E-Paper

ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে, রাজ্যকে ‘তোপ’ পরিবেশ আদালতের

হুগলির ত্রিবেণী থেকে হাওড়ার সাঁকরাইল পর্যন্ত সরস্বতী নদীর গতিপথে দখলদারি এবং সংলগ্ন পুর এলাকার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ক্রমাগত মিশে তা নদীর অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫৭
A Photograph of National Green Tribunal

জাতীয় পরিবেশ আদালত। ফাইল ছবি।

বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরে চোখে ধুলো দেওয়া হচ্ছে! সরস্বতী নদী মামলায় রাজ্য সরকারকে এই মর্মেই ভর্ৎসনা করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। হুগলির ত্রিবেণী থেকে হাওড়ার সাঁকরাইল পর্যন্ত সরস্বতী নদীর গতিপথে দখলদারি এবং সংলগ্ন পুর এলাকার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ক্রমাগত মিশে তা নদীর অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিলে পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাতেই নদীতে নিকাশি বর্জ্য মেশা নিয়ে রাজ্য ভুল তথ্য দিচ্ছে বলে মন্তব্য আদালতের।

ওই মামলার শুনানির একটি পর্বে অভিযোগ ওঠে, হুগলির বাঁশবেড়িয়া পুর এলাকার তরল বর্জ্য নদীতে মেশায় তা দূষণ বাড়িয়ে তুলছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে হলফনামা জমা দিতে বলে আদালত। সেই হলফনামা দেখেই বিচারপতি রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। চলতি মাসের ১ তারিখের শুনানিতে আদালত সংশ্লিষ্ট হলফনামার প্রসঙ্গ টেনে এনে জানায়, বাঁশবেড়িয়া পুরসভা যে তথ্য দিয়েছে, তা রীতিমতো বিভ্রান্তিকর।

প্রসঙ্গত, বাঁশবেড়িয়া পুর কর্তৃপক্ষ রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে জানিয়েছেন, নদী সংলগ্ন এলাকার দখলদারি, রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বক্তব্য, দখলদার ও রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের যোগ রয়েছে কি না, এ প্রসঙ্গ এখানে অর্থহীন। কিন্তু ওই এলাকার তরল বর্জ্য কোথায় গিয়ে মিশছে, তার উত্তর দেওয়ার দায় পুর কর্তৃপক্ষেরই। সে প্রসঙ্গে বাঁশবেড়িয়া পুর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য চোখে ধুলো দেওয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়।

তার পরেই গত বুধবার পরিবেশ আদালত নির্দেশ দেয়, আগামী ২৭ মার্চের শুনানিতে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যানকে উপস্থিত থাকতে হবে। এবং কেন এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য পুরসভার তরফে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে দেওয়া হল, তার জবাব দিতে হবে। একই ভাবে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের উদ্দেশে আদালতের নির্দেশ, বিনা প্রশ্নে কেন তারা বাঁশবেড়িয়া পুরসভার দেওয়া তথ্য গ্রহণ করল? কেন দফতর তাদের তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি যেটা পরিবেশ আদালতের তরফে তোলা হয়েছে?

মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত এ প্রসঙ্গে সরকারি তথ্যের উল্লেখকরে জানাচ্ছেন, বাঁশবেড়িয়া পুর এলাকা থেকে দৈনিক ১৭ কোটি লিটার তরল বর্জ্য সরস্বতী নদীতে গিয়ে মেশে। কিন্তু ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ (এনএমসিজি)কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি যে নিকাশি পরিশোধন প্লান্টের নির্মাণ শেষ করেছেন, তার কার্যক্ষমতা দৈনিক মাত্র ৩০০ কিলোলিটার। অর্থাৎ, ওই প্লান্টের মাধ্যমে উৎপন্ন হওয়া তরল বর্জ্যের মাত্র ০.১৭৬৫% অংশ পরিশোধিত হবে। প্রবীণ এই পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘ফলে বোঝাই যাচ্ছে, উৎপন্ন হওয়া তরল বর্জ্য ও পরিশোধনের মধ্যে কতটা ফারাক রয়েছে। যার দায় পুরসভা, রাজ্য বা কেন্দ্র, কেউই এড়িয়ে যেতে পারে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

National Green Tribunal Saraswati River West Bengal government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy