কসবায় শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিকে খুনের চেষ্টার ঘটনা নিয়ে পুলিশকে এক হাত নিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এমনকি, বিহার থেকে বিনা বাধায় অস্ত্রশস্ত্র কলকাতায় পৌঁছে যাচ্ছে বলেও তোপ দেগেছিলেন তিনি। সেই ঘটনার পরেই শহরের রাস্তায় নিরাপত্তা বাড়াতে কয়েক দফায় নাকা তল্লাশি করার জন্য থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে নির্দেশ দিল লালবাজার। গত শনি এবং রবিবার শহরের ১০০টিরও বেশি জায়গায় রাতে এই নাকা তল্লাশি হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এত দিন পর্যন্ত ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে শহরের রাস্তায় যে নাকা তল্লাশি চালানো হত, তাতে স্থানীয় থানা সাহায্য করত। কিন্তু সেই তল্লাশির মূল উদ্দেশ্য ছিল ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। এ বার দুষ্কৃতীদের ধরতেও সেই তল্লাশি চলবে।
লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, থানাগুলিকে আপাতত বলা হয়েছে, শনি এবং রবিবার নাকা তল্লাশি চালাতে। তাতে সাহায্য করার জন্য বলা হয়েছিল ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে। সেই সঙ্গে থানার ওসি, অতিরিক্ত ওসি এবং এসিদের তল্লাশির সময়ে
উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। সেই মতো তাঁরা নাকা তল্লাশির সময়ে হাজির ছিলেন বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। ডিভিশনাল ডিসিদের গোটা বিষয়টির উপরে নজরদারি চালানোর জন্য বলা হয়েছিল। তবে, কখন, কোথায় ওই নাকা তল্লাশি হবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে। মূলত বিভিন্ন থানা এলাকায় ঢোকার ও বেরোনোর রাস্তায় এই তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছিল। এ ছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তাতেও নাকা তল্লাশি চালানো হয়েছে ওই দু’দিন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দু’দিন সন্ধ্যায় এবং গভীর রাতে নাকা তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাতে
সন্দেহজনক গাড়ি আটকে তল্লাশি থেকে শুরু করে আইনভঙ্গকারী মোটরবাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রবিবার রাতে গার্ডেনরিচে নাকা তল্লাশির সময়ে হেলমেটহীন চালকের মোটরবাইকের ধাক্কায় জখম হয়েছেন এক পুলিশ অফিসার। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিনা বাধায় দুষ্কৃতীরা স্কুটারে চেপে ওই পুরপ্রতিনিধির বাড়ির সামনে হাজির হয়েছিল। বিহার থেকে অস্ত্র নিয়ে এসেছিল তারা।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০১৯ সালে অনুজ শর্মা কলকাতার নগরপাল থাকাকালীন যৌথ নাকা তল্লাশি শুরু হয়েছিল। তাতে থানার ওসি থেকে ডিসিদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। পুলিশের একটি অংশের দাবি, সেই সময়ে নাকা তল্লাশিতে সাফল্য পেয়েছিল কলকাতা পুলিশ। শহরের রাস্তায় দুষ্কৃতীদের দাপট সে সময়ে কমেছিল। একটি থানার এক আধিকারিক জানান, এমনিতেই কর্মী-সঙ্কটে ভুগছে থানাগুলি। তাই দু’দফায় এই নাকা তল্লাশি চালানো কত দিন সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)