Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

করোনা-জয়ী নার্সকে পাড়াছাড়া করার ‘হুমকি’

পড়শিদের হুমকির মুখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ওই নার্স। ঘটনাটি বেহালার রায়বাহাদুর রোড (পূর্ব)-এর।    

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

করোনা- কালে স্বাস্থ্যকর্মীদের হয়রানি কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। এ বার কোভিড-জয়ী এক নার্সকে তাঁর পরিবার-সমেত পাড়াছাড়া করার হুমকি দিলেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই নার্সের জন্য পাড়ায় করোনা ছড়াচ্ছে। তাই তাঁদের দাবি, হয় তাঁকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে অথবা চাকরি ছাড়তে হবে। এতেই শেষ নয়। পুরসভার সাফাইকর্মীরা যাতে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি থেকে জঞ্জাল না-নেন, সে ব্যাপারেও তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পড়শিদের হুমকির মুখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ওই নার্স। ঘটনাটি বেহালার রায়বাহাদুর রোড (পূর্ব)-এর।

আলিপুরের সেনা হাসপাতালে কর্মরত ওই নার্স জানিয়েছেন, কিছু উপসর্গ থাকায় তিনি গত ৩ অগস্ট করোনা পরীক্ষা করান। প্রথম বার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরে ফের কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় তিনি দ্বিতীয় বার পরীক্ষা করান। ১০ অগস্ট সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় তাঁকে সেনা হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। ওই মহিলার ছেলের দাবি, মায়ের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় তিনি ও তাঁর বাবা গৃহ-পর্যবেক্ষণে ছিলেন।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২০ অগস্ট ওই নার্সের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। অভিযোগ, এর পরেই পড়শিদের হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ওই স্বাস্থ্যকর্মীর ছেলে জানান, তাঁর মা বাড়ি ফেরার আগেই এলাকায় আরও কয়েক জন আক্রান্ত হন। কিন্তু পড়শিরা অভিযোগ করেন, ওই নার্সের জন্যই পাড়ায় করোনা ছড়াচ্ছে। মহিলা জানিয়েছেন, পুরসভার সাফাইকর্মীও তাঁদের বাড়ি থেকে জঞ্জাল নিচ্ছেন না। তাঁর অভিযোগ, তাঁর বাড়ি থেকে জঞ্জাল নিলে সংক্রমণ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়বে, এমন কথাও বলেছেন পড়শিরা।

হেনস্থার এখানেই শেষ হয়নি। অভিযোগ, সুস্থ হয়ে হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন এলাকার আর কেউ আক্রান্ত হলে ওই নার্স ও তাঁর পরিবারকে দেখে নেওয়া হবে বলেও পড়শিরা হুমকি দিয়েছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বেহালা থানার দ্বারস্থ হয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকর্মীর ছেলে। ঘটনাটি জানিয়েছেন পাড়ার ক্লাবেও। পুলিশ এসে পড়শিদের বুঝিয়ে গেলেও হেনস্থা বা হুমকি বন্ধ হয়নি। শেষে সোমবার ফের থানায় যান ওই যুবক। কিন্তু এ দিনও তিনি পুলিশি সহায়তা পাননি।

যদিও ওই নার্সের আনা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর তারক সিংহ বলেন, ‘‘আমার এলাকায় এমন ঘটনা ঘটতেই পারে না। যাঁরা এমন অভিযোগ করছেন, তাঁরা ঠিক বলছেন না।’’ অন্য দিকে, অভিযোগ পাওয়ার পরে রাতে এলাকায় গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয় বেহালা থানার তরফে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Behala Nurse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE