আন্ত্রিকে আক্রান্তদের ভরসা ওআরএস। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
হাসপাতাল চত্বরে ওআরএস বিলি চলছে। কিন্তু যাঁরা বিলি করছেন, তাঁরাও কেউ কেউ আন্ত্রিকে আক্রান্ত। তাই তাঁদের সাহায্য করতে স্থানীয়রাও অনেকে নেমে পড়েছেন সেই কাজে। পুরসভা যতই জলে কিছু মেলেনি বলে দাবি করুক, বাস্তব পরিস্থিতি অন্য কথাই বলছে। মঙ্গলবারও জল-আতঙ্ক কাটেনি এলাকাবাসীর।
এ দিন ওআরএস বিলি করছিলেন ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের ডি ব্লকের বাসিন্দা জয়দীপ ধরচৌধুরী। একটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী জয়দীপ বললেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমারও পেটখারাপ হয়েছিল। এলাকার এই বিপদে আমরা নিজেরাই ওআরএস বিলি করছি। চাহিদাও প্রচুর।’’
চাহিদা যে কেমন, তা টের পাওয়া গিয়েছে এ দিন। সকালে যত ওআরএস মজুত ছিল, দুপুরের মধ্যে তা শেষ। তখন আরও ওআরএস আনা হয়। সেগুলি বিলির দায়িত্বে থাকা এক যুবক বললেন, ‘‘অনেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়েও ওআরএস খাচ্ছেন। একটা আতঙ্ক তো ছড়িয়েছে।’’
হাসপাতাল থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। কী মনে হতে ফিরে এলেন। বললেন, ‘‘আমাকেও দিন তো।’’ দুই যুবক তাঁর হাতে ওআরএস তুলে দিলেন।
আরও পড়ুন: আটা কোন দলের, দায় এড়াচ্ছে দেগঙ্গা
এ দিকে, ১০১, ১০২, ১০৭, ১০৮, ১০৯ ও ১১০— এই ছ’টি ওয়ার্ড থেকে এ দিনও জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সকাল থেকেই পুরসভার কর্মীরা জলের নমুনা সংগ্রহে নামেন। কিন্তু এখনও পুরসভা সংক্রমণের নির্দিষ্ট কারণ ধরতে না পারায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘পুরসভা বলছে, জলে কিছুই মেলেনি। অথচ, বাড়ির সকলের শরীর খারাপ। তা কি এমনিই?’’
পুরসভা আশ্বাস দিলেও সংক্রমণের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের অনেকেই জল ফুটিয়ে খাচ্ছেন। কেউ বা জলে ওষুধ মিশিয়ে নিচ্ছেন। কাউন্সিলরদের একাংশও জল সরাসরি খেতে বারণ করছেন। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিঙ্কু নস্কর বলেন, ‘‘পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু জল সরাসরি খেতে বারণ করছি।’’ বাঘা যতীন হাসপাতালের কাছে ওষুধের দোকানে ঢুকছিলেন এলাকার বাসিন্দা সুমিতা রায়। তিনি বলেন, ‘‘মা হাসপাতালে। পরশু থেকে হঠাৎ পেটে ব্যথা, বমি।’’
এত কিছুর পরেও অবশ্য ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। অনেককেই ছেড়ে দিয়েছে হাসপাতাল। এ দিন মাত্র এক জন নতুন করে ভর্তি হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy