Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Flight

‘মনোযোগী’ শ্রমিকেরা, স্বস্তি উড়ান সংস্থার

বেশ কয়েকটি উড়ান সংস্থা জানিয়েছে, বিমানে ওঠার পরে গোটা যাত্রাপথে জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকছেন এই শ্রমিকেরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৪৩
Share: Save:

তাঁদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগের বেশি জনই জীবনে প্রথম বিমানে চাপছেন। বিবিধ নিয়মকানুন সম্পর্কে তাঁরা সড়গড় নন। অথচ বিমানে ওঠার আগে টার্মিনালে এবং বিমানে ওঠার পরে এক বৈপরীত্য দেখা যাচ্ছে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের আচরণে। যা দেখে খানিকটা অবাকই হচ্ছেন উড়ান সংস্থার কর্তা এবং বিমানসেবিকারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই শ্রমিকদের প্রথম উড়ানে বিমানের ভিতরে বিস্তর গোলমালের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, সাধারণ যাত্রীদের নিয়ে মাঝেমধ্যে তা-ও যতটা সমস্যা দেখা দেয়, ওঁদের নিয়ে সেটুকুও হচ্ছে না।

বেশ কয়েকটি উড়ান সংস্থা জানিয়েছে, বিমানে ওঠার পরে গোটা যাত্রাপথে জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকছেন এই শ্রমিকেরা। কী ভাবে সিট বেল্ট বাঁধতে হয়, বিমানসেবিকাদের থেকে মন দিয়ে তা দেখছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজেরাই তা বাঁধতে পারছেন। এক বিমানসেবিকার কথায়, ‘‘বেশির ভাগ যাত্রীই যে হেতু সারাক্ষণ আসনে বসে থাকছেন, আমাদেরও সুবিধা হচ্ছে। এত দিন বিমানে খাবার দেওয়া হচ্ছিল না। সম্প্রতি শুরু হয়েছে। ওই যাত্রীরা নির্দ্বিধায় তা খেয়ে নিচ্ছেন।’’

কিন্তু সমস্যা দেখা দিচ্ছে বিমানে ওঠার আগে, টার্মিনালের ভিতরে। এই শ্রমিকদের নিয়েই কার্যত ঘাম ছুটে যাচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং উড়ান সংস্থাগুলির। কেন্দ্রের নিয়মানুযায়ী, বিমানে উঠতে গেলে মোবাইলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই শ্রমিকদের অধিকাংশেরই স্মার্ট ফোন নেই। কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, সঙ্গে বোর্ডিং পাস আনতে হবে যাত্রীকেই। অথচ এই অনভিজ্ঞ যাত্রীরা চলে আসছেন কাগজের টিকিট নিয়ে।

এতেই শেষ নয়। বোর্ডিং পাস ছাড়াই অনেকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। ঘণ্টাখানেক পরে ফিরে আসতে হচ্ছে চেক-ইন কাউন্টারে। দূরত্ব-বিধি না মানার অভিযোগও উঠছে। কাউকে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা লাইনে যেতে বললে সকলে সেখানে চলে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের যুক্তি, দলছুট হয়ে গেলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিমানের মাঝের আসনে যাঁরা বসছেন, তাঁদের পিপিই কিট পরতে হচ্ছে। এটা দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট উড়ান সংস্থাই। অনেক ক্ষেত্রে অনভিজ্ঞ শ্রমিক সেই পিপিই কিট হাতে নিয়ে বিমানে উঠে পড়ছেন। তাঁকে আবার পিপিই কিট পরে আসতে বলা হচ্ছে। কেউ আবার এরোব্রিজে পিপিই কিট ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন।

টার্মিনালের এই চিত্র দেখে অনেক সংস্থাই মনে করেছিল, এই শ্রমিকেরা বিমানে ওঠার পরে না জানি কী ঝামেলা পোহাতে হতে পারে। বিমান ওড়ার মুহূর্তে ও নামার সময়ে অনেকে ঘাবড়েও যেতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে উল্টো ছবি দেখে তারা এখন অনেকটাই স্বস্তিতে।

কলকাতা থেকে যে সব শহরে শ্রমিকদের যাতায়াত বেশি, সরাসরি সেই সব শহরে উড়ান চালু করছে ইন্ডিগো। কলকাতা থেকে এই প্রথম সরাসরি ভদোদরা, কোচি, দেহরাদূন ও ভোপালের উড়ান শুরু করেছে তারা। সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রচুর শ্রমিক যাচ্ছেন এই শহরগুলিতে। তাঁরা মূলত নির্মাণকাজ বা রঙের কাজ করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flight Migrant Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE