শহরের বিভিন্ন মেট্রোপথগুলি আলাদা ভাবে চিহ্নিত করতে বিশেষ রঙের কোড চালু করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। স্টেশনের নাম, সাজসজ্জা এমনকি তথ্যজ্ঞাপক বোর্ডেও ওই বিশেষ রঙের উপস্থিতি থাকছে। অথচ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্লানেড স্টেশনের বাইরের সাজসজ্জা এবং নামফলক সেই নিয়মের বাইরে কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, সবুজ বা ‘গ্রিন লাইন’ নামে পরিচিত ইস্ট-ওয়েস্টের ওই স্টেশনের নামফলক লেখা হয়েছে গেরুয়া ঘেঁষা কমলা রঙে। ওই স্টেশনের লিফ্টের ডিসপ্লে বোর্ডে বিভিন্ন তল সম্পর্কে তথ্যজ্ঞাপক বাংলা অনুবাদ দেখেও আঁতকে উঠছেন অনেকে!
শহরের মেট্রোপথগুলি ভিন্ন রঙে চিহ্নিত করতে ইস্ট-ওয়েস্টকে গ্রিন বা সবুজ লাইন, উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোকে নীল বা ব্লু লাইন, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোকে কমলা বা অরেঞ্জ লাইন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু ইস্ট-ওয়েস্টের এসপ্লানেড স্টেশনের বাইরের সাজসজ্জা এবং নামফলকে কমলা রঙের আধিক্য উস্কে দিয়েছে সংশয়। যা দেখে সমাজমাধ্যমে অনেকেই বলাবলি করছেন, ওই স্টেশন গ্রিন লাইনের না কি অরেঞ্জ লাইনের অংশ, তা বোঝা দায়! এসপ্লানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার পথে ওই মেট্রোর অন্য তিনটি স্টেশন ছাড়াও পূর্বে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্টের বিভিন্ন স্টেশনে সবুজ রং দেখা গিয়েছে। কিন্তু আচমকা এসপ্লানেড স্টেশনকে গেরুয়া রঙে রাঙানো হল কেন?
মেট্রোর একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের মঞ্চসজ্জা, ফ্লেক্স ইত্যাদির রঙের সঙ্গে মিল রাখতে গিয়ে এমনটা করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ওই স্টেশনের প্রবেশপথে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর লোগো ছাড়া বাকি সব কিছুতেই রয়েছে গেরুয়ার ছোঁয়া। যা দেখে অনেকের প্রশ্ন, কেন্দ্রের শাসকদলকে খুশি করতেই কি তবে এসপ্লানেড স্টেশনে নিয়মের এ হেন ব্যতিক্রম? তার সদুত্তর মেলেনি। তবে মেট্রোর কর্তাদের একাংশের দাবি, উদ্বোধন সংক্রান্ত প্রস্তুতি এবং অন্যান্য কাজ নির্মাণ সংস্থা সামলেছে। ফলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন তাঁরা।
সমস্যা চোখে পড়ছে ওই স্টেশনের লিফ্টের ডিসপ্লে বোর্ডে বিভিন্ন তল সম্পর্কে তথ্যজ্ঞাপক বাংলা অনুবাদেও। প্রায় ২৮ মিটার গভীর এসপ্লানেড স্টেশনে ৮টি লিফ্ট এবং ২০টি এসক্যালেটর রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি প্রধান লিফ্ট মেজেনাইন ফ্লোর থেকে প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত এসেছে। ওই সব লিফ্টের ডিসপ্লে বোর্ডে মেজেনাইন ফ্লোরের বাংলা অনুবাদ হিসাবে মধ্যবর্তী তলের বদলে ফুটে উঠেছে ‘মাঝে তলা’। আপার কনকোর্সকে বলা হয়েছে ‘উচ্চ মোড়া’। বাস্তবে মেট্রো স্টেশনের কনকোর্স এলাকায় বিভিন্ন অংশ থেকে আসা যাত্রীদের সমাবেশ ঘটে। সেখান থেকে যেমন প্ল্যাটফর্মে যাওয়া যায়, তেমনই স্টেশনের বাইরে যাওয়ার পথও মেলে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, অনবধানবশতই এমন অনুবাদ-বিভ্রাট ঘটেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)