Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
New Year 2023

ভিড়ের যুদ্ধ! বড়দিনের বদলা বর্ষবরণে নিতে পারল না চিড়িয়াখানা, তবে লড়াই হল টানটান

দিনের শুরুটা ভালই হয়েছিল। সিংহ-জাগুয়ার দেখতে বেলার দিকে লম্বা লাইন ছিল কাউন্টারের সামনে। স্কোরবোর্ডে বিশাল রান তোলার পরেও দিনের শেষে সেই পিছিয়েই পড়তে হল চিড়িয়াখানাকে।

বড়দিনের মতো বর্ষবরণেও ভিড় ইকো পার্কে। ছবি: সংগৃহীত।

বড়দিনের মতো বর্ষবরণেও ভিড় ইকো পার্কে। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৩০
Share: Save:

এ বার জাঁকিয়ে শীত পড়েনি, তাতে কী? বর্ষবরণের মেজাজে খামতি ছিল না সামান্যও। শুধু ময়দান, চিড়িয়াখানা বা পার্ক স্ট্রিটই নয়, ভিড় উপচে পড়তে দেখা গেল শহরতলির পার্কেও। শুধু তা-ই নয়, তারা রীতিমতো চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিল শহরের প্রাণকেন্দ্রের ‘হটস্পট’গুলিকে।

রবিবার সকাল থেকেই ইকো পার্কের টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন ছিল। গাড়ি পার্কিং করার জায়গা পাচ্ছিলেন না কোন্নগর থেকে থেকে আসা রাহুল বসু। বললেন, “প্রতি বছরই এই দিন ময়দান বা চিড়িয়াখানায় যাই। স্বাদ বদলের জন্য এ বার ইকো পার্কে এসেছি। এত ভিড় হবে ভাবিনি।” ইকো পার্কের ওয়াটার বেলুনে চেপে আনন্দে আটখানা দশম শ্রেণির ছাত্রী বিদিশা মুখোপাধ্যায়। তার কথায়, “গত বছর চিড়িয়াখানা গিয়েছিলাম। এ বছরও সেখানেই যাওয়ার ইচ্ছে ছিল! কিন্তু ইকো পার্কে আসার পর সব মনখারাপ উধাও। এখানে এত জিনিস রয়েছে, জানতামই না।” বিরাটি থেকে পরিবার-সহ এসেছিলেন পুলকেশ হাজরা। তিনি বললেন, “বাড়ির কাছে এত সুন্দর একটা পার্ক থাকতে কেন ময়দানে যাব?”

বর্ষবরণের মতো ভিড়ের ছবি দেখা গিয়েছিল বড়দিনেও। ওই দিনেও তিল ধারণের জায়গা ছিল না ইকো পার্কে। ভিড় টানার দৌড়ে টানটান লড়াইয়ের পর পিছনে পড়ে গিয়েছিল চিড়িয়াখানা। কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়দিনে চিড়িয়াখানায় ৮৭ হাজারের বেশি মানুষের ভিড় হয়েছিল। ইকো পার্কের ভিড় ছিল ৯১ হাজারের ঘরে। অর্থাৎ, লড়াই হাড্ডাহাড্ডিই হয়েছিল। রবিবার বছরের প্রথম দিনে শেষ কথা কে বলবে, সে দিকে নজর ছিল অনেকেরই। ইকো পার্কের রকমারি বিস্ময় না আলিপুরের পশুপাখির বাগানে সিংহ-জাগুয়ার-ক্যাঙারুদের চাক্ষুষ করার মজা— এই দুইয়ের মধ্যে যে কোনও একটিকে বেছে নেওয়া কলকাতা ও শহরতলির কাছেও মোটেই সহজ হয় না।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

দিনের শুরুটা ভালই করেছিল চিড়িয়াখানা। বেলার দিকে কাউন্টারের সামনে বিশাল লাইনও ছিল। যা দেখে চিড়িয়াখানার এক কর্মী থমথমে মুখে বসে থাকা এক আধিকারিককে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘কী মনে হয়? আজ হবে?’’ জবাবে আধিকারিক বলেন, ‘‘বুঝতে পারছি না। কাউন্টিং শেষ হোক আগে।’’ বিকেল ৫টার কিছু পরে হঠাৎই ফোন বেজে ওঠে ওই আধিকারিকের। ফোন কানে চেপেই চেঁচিয়ে উঠলেন তিনি, ‘‘হয়েছে। রেকর্ড হয়েছে।’’ রবিবার মোট ৯০ হাজার ৯২৭ জন মানুষ জড়ো হন চিড়িয়াখানায়। যা ২০১৬ সালের পর সবচেয়ে বেশি।

কিন্তু শেষরক্ষা হল না। স্কোরবোর্ডে এত রান তোলার পরেও দিনের শেষে সেই পিছিয়েই পড়তে হল চিড়িয়াখানাকে। অন্তিম লগ্নে বাজিমাত করে বেরিয়ে গেল নিউটাউনের ইকো পার্ক। রবিবার রাত ৮টায় ইকো পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বার বর্ষবরণে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজারের কাছাকাছি লোক টেনে চিড়িয়াখানার মতো জনপ্রিয় স্থানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা। ইকো পার্কের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সকালে ভিড় একটু কমই ছিল। কিন্তু বেলা বাড়তেই যে ভাবে লোক বাড়তে লাগল! তখনই বুঝেছিলাম, আমরাই প্রথম হব। ঠিক তা-ই হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New Year 2023 Eco Park Alipore Zoo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE