Advertisement
E-Paper

ব্রাজিল এসএমএ চিকিৎসায় পাশে, কিন্তু ভারত নয়

আক্রান্তদের বাবা-মায়েদের মতে, সরকারি উদ্যোগ থাকলে বহু শিশু এর চিকিৎসা পেতে পারে। কী এই এসএমএ?

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

চিকিৎসার খরচ উচ্চবিত্তদেরও নাগালের বাইরে। তবে বিরল এই রোগের চিকিৎসার খরচ ইংল্যান্ডে সরকার দেয়। আমেরিকায় সক্রিয় সরকার ও বিমা সংস্থা। কিন্তু এ দেশে স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (এসএমএ)-র চিকিৎসায় সরকার বা বিমা সংস্থার কোনও ভূমিকাই নেই। অভিযোগ, বিরল রোগের চিকিৎসায় তহবিল গঠন নিয়েও হেলদোল নেই সরকারের।

এই পরিস্থিতিতে এ রাজ্যের এসএমএ-১ আক্রান্ত দু’বছরের এক শিশুকে দিন কয়েকের মধ্যেই নিখরচায় (কম্প্যাশনেট ইউজ় প্রোগ্রাম) ওষুধ দিতে চলেছে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। পূর্ব ভারতে কোনও এসএমএ আক্রান্তের নিখরচায় চিকিৎসা পাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। এতেই আশার আলো দেখছেন শিশুটির বাবা-মা। মায়ের প্রার্থনা, “ওষুধে যেন সাড়া দেয় আমার বাচ্চা।” পাঁচ বছরের খুদে দিদির আশা, তার ভাইও এ বার অন্য বাচ্চাদের মতো হাঁটতে পারবে। তার খেলার সঙ্গী হবে।

আক্রান্তদের বাবা-মায়েদের মতে, সরকারি উদ্যোগ থাকলে বহু শিশু এর চিকিৎসা পেতে পারে। কী এই এসএমএ? শিশুরোগ চিকিৎসক সংযুক্তা দে জানান, ক্রোমোজ়োম ফাইভের ত্রুটির কারণে এই রোগ হয়। সাধারণ ক্ষেত্রে সেখানে থাকা জিন এসএমএন (সার্ভাইভাল মোটর নিউরন) এক এবং দুই প্রোটিন তৈরি করে। এসএমএন-এক ঠিক মতো উৎপাদন না-হওয়াই রোগের কারণ। ফলে শরীরের মোটর নিউরন সিস্টেম ব্যাহত হয়।

বছর চারেক আগে এসএমএ চিকিৎসায় একটি স্পাইনাল ইঞ্জেকশন আবিষ্কার হয়। সে বার এ দেশের কয়েক জন আক্রান্ত নিখরচায় সেই ইঞ্জেকশন পেয়েছিল। যদিও নাম পাঠানো সত্ত্বেও পূর্ব ভারত থেকে কেউ সেটি পায়নি। সাম্প্রতিক গবেষণায় আরও একটি খাওয়ার ওষুধ উঠে এসেছে। এটি ফেজ় থ্রি পর্বে থাকাকালীন দেওয়ার জন্যই বাছা হয়েছিল শিশুটিকে।

শিশুর মা বলছেন, “ছ’মাস বয়সেও উপুড় হচ্ছিল না। অনেক ডাক্তার দেখিয়ে ধরা পড়ে এসএমএ। আক্রান্তদের অভিভাবকদের সংগঠন ‘কিয়োর এসএমএ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া’র সাহায্যে পিয়ারলেস হাসপাতালের এসএমএ ক্লিনিকে চিকিৎসক সংযুক্তা দে-র কাছে ছেলেকে দেখাই।”

‘কিয়োর এসএমএ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার’ সহ-প্রতিষ্ঠাতা মৌমিতা ঘোষ বলছেন, “শিশুটির ভাল ফলের অপেক্ষায় আছি। আরও রোগী অপেক্ষায় আছেন। নতুন চিকিৎসা আসছে, অথচ টাকার অভাবে সন্তানকে ক্ষয়ে যেতে দেখছি। যেখানে ব্রাজিলের সরকার এই রোগের চিকিৎসা খরচ বহন করে, সেখানে ভারত পারে না?”

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ট্রায়ালে থাকা ওষুধের নিয়মের গেরো খানিকটা শিথিল করেছে। ফলে যে কোনও চিকিৎসার ফেজ় থ্রি পর্বের ওষুধ দেশে আনিয়ে চিকিৎসা করানো যাবে। এতে বিরল রোগের চিকিৎসা সামান্য গতি পাবে বলেই মনে করছেন মৌমিতা।

শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের মতে, বিরল রোগের চিকিৎসায় পূর্ব ভারত অনেক পিছিয়ে। তাই এ দেশে কম্প্যাশনেট ইউজ় প্রোগ্রাম হলেও বঞ্চিত হয় পূর্বাঞ্চল। তাঁর অভিযোগ, “বেসরকারি হাসপাতাল এখানে শুধুই ব্যবসা করে। বিরল রোগ নিয়ে গবেষণার কথা ভাবলে মানুষ উপকৃত হতেন।”

সংযুক্তাদেবী বলছেন, “পরিকাঠামো ও সচেতনতার অভাবে অনেক আক্রান্ত হিসেবের বাইরে রয়েছেন। পরিস্থিতি বদলাতে এখনও বহু পথ হাঁটতে হবে।”

SMA Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy