Advertisement
E-Paper

এসএসকেএমের জরুরি বিভাগ যেন ‘নেই’-রাজ্য

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনার আতঙ্ক কাটেনি অনেকেরই। তার উপরে ট্রলি, কম্বল, খাবার জল— কিছুই না পেয়ে চূড়ান্ত হয়রানির মুখোমুখি অনেকেই। শারীরিক পরীক্ষার জন্য জরুরি বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে জখম রোগী বাধ্য হলেন পায়ে হেঁটে যেতে।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৩
 অব্যবস্থা: ট্রলি না মেলায় প্রীতিকে গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় কার্ডিয়োলজি বিভাগে। শুক্রবার, এসএসকেএমে। নিজস্ব চিত্র

অব্যবস্থা: ট্রলি না মেলায় প্রীতিকে গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় কার্ডিয়োলজি বিভাগে। শুক্রবার, এসএসকেএমে। নিজস্ব চিত্র

চিত্র-১। ট্রলি নেই। বজ্রাঘাতে আহত রোগীকে সাহায্য করারও কেউ নেই। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরেই দু’ থেকে তিন মিনিটের পথ জরুরি বিভাগ থেকে কার্ডিয়োলজিতে পৌঁছতে রোগীকে দুশো টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হল।

চিত্র-২। তড়িদাহত রোগী ভিজে জামাকাপড়ে থরথর করে জরুরি বিভাগে বসে কাঁপছেন। অধিকাংশেরই অভিযোগ, হাসপাতাল কম্বল দেয়নি।

চিত্র-৩। ট্রলি না পেয়ে অসুস্থ জখম মেয়েকে পাঁজাকোলা করে সিঁড়ি ভেঙে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাচ্ছেন বাবা।

এমনই ছবি শুক্রবার ফের দেখা গেল রাজ্যের প্রথম সারির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে।

ওই দুপুরে ভিক্টোরিয়ার কাছে বজ্রাঘাতে আহত ১৭ জনকে চিকিৎসার জন্য পুলিশ নিয়ে যায় এসএসকেএমে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনার আতঙ্ক কাটেনি অনেকেরই। তার উপরে ট্রলি, কম্বল, খাবার জল— কিছুই না পেয়ে চূড়ান্ত হয়রানির মুখোমুখি অনেকেই। শারীরিক পরীক্ষার জন্য জরুরি বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে জখম রোগী বাধ্য হলেন পায়ে হেঁটে যেতে। বাংলাদেশের যশোরের বাসিন্দা দীপক বিশ্বাসকে দেখা গেল দুই মেয়েকে নিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে কার্ডিয়োলজি বিভাগে যাওয়ার জন্য একে-ওকে অনুরোধ করতে। কিন্তু কাউকে না পেয়ে শেষে ২০০ টাকা দিয়ে হাসপাতাল চত্বরে বেআইনি ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ভাড়া করলেন কার্ডিয়োলজি বিভাগে পৌঁছতে। এক নিরাপত্তাকর্মীকে অবশ্য সঙ্গে পেলেন তিনি। তবে এক হাঁটু জল ভেঙে গাড়ি কার্ডিয়োলজিতে তাঁদের পৌঁছে দিলেও ট্রলি পেলেন না দীপকবাবু। সেখানে ওয়ার্ডের বাইরে তাঁকে দেখা গেল নার্সদের কাছে ট্রলির জন্য অনুরোধ করতে। তবে ডিউটিতে থাকা নার্স ওয়ার্ডের ফাঁকা ট্রলিটি দিলেন না। ভিজে পোশাকে ভয়ে কাঁপতে থাকা বড় মেয়ে প্রীতিকে অন্য এক জনের কাছে রেখে দীপকবাবু ছোট মেয়েকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে দোতলায় পৌঁছলেন।

ওই সময়েই দেখা গেল বাজ পড়ে জখম তাঁর স্ত্রী ভিজে পোশাকেই জরুরি বিভাগে বসে চাদর আর কম্বলের জন্য হা-পিত্যেশ করছেন। তাঁকে নার্সেরা সাফ জানিয়ে দিলেন চাদর বা কম্বল জরুরি বিভাগে আর নেই! একই হয়রানির মুখে পড়তে দেখা গেল শলপ-ডোমজুড়ের প্রিয়াঙ্কা সর্দার এবং ঝুমুর নস্করকে। বারবার চাদর চাইলেও তাঁদের কথা যেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স কিংবা অন্য কর্মীদের কানে গেল না।

শুধু শুক্রবারের ঘটনাই নয়। অতীতেও বড় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুর পরে পরিষেবা নিতে গিয়ে হয়রান হয়েছেন রোগীরা। ট্রলি কিংবা গায়ে দেওয়ার চাদর, এমনকি সামান্য পানীয় জলের অভাব টের পেয়েছেন অনেকেই।

যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ এসএসকেএমের সুপার রঘুনাথ মিশ্র দাবি করেছেন, ‘‘জরুরি বিভাগে ৭৫টি ট্রলি রয়েছে। কম্বল বা চাদরের সংখ্যাও পর্যাপ্ত ছিল এবং থাকে।’’

SSKM Hospital Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy