প্রতীকী ছবি
অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে টাকা খোয়ানোর অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শোনা যায়, পুলিশে অভিযোগ করেও টাকা ফেরত পাওয়া যায়নি। ধরা পড়েনি প্রতারক। কিন্তু বন্দর এলাকার একটি ঘটনায় দেখা গিয়েছে, পুলিশে দ্রুত অভিযোগ জানাতে পারলে টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রেও শুধু অভিযোগ করলেই হবে না, পুলিশকেও সক্রিয় হতে হবে যত দ্রুত সম্ভব।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়কর দফতরের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্তা একটি বহুজাতিক অনলাইন সংস্থার অ্যাপের মাধ্যমে বইয়ের বরাত দিয়েছিলেন। কিন্তু কুড়ি দিন কেটে গেলেও তিনি সেই বই পাননি। এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে ওই সংস্থার নামে ট্যাগ করে তিনি টুইট করেন। ওই সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া দল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁকে বলা হয়, তিনি সম্ভবত বইয়ের মুদ্রিত সংস্করণের বদলে অনলাইনে পড়া যায় এমন সংস্করণের বরাত দিয়েছেন। এর জন্য তাঁকে সংস্থার অ্যাপটি ‘রিফ্রেশ’ করতে হবে। কিন্তু তিনি মুদ্রিত সংস্করণেরই বরাত দিয়েছেন বলে জানানোর পরেও সংস্থা আর কোনও উত্তর দেয়নি বলে অভিযোগ আয়কর দফতরের ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্তার।
বাধ্য হয়ে এর পরে ফের বই না-পাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর টুইট করেন তিনি। পুরনো সমস্ত মেলও যোগ করে দেন টুইটের সঙ্গে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই অনলাইন সংস্থার নাম করে এক প্রতারক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে পুলিশের দাবি। সাহায্য দেওয়ার নামে ওই ব্যক্তিকে নিজের মোবাইলে প্লে-স্টোর থেকে একটি অ্যাপ্লিকেশন নামাতে বলা হয়। এর পরে ব্যাঙ্কের কার্ড ব্যবহার করে একটি লিঙ্কে দু’টাকা পাঠাতে বলা হয়। সেই মতো করতেই অভিযোগকারীর ব্যাঙ্ক থেকে উধাও হয়ে যায় ২০ হাজার টাকা! একই ভাবে আরও ৯০ হাজার টাকার বেশি তুলে নেওয়ার চেষ্টা হলেও কোনও মতে ব্যাঙ্কে অভিযোগ জানিয়ে কার্ডটি ব্লক করেন অভিযোগকারী। কিন্তু ২০ হাজার টাকা কী করে পাওয়া যাবে, তা তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না।
ওই দিনই অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর বন্দর এলাকায় পুলিশের সাইবার শাখার নতুন ভবনের উদ্বোধন হয়। সেই ছবি দেখে প্রতারিত ব্যক্তি যোগাযোগ করেন বন্দর এলাকার ডিসি জাফর আজমল কিদোয়াইয়ের সঙ্গে। দ্রুত তদন্তে নেমে পুলিশ প্রতারককে চিহ্নিত করার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকাও উদ্ধার করে। ওই টাকা প্রতারিতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। ডিসি বলেন, ‘‘এই ভাবে প্রতারণা করা হলে টাকা একটি গেটওয়ের মাধ্যমে যায়। গেটওয়ে চিহ্নিত করাই প্রথম কাজ। এ ক্ষেত্রে যে গেটওয়ে ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটিকে ধরে প্রথমে টাকা যাওয়াটা বন্ধ করা হয়। ফলে দ্রুত টাকা পুনরুদ্ধার করা গিয়েছে। অভিযোগকারী যেহেতু ছ’ঘণ্টার মধ্যেই যোগাযোগ করেছিলেন, তাই কাজটা করতে সুবিধা হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ পেয়ে কাজে নামা গেলে টাকা উদ্ধার করতে পারার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।’’
সেই সঙ্গে পুলিশ জানাচ্ছে, অনলাইনে এ ভাবে কোনও রকম লেনদেনের পথে যাওয়া উচিত নয়। হেল্প সেন্টারের নামে অনলাইনে ছড়িয়ে থাকা নম্বরগুলিকেও বিশ্বাস করা চলবে না। অচেনা কারও বক্তব্য শুনে মোবাইলে কোনও রকম অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করাও বন্ধ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy