Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নির্দেশিকা জুড়ে নার্সদের প্রতি বার্তা

পরামর্শ তালিকার শুরুতেই নার্সদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব রাখার কথা বলা হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২৫
Share: Save:

এ রাজ্যে মাতৃত্বকালীন মৃত্যু এবং সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চাবিকাঠি কি শুধু রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের হাতে? সোমবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা এ বিষয়ের আটদফা পরামর্শ তালিকার শুরু এবং শেষটি ছিল নার্সদের উদ্দেশ্যে। যার জেরে উঠে আসছে এই প্রশ্ন।

পরামর্শ তালিকার শুরুতেই নার্সদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব রাখার কথা বলা হয়েছে। তালিকার শেষেও কাজের সময় সারণি মেনে চলা নিয়ে নার্সদের প্রতি সতর্কবার্তা ছিল। তবে কি এগুলির অভাবই রাজ্যে প্রসূতি মা এবং সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার কমানোর অন্যতম বাধা? বস্তুত, স্বাস্থ্য ভবনের তরফে এ দিনের পরামর্শ তালিকার মাঝে এও অবশ্য বলা হয়েছে, প্রসূতি মা এবং সদ্যোজাতের যত্নে যে ধরনের পরিষেবা জরুরি, তা হচ্ছে না। যে জন্য লেবার রুমে চিকিৎসাশাস্ত্র মেনে মা ও শিশুর যথাযথ যত্ন নিতে, বেড়াল-কুকুরের প্রবেশ রুখতে এবং কোনও ভাবেই যাতে সংক্রমণ না হয়, সে কথাও বলা রয়েছে ওই পরামর্শ তালিকায়।

যদিও তালিকার শুরুতে নার্সদের আরও ইতিবাচক মনোভাব এবং উৎসাহ নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। নার্সিং ক্যাডারের সকল স্তরে পদমর্যাদা মেনে যাতে কাজ হয়, তা নিশ্চিত করতে জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। পরামর্শ তালিকার শেষে রয়েছে, ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্সদের ৩০ শতাংশের বেশি যেন গরহাজির না থাকেন। একই সঙ্গে প্রসূতি মা ও তাঁদের পরিজনেদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কথাও তালিকায় স্থান পেয়েছে।

যার প্রেক্ষিতে রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের যে অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে ওঠে, তাতে সরকারি ভাবে সিলমোহর পড়ল কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। পদমর্যাদা মেনে কাজ করার বিষয়টিও কেন নার্সদের স্মরণ করিয়ে দিতে হল? স্বাস্থ্য দফতরের এমন পরামর্শ ঘিরে এ দিন দু’ধরনের মতামত উঠে এসেছে। স্বাস্থ্য ভবনের নার্সিং আধিকারিকদের একাংশের দাবি, পরামর্শের বয়ান থেকে ভুল বার্তা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নার্সিং ক্যাডারেরা অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ ভাবে কাজ করেন। অন্য দলের অবশ্য বক্তব্য, পরিষেবা যাতে আরও ভাল হয়, সে জন্য মাঝেমধ্যে এমন কথা জরুরি। পরামর্শের আকারে সেটাই করা হয়েছে।

নার্সিং ক্যাডারের প্রতি এ দিনের বার্তা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত বছর প্রতি এক লাখে মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার ছিল ১০১। এ বছর তা কমে হয়েছে ৯৪। সারা দেশের তুলনায় রাজ্য অনেক ভাল জায়গায় রয়েছে। আরও ভাল করতে হলে পরামর্শ জারি করতেই হত। নার্সেস ইউনিটির সহ সম্পাদিকা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার কমানো প্রসঙ্গে নার্সদের কাজ নিয়ে এমন পরামর্শে হতবাক। কী ধরনের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই নির্দেশিকা জারি করা হল তা স্বাস্থ্য ভবনকে স্পষ্ট করতে হবে।’’

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলছেন, “রাজ্যের সব জায়গায় প্রসূতি মায়েদের সমান ভাবে যত্ন নেওয়ার কাজ যাতে আর‌ও ভাল ভাবে হয়, সে জন্য পরামর্শগুলি দেওয়া হয়েছে। দেখা গিয়েছে, প্রসূতি মায়েরা হাসপাতালে যদি ঘরের মতো ব্যবহার পান তা হলে অনভিপ্রেত ঘটনা কমানো যায়। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Department Nurse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE