Advertisement
E-Paper

বিপর্যয়ে শিক্ষা নিয়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি পুরসভার

কিছু দিন আগে কয়েক পশলা বৃষ্টির জের সামাল দিতেই নাজেহাল হতে হয়েছিল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল শহরের জনজীবন। এ বার তাই ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের আগাম খবর পেয়ে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে পুর-প্রশাসন। তুমুল ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে বুধবার দফায় দফায় বৈঠক করেছেন কলকাতা-হাওড়ার পুরকর্তারা। কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন লন্ডনে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৮
ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে জরুরি বৈঠক পুরকর্তাদের। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে জরুরি বৈঠক পুরকর্তাদের। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

কিছু দিন আগে কয়েক পশলা বৃষ্টির জের সামাল দিতেই নাজেহাল হতে হয়েছিল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল শহরের জনজীবন। এ বার তাই ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের আগাম খবর পেয়ে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে পুর-প্রশাসন।

তুমুল ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে বুধবার দফায় দফায় বৈঠক করেছেন কলকাতা-হাওড়ার পুরকর্তারা। কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন লন্ডনে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী। এ দিন বিকেলে সেখান থেকেই টেলিফোনে তিনি জানান, বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত পুর-প্রশাসন। নিকাশি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে। প্রতিটি বরোতে খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনিও কলকাতায় ফিরে আসছেন বলে জানিয়েছেন মেয়র। নিকাশি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের ছুটি বাতিল করে একই ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাওড়া পুরসভাও। সেখানকার মেয়র রথীন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘পুর-এলাকার নিচু জায়গাগুলিতে হেভি-ডিউটি পাম্প লাগানো হয়েছে। সমস্ত মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলরদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’

কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেলে সমস্ত দফতরের ডিজিদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ। ছিলেন পুরসভার যুগ্ম কমিশনার এবং সচিবও। ভিডিও কনফারেন্সে প্রতিটি বরোর এগজিকিউটিভ অফিসারদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন পুর-কমিশনার। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ এবং মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের সঙ্গেও কথা বলেন পুরকর্তারা।

তারকবাবু জানান, শহরে গুরুত্বপূর্ণ পাম্পিং স্টেশনগুলোতে বুধবার রাত থেকেই এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারেরা থাকবেন। এত দিন শুধু পুরভবনের একটি কন্ট্রোল রুম থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হত। আসন্ন দুর্যোগের মোকাবিলায় প্রতিটি বরোয় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। সেখানে থাকবেন পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী এবং কলকাতা পুলিশের টিম। গাছ উপড়ে পড়লে পুরসভার স্বয়ংক্রিয় গাছ কাটার যন্ত্র নিয়ে পুরসভার বিশেষ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছবে। রাতে কোথাও জল জমা নিয়ে সমস্যা হলে ছুটে যাবে নৈশ দল (নাইট গ্যাং)। তারকবাবু আরও জানান, বালিগঞ্জ, ধাপা, মানিকতলা, উল্টোডাঙা এবং পামারবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পাম্পিং স্টেশনগুলি সব সময়ে সচল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ম্যানহোল এবং গালিপিট পরিষ্কার রাখতে নিকাশি ও জঞ্জাল অপসারণ দফতরের কর্মীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

এ দিন সন্ধ্যায় পুরসভার কন্ট্রোল রুমে তারকবাবুর সঙ্গে ছিলেন অতীনবাবুও। তিনি জানান, তৈরি রাখা হচ্ছে পুরসভার মেডিক্যাল টিমকেও। দুর্ঘটনা ঘটলে পৌঁছে যাবে পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স এবং চিকিৎসক। অতীনবাবু জানান, রাতের মধ্যে ওআরএস-সহ প্রয়োজনীয় ওষুধও মজুত করা হচ্ছে। কোনও কারণে গৃহহারাদের জন্য শিবির করতে হলে, তার জন্যও তৈরি থাকছে পুর-স্বাস্থ্য দফতর। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে পুরসভার ডাক্তারদেরও।

ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাওড়া পুরসভাও। হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, পরিস্থিতির উপরে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কোনও সমস্যা হলে বাসিন্দাদের সেখানে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। বাতিল হয়েছে নিকাশি ও ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের ছুটি। নিকাশি কর্মীদের রাস্তায় নেমে কাজ করতে বলা হয়েছে। বিভাগীয় মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র জানান, পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পুরসভার ছ’টি পাম্পিং স্টেশনকেও সক্রিয় রাখা হয়েছে। তিনি নিজেও এলাকায় ঘুরবেন বলে জানিয়েছেন শ্যামলবাবু।

প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বিধাননগর পুর-নিগম এবং নবদিগন্ত শিল্পনগরীতেও। এ বার বর্ষায় অল্প বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়েছে বিধাননগরের বহু এলাকা। সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই ভারী বৃষ্টির মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে হয়েছে বলে পুর সূত্রের খবর। বিধাননগর পুর-নিগমের প্রশাসক পবন কাডিয়ান জানান, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার জন্যে পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে। নিকাশি ও পয়ঃপ্রণালী ঠিক রাখতে কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে নিকাশি পাম্পের সংখ্যা।

পাঁচ নম্বর সেক্টর এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অতি ভারী বৃষ্টি কিংবা ঝড়ের মোকাবিলায় পরিকাঠামো মজুত রয়েছে তাঁদের। এ ছাড়াও, হিডকো, সেচ দফতর, পূর্ত দফতরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে বলে জানান বিধাননগর পুর-নিগম ও নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ।

Municipality disaster rain storm Maniktala sector five
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy