E-Paper

কম দৃশ্যমানতায় বিমান অবতরণ বাধাহীন করতে কলকাতায় নতুন প্রযুক্তি

২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি কলকাতা বিমানবন্দরে চালু হয়েছিল ‘ক্যাট থ্রি বি’ মানের ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং ব্যবস্থা। তবে, সেটি এত দিন সীমাবদ্ধ ছিল মূল রানওয়ে, অর্থাৎ রাজারহাট-নিউ টাউনের দিক থেকে বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:১০

—প্রতীকী চিত্র।

শীতের শুরুতেই কলকাতা বিমানবন্দরে দৈনিক যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বছরের অন্য সময়ে দৈনিক যাত্রী সংখ্যা যেখানে ৫০ হাজারের আশপাশে থাকে, সেখানে শীত পড়তেই ওই সংখ্যা ঘোরাফেরা করছে দৈনিক ৬০ থেকে ৬২ হাজারের আশপাশে। চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে প্রায় সব বিমান সংস্থাই উড়ানের সংখ্যা বাড়িয়েছে। এই অবস্থায় কম দৃশ্যমানতার পরিস্থিতিতে উড়ানের চাপ সামাল দিতে কলকাতা বিমানবন্দরের মূল রানওয়ের দু’প্রান্তেই যন্ত্র নির্ভর বিমান অবতরণ ব্যবস্থা বা ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) চালু করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ওই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি কলকাতা বিমানবন্দরে চালু হয়েছিল ‘ক্যাট থ্রি বি’ মানের ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং ব্যবস্থা। তবে, সেটি এত দিন সীমাবদ্ধ ছিল মূল রানওয়ে, অর্থাৎ রাজারহাট-নিউ টাউনের দিক থেকে বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে। এ বার মূল রানওয়েরই অপর প্রান্ত, অর্থাৎ যশোর রোড সংলগ্ন মধ্যমগ্রামের দিক থেকেও কম দৃশ্যমানতার পরিস্থিতিতে বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির সুফল মিলবে।

প্রসঙ্গত, শীতকালে বিশেষত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ঘন কুয়াশা থাকলে রানওয়ের দৃশ্যমানতা মাঝেমধ্যেই আচমকা অনেক নেমে আসে। চলতিবছরের শুরুতে দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারের নীচে নেমে যাওয়ার কারণে বেশ কয়েক দিন বিঘ্নিত হয়েছিল বিমান ওঠা-নামা।

কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের আগে আকাশ থেকে রানওয়ের অবস্থান বুঝতে ন্যূনতম ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতা প্রয়োজন হয়। একে বলা হয় রানওয়ে ভিসুয়াল রেঞ্জ (আরভিআর)। বিমান ওড়া এবং অবতরণের ক্ষেত্রে পাইলটদের যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে তাই উপযুক্ত দৃশ্যমানতার বিষয়টি বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

আধুনিক ব্যবস্থায় রানওয়ের দৃশ্যমানতা ৩০০ মিটারে নেমে এলেই বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। একে বলে ‘লো ভিজ়িবিলিটি প্রসিডিয়োর’। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, মূল রানওয়ের দু’প্রান্তেই আইএলএস প্রযুক্তি থাকায় কোনও কারণে দৃশ্যমানতা হঠাৎ অনেকটা কমে এলেও বিমান অবতরণের প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হবে না। শীতকাল ছাড়াও বর্ষায় মেঘলা আবহাওয়ায় এই প্রযুক্তি কার্যকর। তবে, সে ক্ষেত্রে ওই প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রয়োজনীয় সঙ্কেত ও বার্তা বোঝার জন্য বিমানচালকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। রেডিয়ো সঙ্কেত নির্ভর এই ব্যবস্থায় বিমান অবতরণের সময়ে সেটির প্রকৃত অবস্থানের সঙ্গে মিলিয়ে রানওয়ের অবস্থান প্রতি মুহূর্তে জানানো হয় চালককে। সেই অনুযায়ী বিমানের অবতরণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয়।

কলকাতা বিমানবন্দরের মূল রানওয়ের উভয় প্রান্তে আইএলএস প্রযুক্তি চালু হওয়ার ফলে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও বিমানের অবতরণ প্রক্রিয়া তুলনায় যেমন অনেক মসৃণ হবে, তেমনই কমবে বিমানের জ্বালানি খরচ। পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলেরও (এটিসি)।

তবে, কলকাতা বিমানবন্দরের দ্বিতীয় রানওয়েতে ক্যাটাগরি ১ পর্যায়ের ইন্সট্রুমেন্টল্যান্ডিং ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ব্যবস্থা সবচেয়ে কম ৫৫০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Aeroplane Kolkata Airport

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy