Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মেটিয়াবুরুজে গুলিবিদ্ধ যুবক

রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক যুবক। মেটিয়াবুরুজ থানা থেকে প্রায় একশো মিটার দূরে হঠাৎ বিকট আওয়াজ। অজ্ঞাতপরিচয় এক দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলি পিঠ ফুঁড়ে দিল ওই যুবকের।

বীরবাহাদুর সিংহ

বীরবাহাদুর সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২২
Share: Save:

কসবার পরে মেটিয়াবুরুজ। পরপর দু’দিন গুলি চলল শহরে।

রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক যুবক। মেটিয়াবুরুজ থানা থেকে প্রায় একশো মিটার দূরে হঠাৎ বিকট আওয়াজ। অজ্ঞাতপরিচয় এক দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলি পিঠ ফুঁড়ে দিল ওই যুবকের। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করে ছুটতে শুরু করলেন তিনি। জামা ভেসে যাচ্ছে রক্তে। সোমবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আহত ওই যুবককে সঙ্কটজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মেটিয়াবুরুজের লিচুবাগানের বাসিন্দা বীরবাহাদুর সিংহ এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেঁটে থানার কাছে বাস ধরতে যাচ্ছিলেন বড়বাজার যাবেন বলে। থানার কাছাকাছি আসতেই পিছন থেকে এক দুষ্কৃতী তাঁর পিঠ লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ বীরবাহাদুরের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। পাশের এক দোকানি তাঁকে নিজের দোকানে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক শুশ্রূষার ব্যবস্থা করেন। মেটিয়াবুরুজ ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি আহত যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। তদন্তকারীরা জানান, ওই দুষ্কৃতী রাস্তার পাশের গলিতে বীরবাহাদুরের জন্য অপেক্ষা করছিল। তিনি আসতেই সে গুলি ছুড়ে পিছনে কিছুটা ধাওয়া করে পালিয়ে যায়। ওই গলির সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গুলিবিদ্ধ যুবক আরএসএসের সমর্থক। এ দিন ওই ঘটনার পরে এসএসকেএম হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্তকে দ্রুত ধরার দাবিতে আরএসএস সমর্থকেরা হাসপাতালে জড়ো হন। গার্ডেনরিচ থানার অতিরিক্ত ওসি-কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে লালবাজার ও ভবানীপুর থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বীরবাহাদুর লিচুবাগান বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া রয়েছেন। কিন্তু জমির মালিক ওই জায়গায় প্রোমোটিং করতে চাইছেন। অভিযোগ, প্রোমোটার ও তাঁর দলবল মাস ছয়েক আগে বীরবাহাদুরকে উৎখাত করতে মারধর করেছিলেন। তাঁর মা গীতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘আমাদের পুরো পরিবার লিচুবাগানের এই বস্তিতে চল্লিশ বছর ধরে ভাড়া রয়েছে। প্রায় চার কাঠা এই জায়গাটি বিক্রি হওয়ায় জমির মালিক এখন প্রোমোটিং করার জন্য আমাদের উঠে যেতে বলেছেন। ছ’মাস আগে প্রোমোটারের লোকজন বাথরুম ভেঙে দিয়েছিল। আমার ছেলেকে মারধরও করেছিল।’’ পরিবারের দাবি, ওই প্রোমোটার এলাকার কাউন্সিলরের আত্মীয়। এ দিনের হামলায় জমি সংক্রান্ত বিবাদের কোনও ভূমিকা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর রহমত আলম আনসারি বলেন, ‘‘বীরবাহাদুরকে আমি চিনি না। আমরা ঘটনায় জড়িত নই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Firing Metiabruz
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE