ক্লাবে বসে চলছিল গল্পগুজব। হঠাৎ লাগোয়া মাঠে চোখ চলে যায় সকলের। সেখানে পুতুলের মতো ছোট্ট কিছু একটা নড়াচড়া করছে। সকলে দৌড়ে গিয়ে দেখেন, পুতুল নয়। ফুটফুটে এক শিশুকন্যা পড়ে রয়েছে মাঠে। গায়ে সুতোটিও নেই। শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে নেতাজিনগর থানার পল্লিশ্রী এলাকায়।
ক্লাবের সদস্যেরা জানান, শিশুটিকে উদ্ধারের পরেই দেখা যায়, মাঠের অপর প্রান্তে শুয়ে ঘুমোচ্ছেন তার মা। তোয়ালে জড়িয়ে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় দিদিমার কাছে। কিন্তু জানা যায়, শিশুটির মা ও দিদিমা, কেউই মানসিক ভাবে সুস্থ নন। এমনকি, কয়েক দিন আগেই শিশুটিকে আবর্জনা ফেলার জায়গায় ফেলে এসেছিলেন তার মা। সে দিনও পাড়ার লোকজনই উদ্ধার করেছিলেন শিশুটিকে। এ কথা জানতে পেরে আর ঝুঁকি নেননি ক্লাবের সদস্যেরা। তাঁরা ফোন করেন কলকাতা চাইল্ড লাইনে।
পল্লিশ্রীর ওই ক্লাবের সম্পাদক তিমিরবরণ রায়ের কথায়, ‘‘বাচ্চাটির গায়ে র্যাশ বেরিয়ে গিয়েছে। এই ঠান্ডায় যে ভাবে ওকে বারবার ফেলে দেওয়া হচ্ছে, তাতে শিশুটির বড় বিপদ ঘটে যাবে।’’ তিনি জানান, এর আগেও এক বার এ ভাবে ফেলে দেওয়ায় শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তখন ক্লাব আর পাড়ার লোকজনই তাকে এম আর বাঙুরে ভর্তি করিয়ে সুস্থ করে আনেন।
এ দিন খবর পেয়েই শিশুটির বাড়িতে পৌঁছন চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা। কিন্তু দিদিমা তাঁদের শিশুটির কাছে ঘেঁষতে দেননি। পরে কলকাতা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর দিলীপ বসু জানান, তাঁরা গোটা বিষয়টি উত্তর ২৪ পরগনার শিশুকল্যাণ সমিতিকে (কলকাতারও দায়িত্বে থাকা) জানিয়েছেন, যাতে তাড়াতাড়ি শিশুটিকে উদ্ধার করা যায়। তার মা ও দিদিমারও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর। দিলীপবাবু জানান, মা সন্তানকে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসছেন, এমন ঘটনা তাঁরা আগে দেখেননি।
এ দিন পল্লিশ্রীর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরে বেরিয়ে এলেন শিশুটির দিদিমা। কোলে সদ্যোজাত নাতনি। তাঁর ভাই জোছন রায়চৌধুরী জানান, ভাগ্নীর পাশাপাশি তাঁর দিদিও মানসিক ভাবে অসুস্থ। বেশ কয়েক বার চিকিৎসাও হয়েছে। কিন্তু সমস্যা কমেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy