Advertisement
E-Paper

পুলিশের জালে চরস-সহ বন্দরের ‘রাজা’

দরবার বসিয়েছিলেন ‘রাজা’। সামনে হাজির পারিষদেরাও। আচমকাই হাজির অস্ত্রধারী ‘বর্গিরা’। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাজার কপালে বন্দুক ঠেকালেন তাঁরা। এর পরেই সেখান থেকে সোজা রাজাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে এলাকা ছাড়লেন বর্গিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ০১:১২
 ধৃত রাজাবস

ধৃত রাজাবস

দরবার বসিয়েছিলেন ‘রাজা’। সামনে হাজির পারিষদেরাও। আচমকাই হাজির অস্ত্রধারী ‘বর্গিরা’। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাজার কপালে বন্দুক ঠেকালেন তাঁরা। এর পরেই সেখান থেকে সোজা রাজাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে এলাকা ছাড়লেন বর্গিরা।

পুলিশ জানায়, ওই বর্গিরা আসলে বন্দর বিভাগের ‘স্পেশ্যাল সেকশন পোর্ট ডিভিশন’-এর গোয়েন্দারা। আর সেই রাজা? বন্দর এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী গোলাম মুস্তাফা মোল্লা ওরফে রাজাবস। পুলিশ মঙ্গলবার রাতে এ ভাবেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে খিদিরপুর এলাকা থেকে। তদন্তকারীদের দাবি, রাজার বিরুদ্ধে একাধিক খুন, তোলাবাজি-সহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও তিনি অধরা ছিলেন। পুলিশের এক কর্তা জানান, রাজাকে এক কেজির বেশি চরস-সহ ধরা হয়েছে। বুধবার আদালতে তাঁর ২৫ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়। ধৃত স্থানীয় তৃণমূল নেতার ভাইপো। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় একটি খুন এবং রাজাবাগানের একটি অপহরণের কথা স্বীকার করেছেন রাজা।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, নাদিয়াল ভিলেজ রোডের বাসিন্দা রাজা মেটিয়াবুরুজ, নাদিয়াল, রাজাবাগান এলাকায় বেতাজ বাদশা হিসেবে পরিচিত। তাঁর সিন্ডিকেট চক্র চলত ওই এলাকায়। অভিযোগ, এলাকায় নির্মাণকাজ করতে হলে রাজাবসকে খুশি করতে হতো প্রথমে। না হলে কাজ করার অনুমতি মিলত না। গত কয়েক বছর ধরে বন্দরের ওই এলাকার পাশাপাশি হাওড়ার নাজিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাতেও নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন।

লালবাজার জানিয়েছে, ২০১৩ সালে নিজের সিন্ডিকেটের সদস্য শোয়েব আলি মোল্লার সঙ্গে বিরোধ বাধে রাজার। অভিযোগ, এর পরেই শোয়েবকে অপহরণ করে খুন করে রাজার বাহিনী। ওই তদন্ত এসএসপিডি করলেও রাজাকে ধরা যায়নি। তদন্তকারীরা জানান, ওই ঘটনায় রাজাকে পলাতক দেখিয়ে চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। পরে রাজা কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। আদালতের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়াও জারি করা হয়েছিল। কিন্তু রাজার ব্যবস্থাও রাজকীয়। নিজের নৌকো করে হাওড়ার নাজিরগঞ্জ থেকে এ পারে রাজাবাগান বা নাদিয়ালে এসে কাজ সেরে আবার ফিরে যেতেন। ফলে তাঁর নাগাল পাওয়া সহজ ছিল না।

এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘এলাকায় রাজার এতই প্রভাব ছিল যে, কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার সাহস দেখাতে পারেননি। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকায় তিনি এলাকার বেতাজ বাদশা হয়ে উঠেছিলেন। তাই মাদক মামলার পরে রাজাকে ওই অপহরণের মামলায় হেফাজতে নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করা হবে।’’

Arrest Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy