Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গরফায় বন্ধ ঘরে দুই বৃদ্ধের রহস্যমৃত্যু

সিলিং পাখার সঙ্গে নাইলনের দড়ি ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছিল পার্থের দেহ। দেহটির হাত-পা থেকে গড়িয়ে পড়ছিল রক্ত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

একটি বহুতলের বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল দুই বৃদ্ধের দেহ। বুধবার চতুর্থীর সকালে গরফা থানা এলাকার কিশলয় স্কুল রোড থেকে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম পার্থ গঙ্গোপাধ্যায় এবং গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁরা দুই ভাই। তাঁদের বয়স আনুমানিক ষাটের আশেপাশে।

এ দিন সকালে ওই বহুতল থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গরফা থানার পুলিশ। পাশের পুজোমণ্ডপে সে সময়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছিল। সেখান থেকে কয়েক জনকে ডেকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। বসার ঘরের মেঝেয় তখন পড়ে চাপ চাপ রক্ত।

সেখানেই সিলিং পাখার সঙ্গে নাইলনের দড়ি ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছিল পার্থের দেহ। দেহটির হাত-পা থেকে গড়িয়ে পড়ছিল রক্ত। পাশের শোয়ার ঘরের বিছানায় পড়ে গৌতমের দেহ বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্মী। দেহ দু’টি এম আর বাঙুর হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃতদের আত্মীয়ের খোঁজ চলছে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

যে ফ্ল্যাট থেকে এ দিন মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার হয়েছে, তার মালিক বৃদ্ধ জীবন দাস জানান, বছর তিনেক আগে ফ্ল্যাটটি তিনি ওই দুই ভাইকে ভাড়ায় দিয়েছিলেন। মাস চারেক আগে ভাড়ার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ইদানীং পার্থ এবং গৌতম ফ্ল্যাট থেকে বেরোতেন না বলে দাবি করেছেন জীবনবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা কারও সঙ্গে মিশতেন না। সে ভাবে বেরোতেন না। মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঘরটা ওঁদের ছাড়তে বলেছিলাম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওঁরা ঘর ছেড়ে দেবেন বলেছিলেন। তা না করায় কাল সন্ধ্যায় ওঁদের ফ্ল্যাটে ঠাই, কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি। এ দিনও কেউ দরজা না খোলায় পুলিশকে জানিয়েছি।’’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গরফা থানার কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী জানান, ঘরটি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। বাইরে থেকে দরজা ভেঙে ঢোকায় হ্যাচবোল্ট ভেঙে যায়। নাইলনের দড়ি এবং ভাঙা হ্যাচবোল্টটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়াও ভিতর থেকে রক্তমাখা তিনটি ব্লেড পেয়েছে পুলিশ। দেহ দু’টিরই দু’হাত-পায়ের শিরা কাটা ছিল বলে ওই পুলিশকর্মীর দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন শিরা কাটার পরেও মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁস দিয়েছেন বলে অনুমান। ময়না-তদন্তের রিপোর্টের পরেই আসল কারণ বোঝা যাবে। মৃতদের উপরে অন্য কোনও রকম চাপ ছিল কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে।’’

এ দিন বাঁশদ্রোণী পার্ক এলাকা থেকেও এক বৃদ্ধার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানায়, বছর ষাটেকের ওই মৃতার নাম কেকা দাস। সকালে তাঁর ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে থানায় খবর দেন স্থানীয়েরা। পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটের সোফা থেকে দেহটি উদ্ধার করে এম আর বাঙুরে পাঠায়। এ ক্ষেত্রেও মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। পুলিশের অনুমান, দিন সাতেক আগেই ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Police Old Man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE