Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

১০ কোটির বিল দেবে না নবান্ন, বিপাকে হাওড়া

তৃণমূল হাওড়ার পুর বোর্ড দখল করার পরে ২০১৫ সালে বালি পুরসভাকে সংযুক্ত করা হয় হাওড়া পুরসভার সঙ্গে। যার পরে বালির ১৬টি ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট, নিকাশি সংস্কার, আলো লাগানোর মতো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়।

নবান্ন। ফাইল চিত্র।

নবান্ন। ফাইল চিত্র।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৫
Share: Save:

সরকারি নিয়ম মেনে কাজ হয়নি হাওড়া পুরসভায়। তাই বালির উন্নয়নে খরচ হওয়া প্রায় ১০ কোটি টাকার বিল বাতিল করে দিল নবান্ন। যে টাকার পুরোটাই খরচ হয়েছিল ঠিকাদারদের পকেট থেকে। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে মাথায় হাত পড়েছে ঠিকাদার ও পুরকর্তাদের। এত টাকা কোথা থেকে ঠিকাদারদের দেওয়া হবে, তা নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে পুরসভা। পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘টাকা কী ভাবে দেওয়া হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

তৃণমূল হাওড়ার পুর বোর্ড দখল করার পরে ২০১৫ সালে বালি পুরসভাকে সংযুক্ত করা হয় হাওড়া পুরসভার সঙ্গে। যার পরে বালির ১৬টি ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট, নিকাশি সংস্কার, আলো লাগানোর মতো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়। এর মধ্যে সব থেকে বেশি কাজ হয় রাস্তাঘাটের উন্নয়নে। ৬৫টি রাস্তা চিহ্নিত করে সেগুলির ভোল পাল্টে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় পুর বোর্ড। সেই উন্নয়নের কাজে বালির বহু নতুন ঠিকাদার নিজেদের যাবতীয় পুঁজি উজাড় করে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রাস্তাঘাট তৈরি করেন তাঁরা। এর পরে ১৬টি ওয়ার্ডে পুর ভোট হয়। নির্বাচনে তৃণমূল সব ক’টি আসন দখল করে নেয়।

এর পরে বেশ কয়েক বছর কেটে গেলেও বালির ঠিকাদারেরা কোনও টাকা ফেরত পাননি বলে অভিযোগ হাওড়া পুরসভার ‘সিভিল কনট্র্যাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর। তাদের অভিযোগ, নতুন ঠিকাদারদের অনেকেই পকেট থেকে প্রচুর ঠাকা ঢেলেছিলেন। কিন্তু ঠিকাদারদের দেওয়া প্রায় ১০ কোটি টাকার বিল পুরসভা রাজ্য অর্থ দফতরে পাঠালেও কোনও উত্তর আসেনি গত চার বছরে।

ঠিকাদারদের অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম সম্পাদক মানস ঘোষ বললেন, ‘‘গত চার বছরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, অর্থের অভাবে অনেক ঠিকাদারকেই ঠিকাদারির কাজ ছেড়ে চপ-মুড়ির দোকান করতে হয়েছে। কয়েক জন তো মারাই গিয়েছেন। কেউ কেউ আবার অর্থাভাবে চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছেন না।’’

হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পুরসভার পাঠানো ১০ কোটি টাকার বিল নিয়ে অর্থ দফতর চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, রাস্তা সংস্কারের জন্য ই-টেন্ডার না ডেকে সাধারণ দরপত্রের আহ্বান করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে কাজের বরাতও দেওয়া হয়। যদিও সরকারি নিয়ম বলছে, পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি কোনও কাজ হলে ই-টেন্ডার আবশ্যিক। কিন্তু তৎকালীন পুর বোর্ড এ সবের তোয়াক্কা করেনি। সরকারি নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ায় এখন কোনও ভাবেই ওই অর্থ বরাদ্দ করা যাবে না।

প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় অনিয়ম ঘটে গেল কী ভাবে? তৎকালীন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘সাধারণ টেন্ডার ডেকেই যে কাজ করানো হবে, সে ব্যাপারে মেয়র পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। প্রশাসনকে তা জানানোয় তাদের সম্মতির ভিত্তিতেই কাজ করানো হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Municipality Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE