Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
জগাছা

বিয়েতে নারাজ ছাত্রী, পথে ‘বেধড়ক মার’ জওয়ানের

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে প্রকাশ্য রাস্তায় খুনের হুমকি দিয়ে বেধড়ক মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জগাছার গভর্নমেন্ট প্রেস আবাসনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০০:১৮
Share: Save:

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে প্রকাশ্য রাস্তায় খুনের হুমকি দিয়ে বেধড়ক মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জগাছার গভর্নমেন্ট প্রেস আবাসনে। রাতেই ছাত্রীর পরিবার ওই যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, মারধর ও খুনের হুমকির অভিযোগ দায়ের করে। বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্মেন্দ্র গুপ্ত নামে কানপুরের বাসিন্দা ওই যুবক পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে জগাছার গভর্নমেন্ট প্রেস আবাসনে আসেন ধর্মেন্দ্র। সেখানে ৯ নম্বর ব্লকে এক বন্ধুর কাছে থাকতেন তিনি। তার আগে তিনি থাকতেন ওই ছাত্রীটি আবাসনের যে ব্লকে থাকতেন, তার উপরে। ছাত্রীটির অভিযোগ, ৯ নম্বর ব্লকে আসার পর থেকে কলেজ যাতায়াতের পথে ধর্মেন্দ্র তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন। ছাত্রীটির পরিবার পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছে, মাস দুয়েক আগে কলেজ যাবার পথে ওই যুবক রাস্তা আটকে ছাত্রীটিকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। ক্ষিপ্ত ধর্মেন্দ্র তখন রাস্তায় চড় মারেন ছাত্রীটিকে। বাড়ি ফিরে ঘটনাটি জানান ওই ছাত্রী। এর পরে পাড়ার লোকেদের সামনে ক্ষমাও চেয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার পরে কিছু দিন চুপচাপ ছিলেন ধর্মেন্দ্র। তার পরে ফের তিনি ওই ছাত্রীকে রাস্তায় হেনস্থা করতে শুরু করেন। এমনকী, দিন কয়েক আগে হুমকি দেন, ওই ছাত্রী তাঁকে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পাড়ার দোকানে খাবার কিনতে বেরিয়েছিলেন ছাত্রীটি। অভিযোগ, একা বাড়ি ফেরার পথে তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ান ধর্মেন্দ্র। ফাঁকা রাস্তায় তিনি ছাত্রীটির হাত ধরে টানেন। তাঁকে খুনের হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। ছাত্রীটি পালাতে চেষ্টা করলে ধর্মেন্দ্র এলোপাথাড়ি চড়, লাথি, ঘুষি মারতে শুরু করেন। পরে বেগতিক বুঝে তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখেই পালান।

সে রাতে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বাড়ি ফিরে আসেন ওই ছাত্রী। তবে বৃহস্পতিবারও ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। মারের চোটে ডান চোখের নীচে মারাত্মক ভাবে ফুলে গিয়েছে। ব্যথায় চোয়াল নাড়তে পারছেন না। গোটা গায়ে আঘাতের দাগ। এ দিন সকালে বাড়িতে বসে ছাত্রীটি বলেন, ‘‘ভরসন্ধ্যায় আমাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মেরেছে। পেটেও লাথি মেরেছে। সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।’’ এ দিনই বিকেলে বুকে ব্যথা নিয়ে ওই ছাত্রীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে ওই জওয়ান তাঁদের ফোন করে খুনের হুমকি দিচ্ছেন।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তার পরে আমার মনোবল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জানি না তা কবে ফিরে পাব, কী ভাবেই বা পড়াশোনা চালাব?’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। সে যেখানেই লুকিয়ে থাকুক, খুঁজে বার করা হবে। প্রয়োজনে ভিন্ রাজ্যে যাবে পুলিশ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE