগের দিন, সোমবার এমনই ছিল মাঝেরহাট সেতুর দশা। ফাইল চিত্র

যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয় নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিতণ্ডা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে মাঝেমধ্যেই। একই ধরনের চাপান-উতোর শুরু হল রাজ্যেরই দুই দফতর পূর্ত ও পুলিশের মধ্যে।

সেতু ও কালভার্ট যৌথ পর্যবেক্ষণের জন্য পূর্ত দফতরকে অনুরোধ করেছিল রাজ্য পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও পর্যবেক্ষণ যে হয়ে ওঠেনি, তা স্বীকার করে নিয়েছে পূর্ত দফতরের একাংশ। প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্র-রাজ্যের বিষয় তো নয়। এটা রাজ্যের দুই বিভাগের যৌথ সক্রিয়তার বিষয়। তা হলে কাজটা হয়নি বা হচ্ছে না কেন? মাঝেরহাট সেতুভঙ্গের পরে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু কেন এমন গা-ছাড়া মনোভাব, যৌথ দায়িত্ব পালনে কারা এবং কেন অনীহা দেখাচ্ছে, তার সদুত্তর মেলেনি।

সেতু ও কালভার্ট পর্যবেক্ষণের জন্য ২৯ মে তৎকালীন পূর্তসচিব ইন্দিবর পাণ্ডেকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (ট্রাফিক অ্যান্ড সেফটি) বিবেক সহায়। বর্ষার আগে যৌথ ভাবে পর্যবেক্ষণ করে তা সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরের কাছে আবেদন করেছিলেন রাজ্য পুলিশের ওই কর্তা। সেই চিঠির সঙ্গে রাজ্যের কয়েকটি জেলার তালিকা দিয়ে বলা হয়েছিল, সেতু ও কালভার্টগুলির যা অবস্থা, তাতে নিরাপত্তা এবং ট্রাফিকের কাছে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

কিন্তু পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের একাংশ মেনে নিচ্ছেন, তিন মাসেরও বেশি সময় কেটে যাওয়া সত্ত্বেও যৌথ পর্যবেক্ষণের নামগন্ধ নেই। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত পুলিশ এবং তাঁদের দফতরের তরফে কোনও যৌথ সমীক্ষা হয়নি। কয়েকটি জেলার সেতুর যে-তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তার সম্পর্কেও অন্ধকারে রয়েছেন ওই সব জেলার মুখ্য বাস্তুকারেরা।

রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন জেলার থানা থেকে দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সেতু তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন এডিজি। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, নদিয়া, মালদহ, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির প্রায় ৩৫টি সেতুর অবস্থার কথা সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।

ওই সব সেতুর অধিকাংশের নীচে নদী রয়েছে। ভারী যান চলাচল করে সেতু দিয়ে। ওই সব সেতুর নিয়মিত পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের কাজটাও যে গুরুত্বপূর্ণ, তা মেনে নিচ্ছেন ওই সব জেলার বাস্তুকারেরা।

রাজ্য পুলিশের এডিজি (ট্রাফিক অ্যান্ড সেফটি)-র সুপারিশ কেন মানা হয়নি, তার জবাব মিলছে না। যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তৎকালীন পূর্তসচিব ইন্দিবরকে ফোন ধরেননি। মেসেজের জবাবও দেননি তিনি।

উত্তরবঙ্গের পূর্ত দফতরের কর্তাদের একাংশের ব্যাখা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঠিকমতো অর্থ বরাদ্দ না-হওয়ায় রাজ্য পুলিশের সুপারিশ অনুযায়ী বিভিন্ন সেতু এখনও পর্যন্ত মেরামত করা যায়নি। দরপত্র চাওয়া হলেও বরাদ্দ টাকা এত কম যে, ঠিকাদারেরা কাজ করতে রাজি হয় না। সেই জন্য ওই সব সেতু সারাইয়ে এখনও পর্যন্ত হাত দেওয়া যায়নি। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

পূর্তকর্তাদের অভিজ্ঞতা, সাধারণত নতুন কাজে ঠিকাদারের যত উৎসাহ থাকে, সংস্কারের ক্ষেত্রে তার সিকিভাগও থাকে না। সেতু বা কালভার্ট মেরামতিতে আগ্রহই দেখান না অনেক ঠিকাদার। কখনও কখনও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চাপ দিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগও আছে। ফলে তুলনামূলক বিচারে ছোট মাপের কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়ছে পূর্ত দফতর।

Majerhat Majerhat Bridge Collapse Kolkata Flyover Collapse মাঝেরহাট Majerhat Bridge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy