ময়না-তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নাটকীয় মোড় নিল!
গত ১৮ সেপ্টেম্বর কেষ্টপুরের এডি ব্লকের একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় দর্পণরাজ সিংহ (২৩) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ। শিলিগুড়ির মেথিবাড়ির বাসিন্দা দর্পণ সল্টলেকের একটি হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন। কেষ্টপুরের ফ্ল্যাটে তাঁর সঙ্গে শিলিগুড়িরই বাসিন্দা এক তরুণী লিভ-ইন করতেন। পুলিশ সূত্রের খবর, তরুণীর বয়ান অনুযায়ী, তিনি শৌচাগার থেকে বেরিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় বেল্টের ফাঁস লাগানো অবস্থায় দর্পণের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তার পরে এক বন্ধুর সাহায্যে নিজেরাই দর্পণের দেহ নামিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করেন। ওই বেসরকারি হাসপাতাল বিধাননগর দক্ষিণ থানার অন্তর্গত। বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশের থেকে যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পায় বাগুইআটি থানার পুলিশ।
পরদিন অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দর্পণের ময়না-তদন্ত করানো হয়। ঘটনার কুড়ি দিনের মাথায় সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে ছেলের মৃত্যুর প্রকৃত তদন্ত চেয়ে থানার দ্বারস্থ হলেন মৃতের বাবা গগনরাজ সিংহ। পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তে বলা হয়েছে, দর্পণের শরীরে ১৯টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে গগনবাবু ছেলের মৃত্যুর জন্য ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধুদের দায়ী করেছেন।
বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘মারধরের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে এটি খুন না আত্মহত্যা, তা স্পষ্ট করা হয়নি। মৃতের পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দর্পণের দেহে আঘাতের চিহ্ন কী ভাবে এল, তা বোঝার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তরুণী জানিয়েছিলেন, ঘটনার সময়ে তিনি শৌচাগারে ছিলেন। একই ছাদের তলায় থেকে কেন দর্পণ এমন কাজ করলেন, তা জানতে চাইছে পুলিশ। আর এক বন্ধুর কী ভূমিকা ছিল, তদন্তে তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।