বিপদের মুখে রাজার মুখোশ খসে যাওয়ার কথা শোনা যায়। এ বার পুলিশের হাতে পড়তেই চুল খসে পড়ল আর এক রাজার।
গ্রেফতার হওয়ার সময়ে মেটিয়াবুরুজের কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজাবসের মাথায় ছিল ঝাঁকড়া চুল। থানায় নিয়ে এসে পুলিশ একটু নরমে-গরমে শোনাতেই উঠে এল রাজার কেশরাশি। বেরিয়ে পড়ল মাথা ভর্তি টাকা। মঙ্গলবার রাতে বন্দর এলাকার দুষ্কৃতী গোলাম মুস্তাফা মোল্লা ওরফে রাজাবস-কে গ্রেফতার করেছিলেন গোয়েন্দারা। রাজার বিরুদ্ধে একাধিক খুন ও তোলাবাজি-সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। খিদিরপুরে তার কাছ থেকে এক কেজিরও বেশি চরস উদ্ধার হয়েছিল। এখন সে পুলিশি হেফাজতে।
জেরার মুখে ধৃতের দাবি, বেশ কিছু বছর ধরে সে এলাকাছাড়া। পুলিশের ভয়ে সে নাদিয়ালের বদলে গঙ্গার অন্য পারে নাজিরগঞ্জের চুনাভাটিতে নিজের তোলাবাজির ব্যবসা শুরু করেছিল। কিন্তু নাদিয়াল, রাজাবাগান বা মেটিয়াবুরুজের সাম্রাজ্য যাতে হাতছাড়া না হয়, সে জন্য তাকে সেখানেও আসত হতো। কিন্তু এ পারে তাকে দেখতে পেয়ে সাধারণ মানুষ যাতে চিনতে না পারে, তার জন্য সে মাথায় পরচুলা পরত। ধরা পড়ার ভয়ে গাড়িও ব্যবহার করত না রাজাবস। ভুটভুটিতে গঙ্গা পারাপার করত।
লালবাজার সূত্রে খবর, জেরার মুখে দু’টি খুনের কথা শিকার করেছে রাজাবস। ওই দুই ঘটনায় তার সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্যও জড়িত। পুলিশের দাবি, তদন্তকারীদের কাছে রাজাবস বলেছে, শোয়েব আলি মোল্লা নামে তারই সিন্ডিকেটের এক সদস্যের সঙ্গে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। সে কথা জানতে পেরে ২০১৩-র ১৬ মার্চ রাতে সে ফোন করে গঙ্গার পারে ডেকে আনে শোয়েবকে। সেখানে তার শাগরেদরা শোয়েবকে খুন করে দেহের পেট চিরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়। এক অফিসার জানান, পেটে চিরে দেওয়ায় দেহটি ভেসে ওঠেনি। ওই খুনে নেপালি ও চিকা নামে তার দুই সঙ্গীও জড়িত বলে রাজাবস জানিয়েছে।