Advertisement
E-Paper

হাওড়ায় সরছেন পুর কমিশনার

পুরসভা সূত্রের খবর, গত বুধবার রাতে নবান্ন থেকে মেয়র রথীন চক্রবর্তীর কাছে ই-মেল করে নতুন পুর কমিশনার নিয়োগ নিয়ে মেয়র পারিষদদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। মেয়র জানিয়েছেন, নতুন পুর কমিশনার নিয়োগ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে মেয়র পরিষদের বৈঠক ডেকে আলোচনা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০১:৫৮

হাওড়ার পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল নবান্ন। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাওড়া পুরসভায়। পুরসভা সূত্রের খবর, গত বুধবার রাতে নবান্ন থেকে মেয়র রথীন চক্রবর্তীর কাছে ই-মেল করে নতুন পুর কমিশনার নিয়োগ নিয়ে মেয়র পারিষদদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। মেয়র জানিয়েছেন, নতুন পুর কমিশনার নিয়োগ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে মেয়র পরিষদের বৈঠক ডেকে আলোচনা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

হাওড়া পুরসভায় বাম বোর্ডের সময় থেকেই নীলাঞ্জনবাবু পুর কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পুরসভা সূত্রে খবর, তৃণমূল পুর বোর্ড গড়ার পরে তাঁকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর নীলাঞ্জনবাবুর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু মেয়রের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় তাঁকে ওই পদেই বহাল রাখা হয়। নবান্ন থেকেও তাঁর চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু এর মধ্যেই আচমকা তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বাকি পুর আধিকারিক ও কর্মচারীদের মধ্যে নানা জল্পনা শুরু হয়ে যায়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ সবের মধ্যেই নতুন পুর কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নবান্ন থেকে হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রাজর্ষি মিত্রের কাছে নির্দেশ আসে। সেই নির্দেশ মতো বুধবার বিকেলে রাজর্ষিবাবু পুর ভবনে যান মেয়রের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলতে। এর পরেই পুর কমিশনারকে সরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে, মেয়রকে না জানিয়ে সরাসরি এ ভাবে কাউকে পুর কমিশনার পদে নিয়োগ করা যায় কি না। কারণ, পুর আইনের (১৯৮০) ১৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, পুর কমিশনার নিয়োগ করতে গেলে প্রথমে মেয়রের কাছে কমিশনার পদে কয়েক জনের নাম দিয়ে প্রস্তাব পাঠাতে হবে। তার পরে ১০ দিনের মধ্যে মেয়র পরিষদের বৈঠক ডেকে সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাম পাঠাতে হবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে।

কিন্তু এ সবের কিছুই না হওয়ায় মেয়র বুধবার বিকেলেই জরুর ভিত্তিতে মেয়র পারিষদদের বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে ঠিক হয়, পুর কমিশনার নিয়োগের এই পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা প্রয়োজনে নবান্নকে জানানো হবে। যদিও ইতিমধ্যে নবান্ন থেকে পদ্ধতি মেনে পুর কমিশনার নিয়োগ নিয়ে মেয়র পারিষদের মতামত জানতে চেয়ে মেল আসে পুর ভবনে। এই মেল আসার পরেই নড়েচড়ে বসেন পুর কর্তারা। ঠিক হয়, মেয়র পারিষদের বৈঠক ডেকে গোটা বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শুক্রবার মেয়র বলেন, ‘‘পুর কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতি শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী মেয়র পারিষদদের বৈঠক ডেকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হবে, আমরা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে তা জানিয়ে দেব।’’ মেয়রের বক্তব্য, যে কোনও সরকারি পদাধিকারীকে অবসর নিতেই হয়। সেই জায়গায় নতুন আধিকারিক যোগ দেন। কিন্তু নিয়োগ পদ্ধতি যাতে গণতান্ত্রিক নিয়ম মেনে হয়, তা দেখা দরকার।

পুরসভা সূত্রে খবর, শুক্রবার ছিল মেয়র পরিষদের বৈঠক। কিন্তু এ দিনের ওই বৈঠকে নতুন পুর কমিশনারের নিয়োগের প্রসঙ্গ না ওঠায় আলোচনা হয়নি। গত বারের বাতিল বৈঠকের আলোচ্যসূচি নিয়েই মেয়র পারিষদেরা আলোচনা করেছেন।

কিন্তু প্রশ্ন হল, এ দিনই তো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেত?

পুর কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বর্তমান পুর কমিশনার মেয়রের ঘনিষ্ঠ। মেয়র চাইছেন, আরও কিছু দিন যাতে বর্তমান পুর কমিশনার তাঁর কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সেই সুযোগ দিতে। তাই ১০ দিনের মধ্যে মেয়র পরিষদের পরবর্তী বৈঠক ডেকে প্রসঙ্গটি তোলা হবে বলে ঠিক হয়েছে।

Nabanna Deputy Commissioner Howrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy