Advertisement
E-Paper

Police Station: পুরস্কারের ঘোষণা সত্ত্বেও অপরিচ্ছন্ন কিছু থানা

শ্যামপুকুর থানা চত্বরের পরিস্থিতি এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। পুরনো গাড়ির জটলার একই চিত্র নারকেলডাঙা এবং বেলেঘাটা থানা চত্বরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৮:১৬
শ্যামপুকুর থানার বাইরে রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে বাজেয়াপ্ত হওয়া গাড়ি ও যন্ত্রাংশ।

শ্যামপুকুর থানার বাইরে রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে বাজেয়াপ্ত হওয়া গাড়ি ও যন্ত্রাংশ। নিজস্ব চিত্র।

সার্বিক ভাবে থানা ও ট্র্যাফিক গার্ড চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কলকাতা পুলিশের ইতিহাসে প্রথম বার পুরস্কার ঘোষণা করেছে লালবাজার। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান মিলিয়ে মোট চারটি থানাকে বেছে নেওয়া হয়েছে এ জন্য। কিন্তু তার পরেও কি সার্বিক ভাবে থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের হাল ফিরল? বুধবার শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরে দেখা গিয়েছে, পুরস্কারের ঘোষণাও হাল ফেরাতে পারেনি বেশ কয়েকটি থানার। অভিযোগ, আগের মতোই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন কাটছে ওই থানাগুলির আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের।

শ্যামপুকুর থানা চত্বরের পরিস্থিতি এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। থানার ভিতর রং করে অফিসারদের বসার ঘর অদলবদল করে খানিকটা জায়গা বার করা হয়েছে মাত্র। আর থানার বাইরে সেই আগের মতোই পর পর দাঁড়িয়ে থাকছে পুলিশের গাড়ি। মাসের পর মাস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে আটক হওয়া অধিকাংশ গাড়ি ও মোটরবাইক। কিছু গাড়ির যন্ত্রাংশ, ফাটা টায়ার এমন ভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে যে, থানার বাইরের রাস্তার অর্ধেক চলে গিয়েছে সে সবের দখলে। থানার উল্টো দিকের বাড়ির এক বাসিন্দার অভিযোগ, “অবস্থা তো নিজেই দেখতে পাচ্ছেন। এ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার পরিস্থিতি থাকে না। ডেঙ্গি নিয়ে বহু কথা হওয়ার পরেও ভাঙা গাড়িগুলো থানার সামনে থেকে সরেনি। করোনার পরেও এই থানার কোনও হুঁশ নেই।”

পুরনো গাড়ির জটলার একই চিত্র নারকেলডাঙা এবং বেলেঘাটা থানা চত্বরে। বেলেঘাটা থানার কাছের একটি বাড়ির বাসিন্দার আবার দাবি, “মশার ভয়ে জানলায় নেট লাগিয়ে রাখতে হয়। বহু বার পুলিশকে জানিয়েও থানা চত্বর সাফ হয়নি।” কালীঘাট থানায় আবার মন্দিরের দিকে যাওয়ার রাস্তা ঘিরে দিয়ে বসানো হয়েছে গার্ড রেল। তার ভিতরেই প্লাস্টিক ঢাকা দিয়ে পর পর রাখা গাড়ি, মোটরবাইক। প্লাস্টিকের উপরে জল তো জমছেই, সঙ্গে সেখানেই রয়েছে ব্যবসায়ীদের রাখা পুজোর ডালা। বন্দর এলাকার বেশ কয়েকটি থানা ঘুরে আবার দেখা গেল, আটক করে ফেলে রাখা পুরনো গাড়ির মধ্যেই জমা জলে ভাসছে মশার লার্ভা।

জোড়াবাগান থানা ও ট্র্যাফিক গার্ড চত্বরে গাড়ির জটলা সে ভাবে না থাকলেও থানা চত্বরের উল্টো দিকের একটি পুরনো বাড়ির ধ্বংসাবশেষ দিনের পর দিন পড়ে আছে বলে অভিযোগ। জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের মধ্যেও পড়ে রয়েছে বালি। পাশের একটি বাড়ির জমি হয়ে উঠেছে এলাকার অনেকের আবর্জনা ফেলার ঠিকানা। জোড়াবাগান থানার এক পুলিশকর্মী বললেন, “করোনা ও ডেঙ্গি দুয়েই আমাদের থানা ভুগেছে। কিন্তু পরিষ্কারের বিষয়টা উপর মহলের সিদ্ধান্তের উপরে। তাঁদের উদ্যোগ না থাকলে আমরা কী করব?”

থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ড চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ যাতে দ্রুত আসে, সে জন্য পুলিশ কমিশনার নিজেই পুরস্কার ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে লালবাজার জানাচ্ছে। এর পরেই তড়িঘড়ি থানা চত্বর পরিষ্কারের কাজে নামেন অফিসারেরা। চলতি সপ্তাহে ঘোষণা হওয়া সেই পরিচ্ছন্নতার নিরিখে প্রথম হয়েছে বড়তলা থানা। দ্বিতীয় স্থানে যুগ্ম ভাবে রয়েছে বড়বাজার এবং সরশুনা থানা। তৃতীয় হয়েছে ঠাকুরপুকুর থানা।

এদের মধ্যে বড়তলা থানা সবচেয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কারণ, শুধুমাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাই নয়, ১৮৮৮ সালের এই থানা ভবন জুড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সুতানুটির ইতিহাস। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দেবাশিস দত্তের ভাবনায় কাজ করেছেন বেশ কয়েক জন আর্ট কলেজের পড়ুয়া। থানার বাইরের দিকের দেওয়াল জুড়ে আঁকা হয়েছে গিরিশ ঘোষ, বিনোদিনী, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, গোবর গোহ, রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতো সুতানুটি অঞ্চলের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের ছবি। থানার ভিতরের দেওয়াল জুড়ে আঁকা তৎকালীন বঙ্গসমাজ এবং বড়তলা কী ভবে তৈরি হল, সেই গল্প।

কিন্তু বড়তলা পারলেও পুরস্কার ঘোষণার পরেও অনেক থানাই উদাসীন কেন?

নতুন রঙের প্রলেপ পড়া চিৎপুর থানার এক আধিকারিক বললেন, “আমাদের এখানে যেমন, সারা বছর রাস্তা দিয়ে ভারী লরি যায় আর বাতাসে সিমেন্টের ধুলো ভাসে। লকডাউনের জন্য গত দেড় বছর ধরে সিমেন্ট একটু কম উড়ছে বলে রং টিকে আছে। সব এলাকাতেই হয়তো এমন নানা সমস্যা আছে। ওই সব সমস্যা সামলাব? নাকি থানা সাজাব!”

police station
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy