E-Paper

অস্ত্র বিপণিতে নজর রাখায় কি গাফিলতি ছিল, তদন্তে পুলিশ

দোকান থেকে যে বেআইনি ভাবে অস্ত্র এবং কার্তুজ বাইরে পাচার করা হচ্ছে, তা আগেই পুলিশের নজরে এল না কেন? সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কলকাতায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণির সংখ্যা দশেরও কম।

শিবাজী দে সরকার, চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণিতে রাখা কার্তুজের হিসাব কি আদৌ রাখত কলকাতা পুলিশ? কার্তুজ-কাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই অস্ত্র বিপণির উপরে পুলিশি নজরদারি নিয়ে এই প্রশ্ন আরও জোরালো হচ্ছে। পুলিশি নজরদারিতে খামতির কারণেই যে কার্তুজ-চক্র জাল বিস্তার করেছিল, তা এখন কার্যত সন্দেহের ঊর্ধ্বে। এ বার এই ঘটনায় পুলিশি গাফিলতি খুঁজে বার করতে তদন্ত শুরু করল লালবাজার। পুলিশের শীর্ষ স্তরের নির্দেশেই এই তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

গত শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় ১৯০টি কার্তুজ এবং একটি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। পরে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে দু’জন বি বা দী বাগের একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণির কর্মী। তারা বেশ কয়েক মাস ধরেই দোকান থেকে কার্তুজ এবং অস্ত্র বেআইনি ভাবে বাইরে বিক্রি করছিল বলে অভিযোগ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, দোকান থেকে যে বেআইনি ভাবে অস্ত্র এবং কার্তুজ বাইরে পাচার করা হচ্ছে, তা আগেই পুলিশের নজরে এল না কেন? সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কলকাতায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণির সংখ্যা দশেরও কম। এই ধরনের বিপণিতে মজুত থাকা অস্ত্র এবং কার্তুজের হিসাব মিলিয়ে দেখার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের রিজ়ার্ভ ফোর্সের। রিজ়ার্ভ ফোর্সের ‘আর্মস অ্যারেস্ট সেকশন’ এই বিষয়টি দেখে।

দেশের অস্ত্র আইন অনুযায়ী, লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানে নতুন আগ্নেয়াস্ত্র বা কার্তুজ এলে সে সবের চালান রিজ়ার্ভ ফোর্সের ওই নির্দিষ্ট বিভাগে পাঠাতে হয়। সেই চালান পাওয়ার পরে ওই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিকের উপস্থিতিতে সেই অস্ত্র বা কার্তুজ খুলে দোকানে বিক্রির জন্য রাখা হয়। এমনকি, সেই বিপণি থেকে প্রতিদিন ক’টি আগ্নেয়াস্ত্র বা কার্তুজ বিক্রি হল, তা-ও জানাতে হয় নির্দিষ্ট ওই বিভাগকে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শুধু চালান দেখাই নয়, প্রতি মাসে এক জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকের সশরীরে বিপণিতে গিয়ে মজুত অস্ত্রের সঙ্গে তাঁদের কাছে থাকা তথ্য মিলিয়ে দেখার কথা। সারা মাস ধরে পাঠানো চালানের পরিপ্রেক্ষিতে দোকানে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজের সংখ্যা মিলছে কিনা, সেটাই দেখে নেওয়ার কথা পুলিশের। অর্থাৎ, অস্ত্র বা কার্তুজ নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে কোথাও পাঠানো হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখাই মূলত এর উদ্দেশ্য।

কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে বি বা দী বাগের ওই দোকানের মজুত অস্ত্রভান্ডারের হিসাব মিলিয়ে দেখতে গিয়ে বিস্তর গরমিল পাওয়া গিয়েছে বলে এসটিএফ সূত্রের খবর। ওই সমস্ত গরমিল রিজ়ার্ভ ফোর্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের নজরে কেন পড়ল না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। নিয়মিত নজরদারি থাকলে এই হিসাব ধরা পড়ার কথা। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে। কারও কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে। গাফিলতির প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Firearms

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy