প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে কম অভিযোগ নেই। এ বার সেই চাকরি সরাসরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তার বিরুদ্ধে।
যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে, তাঁরই প্রাক্তন দেহরক্ষী গিয়ে থানায় নালিশ জানিয়েছেন। অভিযোগ, এই দেহরক্ষীকে ব্যবহার করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বিভিন্ন যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন।
শুধু কলকাতার হরিদেবপুর থানাতেই নয়, প্রাক্তন ওই দেহরক্ষী অতুলকুমার হাজারি চিঠি পাঠিয়েছেন লালবাজার ও ভবানী ভবনেও। যদিও এ ব্যাপারে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশের অভিযোগে অতুলবাবু জানিয়েছেন, অভিযুক্ত রঞ্জন সরকার একটি স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। প্রাক্তন সেনাকর্মী অতুলবাবুকে তিনি ব্যক্তিগত দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষক এবং কারারক্ষী পদে নিয়োগের জন্য তিনি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। ভুয়ো ওয়েবসাইটে পরীক্ষার ফলও বের করেছিলেন। কিন্তু আদতে কেউই চাকরি পাননি। বেশ কিছু লোক অতুলবাবুর মাধ্যমেও টাকা দিয়েছিলেন।
অতুলবাবুর দাবি, প্রতারণার ঘটনা টের পাওয়ার পরেই তিনি প্রতিবাদ করেন। এ জন্য তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন রঞ্জনবাবু। অতুলবাবুর মাধ্যমে টাকা দেওয়া হলে তিনিও তো অপরাধে যুক্ত হয়েছিলেন! টাকা দিয়ে যে সরকারি চাকরি মেলে না তা জানার পরেও কেন লোকের কাছ থেকে টাকা তুলেছিলেন তিনি? অতুলবাবুর জবাব, ‘‘আমি বুঝতে পারিনি।’’ তাঁর এ-ও দাবি, নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে বেশ কিছু লোকের টাকা মিটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে রঞ্জনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। পুলিশ এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি।’’
টেট পরীক্ষায় চাকরির জন্য প্রতারণা এবং ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরির অভিযোগে শিক্ষা দফতর বিধাননগর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিল। তাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। তা হলে এ ক্ষেত্রে পুলিশ এখনও কাউকে ধরপাকড় করছে না কেন? পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, হরিদেবপুর থানা অতুলবাবুর অভিযোগ জমা নিলেও তা নিয়ে বিশেষ নাড়াচাড়া করেনি। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে দেখে বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়নি লালবাজার ও ভবানী ভবন। যদিও পুলিশেরই একাংশের দাবি, টেট পরীক্ষা নিয়ে এমনিতেই বারবার বিব্রত হয়েছে প্রশাসনের শীর্ষ স্তর। তার উপর এমন অভিযোগে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে তা দুর্নীতি দমনে প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগকেই জোরালো করবে।
হরিদেবপুর থানা ও লালবাজার সূত্রের দাবি, প্রতারিত কেউ অভিযোগ করেননি। ফলে বিষয়টি আগে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগকারীর কাছ থেকে প্রতারিতদের ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করার কাজ চলছে। কিন্তু সেই কাজ কত দিনে শেষ হবে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy