Advertisement
E-Paper

পুলিশি ঢিলেমি, বৈধতা হারাবে বহু আগ্নেয়াস্ত্র

ওই সব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের একটা বড় অংশের গায়ে অবৈধ তকমা লাগতে চলেছে। এবং যথেষ্ট পরিমাণে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ার মতো এখানেও উঠেছে সেই পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ। যা মেনে নিচ্ছেন পুলিশকর্তাদেরও একাংশ।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০০:৩৬

ওয়েবলি স্কট, কোল্ট, মাউজার, স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন, বেরেটার মতো রিভলভার ও পিস্তল। অথবা ম্যানলিখার, উইনচেস্টার, ওয়েদারবির মতো রাইফেল। কেউ শখে, কেউ বা রাখেন ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য। কোনও কোনও আগ্নেয়াস্ত্রের লক্ষাধিক, এমনকী কোনওটির আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাম। আবার পয়েন্ট থ্রি টু বা টু টু বোরের সাদামাটা রিভলভার-পিস্তল বা একনলা-দোনলা বন্দুকও আছে। কলকাতার সংযোজিত এলাকায় দেড় হাজারেরও বেশি এই ধরনের বন্দুকের লাইসেন্স আছে। কিন্তু আর এক মাস পরে থাকবে কি?

ওই সব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের একটা বড় অংশের গায়ে অবৈধ তকমা লাগতে চলেছে। এবং যথেষ্ট পরিমাণে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ার মতো এখানেও উঠেছে সেই পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ। যা মেনে নিচ্ছেন পুলিশকর্তাদেরও একাংশ।

কারণ, বন্দুকের মালিক কোনও অস্ত্রের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করার পরেও পুলিশের একটি ভূমিকা থেকে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, সেই আগ্নেয়াস্ত্রের ঠিকুজি-কোষ্ঠী সম্পর্কে একটি রিপোর্ট লালবাজারে স্থানীয় থানাগুলো জমা দেবে। কিন্তু তা এখনও জমা পড়েনি। রিপোর্ট জমার শেষ তারিখ ৩১ মার্চ। কলকাতা পুলিশের সদর দফতর থেকে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর হয়ে ওই রিপোর্ট পৌঁছনোর কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। নচেৎ ওই আগ্নেয়াস্ত্রের গায়ে অবৈধ তকমা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার।

পুলিশ সূত্রের খবর, সমস্যাটা কিন্তু গোটা কলকাতা নয়, কলকাতার সংযোজিত এলাকার ২০টি থানা নিয়ে। ওই থানাগুলোর অধীনে থাকা প্রায় এক হাজার ৬০০ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েই লালবাজারে রিপোর্ট এখনও পৌঁছয়নি। ২০১১-র সেপ্টেম্বরে প্রথম ন’টি থানা কলকাতা পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত হয়। এর পরে শুরু হয় থানাগুলি ভেঙে নতুন নতুন থানা তৈরি। গত সাড়ে চার বছরে ওই ন’টি থানা ভেঙে মোট ২০টি থানা তৈরি হয়েছে।

আর গোল বেধেছে এখানেই। এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, একটি থানা ভেঙে দু’টি, এমনকী তিনটি থানা পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই ভাবে এলাকা ভাগের ফলে যে আগ্নেয়াস্ত্রের নথি নিয়ম মতো তিন নম্বর থানায় পৌঁছনোর কথা, তা এক নম্বর থানাতেই থেকে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বন্দুকের বংশতালিকা সংক্রান্ত নথিপত্র ঠিক কোথায়, কী অবস্থায় আছে, সেটাও জানা নেই পুলিশের।

এক থানার ওসি-র কথায়, ২০১১-এ তিলজলা থানা ভেঙে প্রগতি ময়দান হয়েছিল। কসবা ভেঙে গড়ফা। তার পরে প্রগতি ময়দান ভেঙে আনন্দপুর। গড়ফা ভেঙে রাজডাঙা। গত পাঁচ বছরে ৯টি থানা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সব কাগজপত্র গুছিয়ে ওঠা যায়নি। কিন্তু লাইসেন্স থাকা অস্ত্রের কাগজ অগ্রাধিকার দিয়ে কেন আগে গুছোনো হয়নি, তার সদুত্তর মেলেনি।

লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘এখন যা অবস্থা, তাতে এক মাসের মধ্যে ২০টি থানার দেড় হাজারের উপরে বন্দুক সম্পর্কে রিপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সহ নানা বিষয় সামলাতে হবে পুলিশকে।’’

তা হলে কি ওই সমস্ত লাইসেন্স-ই বাতিল হয়ে যাবে? বিষয়টি দেখে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (রিজার্ভ ফোর্স)-এর দফতর। ডিসি (আরআফ) অশেষ বিশ্বাস অবশ্য এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে অন্য এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘যাঁদের লাইসেন্স আছে, তাঁরা যদি থানায় গিয়ে নিজেদের আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে নথি জমা দেন, তবে সমাধান হলেও হতে পারে।’’

firearm licence police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy