E-Paper

নতুন পথে ভাল সাড়া যাত্রীদের, ভিড় দেখে খুশি মেট্রোকর্তারাও

নোয়াপাড়া জংশন থেকে একযোগে বিমানবন্দর এবং শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন অভিমুখে ট্রেন চালাতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৩৪
সফর: সোমবার সকাল থেকে চালু হল নোয়াপাড়া ও বিমানবন্দরের জয় হিন্দ স্টেশনের মধ্যে মেট্রোপথে যাত্রী পরিষেবা।

সফর: সোমবার সকাল থেকে চালু হল নোয়াপাড়া ও বিমানবন্দরের জয় হিন্দ স্টেশনের মধ্যে মেট্রোপথে যাত্রী পরিষেবা। কেউ বিমানবন্দরের পথে রওনা দিয়েছেন সুটকেস-সহ, কেউ প্রথম যাত্রায় নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত। ছবি: সুমন বল্লভ

বিমানবন্দর থেকে নোয়াপাড়া সংলগ্ন টবিন রোডের বাড়িতে আসতে মাত্র মাসখানেক আগেই কী ভাবে অ্যাপ-ক্যাবের জন্য ৬০০ টাকা দিতে হয়েছিল, সোমবার সাতসকালে সে কথাই শোনাচ্ছিলেন নীলেন্দু বসু। মাত্র ১০ কিলোমিটার পথের জন্য এত টাকা গোনার পাশাপাশি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের যানজটও যে কম বড় ব্যথা নয়, সে কথাও নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দরগামী মেট্রোয় বসে বলছিলেন তিনি।

বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি সংস্থার আধিকারিক নীলেন্দু এ দিন বেঙ্গালুরুর উড়ান ধরার জন্য বেরিয়েছিলেন। নতুন পথে হাতে সময় নিয়ে বেরোলেও যে ভাবে সাকুল্যে ১২ মিনিটের মধ্যে নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশন এবং পরের মিনিট পাঁচেকের মধ্যে সরাসরি টার্মিনালে পৌঁছে গেলেন, তা নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তিনি।

বেলা গড়াতে প্রায় একই প্রতিধ্বনি শোনা গেল অঞ্জলি গুপ্ত এবং শুভজয় মণ্ডলের কথায়। মেট্রো যে এ ভাবে বিমানবন্দরকে এত কাছে এনে দেবে, তা ভাবেননি কেউই। ফিরতি পথে যশোর রোড এবং দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে উঠেছিলেন অর্ক পাইন এবং ভাস্কর রায়। ভিআইপি রোড, রাজারহাট এলাকার বাসিন্দাদের শহরের কেন্দ্রে পৌঁছনোর এমন ব্যবস্থা হাসি ফুটিয়েছে তাঁদের মুখেও। ওই মেট্রোপথে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে নেমে শিয়ালদহ মেন শাখার বহু যাত্রীকে নোয়াপাড়াগামী মেট্রোয় উঠতে দেখা গিয়েছে। ভিড় দেখে আশাবাদী মেট্রোকর্তারাও।

তবে, এ দিন নোয়াপাড়া জংশন থেকে একযোগে বিমানবন্দর এবং শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন অভিমুখে ট্রেন চালাতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। নোয়াপাড়া স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট ব্যবধানে দু’টি লাইনে রেকের জোগান বজায় রাখতে গিয়ে দিনভর হিমশিম খেতে হয়েছে মেট্রোর আধিকারিকদের। সকালের দিকে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে পর্যায়ক্রমে বিমানবন্দর এবং শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন অভিমুখে মেট্রো ছাড়ায় যাত্রীদেরও বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে টালিগঞ্জ থেকে নোয়াপাড়া অভিমুখে কিছু ট্রেন চালানো হয়। ওই স্টেশনের সমস্যায় উত্তর-দক্ষিণ শাখায় মেট্রো দেরিতে চলে। অফিসের ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের একাংশ তাতে সমস্যায় পড়েন। একাধিক ট্রেন দেরিতে ছোটার অভিযোগ ছাড়াও মাঝপথে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন থেমে যাওয়ার অভিযোগ জানান তাঁরা। দমদমে সার্বিক ভাবে যাত্রীদের ভিড় কমলেও ট্রেন দেরিতে চলায় সমস্যা হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। মেট্রোকর্তাদের অবশ্য দাবি, প্রথম দিনে কিছু সমস্যা হয়েছে। পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা চলছে।বিমানবন্দর স্টেশনের ভিতরে মোবাইল সংযোগ কাজ না করায় যাত্রীদের অনেকেই ইউপিআই ব্যবস্থায় টিকিট কাটতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন।

উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর তুলনায় মসৃণ ছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। সকাল ৯টার পর থেকে ওই মেট্রোয় শিয়ালদহ, সেক্টর-৫ স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে। তবে, শিয়ালদহ থেকে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পূর্ব এবং পশ্চিম, দু’দিকেই দিনভর যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়েছে। ওই শাখার হাওড়া ময়দান, হাওড়া, এসপ্লানেড, শিয়ালদহ, ফুলবাগান-সহ সব স্টেশনেই যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে বলে সূত্রের খবর। সন্ধ্যায় অফিস-ফেরত যাত্রীদের ভিড়ও যথেষ্ট বেশি ছিল বলেই সূত্রের খবর। তুলনায় কবি সুভাষ-বেলেঘাটা শাখায় যাত্রী-সংখ্যা কমেছে। ওই শাখায় কৌতূহলী যাত্রী বেশি চোখে পড়েছে এ দিন।মৃণাল নাথ নামে বেহালার এক যাত্রী বলেন, ‘‘চিংড়িঘাটায় কাজে যাচ্ছিলাম। মেট্রো চড়ে দেখলাম, কেমন সময় লাগছে।’’

একাধিক পথে প্রথম দিনের সফর নিয়ে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি বলেন, ‘‘নতুন পরিষেবা শহরবাসীর কাছে বিপুল জনপ্রিয় হবে।’’ কলকাতা মেট্রোর প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত অবশ্য সুষ্ঠু মেট্রো পরিষেবার জন্য কর্মীদের কৃতিত্ব দিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

metro railway metro

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy