মহিলাদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ ছিলই। এ বার অটোচালকের বিরুদ্ধে এক কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠল। শুধু তা-ই নয়, ওই অটোচালকের হাত থেকে বাঁচতে চলন্ত অটো থেকে রাস্তায় ঝাঁপ দিতে বাধ্য হয়েছে এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সেই কিশোরী। ঝাঁপ দেওয়ায় আহতও হয়েছে সে। সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরপুকুরে। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় অভিযুক্ত অটোচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তার আগেই ক্ষিপ্ত জনতা ওই চালককে বেধড়ক মারধর করে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সমর মান্না। তার বাড়ি হরিদেবপুরের পূর্বাচলে।
খোদ পরিবহণমন্ত্রী তো বটেই, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাও বারবার এক শ্রেণির অটোর দৌরাত্ম্য ঠেকাতে আশ্বাস দিয়ে আসছেন। কিন্তু রোখা যাচ্ছে না বেপরোয়া অটোকে। এ বছরের শুরুতে পরপর বেশ কয়েকটি ঘটনায় অটো-দৌরাত্ম্যের চিত্র সামনে এসেছে। শহরের দু’টি জায়গায় বেপরোয়া অটোর ধাক্কায় মৃত্যু হয় দুই বৃদ্ধের। তারাতলায় খুচরো দিতে না পারায় এক মহিলাকে চড় মারেন এক অটোচালক। পার্ক সার্কাসে বেশি ভাড়া না দিতে চাওয়ায় এক মহিলার মাথায় রড দিয়ে মারেন অটোচালক। পরপর এই সব ঘটনার জেরে পুলিশি অভিযানের কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী। নিজেই রাস্তায় নেমে অটোচালকদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। কিন্তু এত কিছুর পরেও অটোচালকদের বেপরোয়া মনোভাব যে কমেনি, ফের তার প্রমাণ মিলেছে ঠাকুরপুকুরের এই ঘটনায়।
ঠিক কী ঘটেছিল সোমবার?
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত ন’টা নাগাদ বেহালার সখেরবাজারে কোচিং ক্লাস সেরে ওই কিশোরী বাড়ি ফিরছিল। মাঝপথে বৃষ্টি নামায় সে ঠাকুরপুকুর অটোস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে পড়ে। নিগৃহীতা ওই কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, সেই সময়ে সমর এসে বলে, ‘চলো তোমায় বাড়ি নামিয়ে আসছি।’ নিয়মিত ওই রুটে অটোয় যাতায়াতের সুবাদে কয়েক জন চালক কিশোরীর মুখচেনা হয়ে গিয়েছেন। পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্ত অটোচালক সে রকমই এক জন।
মুখ চেনা হওয়ায় কিশোরী অভিযুক্তের অটোয় উঠে পড়ে বলে মনে করছে পুলিশ। সমর তখন তাকে সামনের আসনে বসতে বলে। পথে অটোচালক ওই কিশোরীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ওই কিশোরী জানিয়েছে, এর পরে সে ঠিক করে, মাঝপথেই নেমে যাবে। কিন্তু সমরকে বারবার অটো থামাতে বললেও সে তাতে কর্ণপাত করেনি। বাধ্য হয়ে ঠাকুরপুকুর বাজারে স্থানীয় একটি ক্লাবের সামনে অটো থেকে ঝাঁপ দেয় ওই কিশোরী।
সোমবার ঠাকুরপুকুর বাজার বন্ধ থাকায় রাস্তায় ভিড় কম ছিল। ওই ক্লাবের সদস্যেরা তখন সেখানে থাকায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। তাঁদেরই কয়েক জন দৌড়ে গিয়ে অটোচালককে ধরে ফেলেন। এর পরে উত্তেজিত জনতা সমরকে মারধর করে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। পরে তাকে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন ওই ক্লাবের সদস্যেরা। খবর দেওয়া হয় ছাত্রীর বাড়িতেও। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ঠাকুরপুকুর থানা সমরকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অটো থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় কিশোরীর হাত-পা এবং চোখের নীচে আঘাত লেগেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy