প্রতীকী ছবি।
সবাই সমান নন। এই বার্তাই যেন দিতে চাইছেন ওঁরা।
অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া নয়। বেশি লাভ করতে চেয়ে দূরত্ব-বিধি উড়িয়ে বেশি সংখ্যায় যাত্রী তোলাও নয়। বরং কোভিডের পরিস্থিতিতে যাত্রীদের মতামতকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন কলকাতার বহু রুটের অটোচালকেরা।
সরকারি ভাবে গত সপ্তাহের শেষেই ঘোষণা করা হয়েছিল আসন যত, তত সংখ্যক যাত্রীই অটোয় বসতে পারবেন। এর পরেই অনেক জায়গায় অটোচালকেরা গাদাগাদি করে যাত্রী তুলতে থাকেন। তাতে সামাজিক দূরত্ব-বিধি ধাক্কা খাচ্ছিল। পরিবহণের অভাব থাকায় যাত্রীরাও বাধ্য হচ্ছিলেন ঠেসাঠেসি করে অটোয় বসতে।
কিন্তু ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটছে উত্তর থেকে দক্ষিণের অনেক রুটেই। যাত্রীরাই জানাচ্ছেন, তাঁদের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা সামাজিক দূরত্ব মেনে বেশি ভাড়া দিতে রাজি, তাঁদের সে ভাবেই গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন অটোচালকেরা। যাত্রী বেশি ভাড়া দিতে রাজি না হলে তখন পুরনো ভাড়ায় চার জন করেই যাত্রী ওঠানো হচ্ছে।
গড়িয়া-টালিগঞ্জ, কবরডাঙা-টালিগঞ্জ— এই রুটগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সোমবার থেকে চার জন করেই যাত্রী তোলার। কিন্তু টালিগঞ্জ-রাসবিহারী কিংবা টালিগঞ্জ-হাজরা রুটে দেখা গেল সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অটোয় দু’জন যাত্রী তোলা হচ্ছে। সাতসকালে ওই রুটে যাত্রীদের লম্বা লাইনও দেখা যায়। বেশি ভাড়া দিয়েই অটোয় চড়ছেন যাত্রীরা।
রাসবিহারী মোড় থেকে গড়িয়াহাট কিংবা গড়িয়াহাট থেকে চেতলাগামী অটোর রুটে দেখা গেল দু’জন যেতে চাইলে দ্বিগুণ ভাড়া, আর পুরনো ভাড়া দিতে চাইলে চার জনকে একসঙ্গে যেতে হবে বলে যাত্রীদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গড়িয়াহাট-হাজরা কিংবা গড়িয়া-গোলপার্ক রুটেও দেখা গেল একই ছবি। শোভাবাজার-উল্টোডাঙা রুটের অটোচালকেরা জানালেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে কেউ যেতে চাইলে তাঁরা দু’জন করেই যাত্রী নিচ্ছেন। তখন ভাড়া নিচ্ছেন কুড়ি টাকা। যাত্রীরা চার জন উঠলে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১২ টাকা। অটোচালকেরা জানান, কেউ সামনে বসলে তাঁরাও যতটা সম্ভব দূরত্ব মেনেই অটো চালাচ্ছেন। এক অটোচালকের কথায়, ‘‘আমরাও যতটা পারছি সাবধানে থাকছি। মাস্ক পরে অটো চালাচ্ছি।’’
যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে দমদম-নাগেরবাজার অটোর রুটে। অটোচালকদের একাংশ জানান, ওই রুটটি মূলত দমদম মেট্রো এবং দমদম স্টেশনের ট্রেনযাত্রীদের উপরেই নির্ভরশীল। কিন্তু মেট্রো ও লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীর সংখ্যা এখন অনেকটাই কম। তা সত্ত্বেও তাঁরা সামাজিক দূরত্ব মেনেই যাত্রী ওঠানোর চেষ্টা করছেন। অটোর আসনে স্যানিটাইজ়ারও স্প্রে করছেন।
আইএনটিটিইউসি-র উত্তর কলকাতা জেলা অটো ইউনিয়নের সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে আমরা যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। অটোচালকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। কোথাও ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ পেলে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy