জাতীয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।
তিন বছর আগে একটি মামলা সম্পর্কে জাতীয় পরিবেশ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘শিল্পজাত তরল বর্জ্য (ইন্ডাস্ট্রিয়াল এফ্লুয়েন্ট) নদীগুলিতে উপচে পড়ছে। যা জলকে ক্রমাগত দূষিত করে চলেছে।’ এই দূষণ রোধে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ উল্লেখ করে রাজ্যগুলির কী করণীয়, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। কিন্তু তার পরেও কি পরিস্থিতির কিছুমাত্র পরিবর্তন হয়েছে? রাজ্যের পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, বিন্দুমাত্র নয়।
তাঁদের এই বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, জাতীয় পরিবেশ আদালতের বুধবারের নির্দেশে। যেখানে শিল্পজাত তরল বর্জ্য খালের জল দূষিত করছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এক বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে দিয়েছে আদালত। আবেদনকারীর বক্তব্য ঠিক প্রমাণিত হলে দূষণ সৃষ্টিকারী সংস্থার কাছ থেকে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ আদায়ের পাশাপাশি আইন অনুযায়ী পদক্ষেপের কথাও সেখানে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী অঙ্কুর শর্মার দাবি, শিল্পজাত তরল বর্জ্যের কারণে মাত্রাছাড়া অবস্থায় পৌঁছেছে হাওড়ার বড়জোলা খালের দূষণ। সাঁকরাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, পলি পার্ক, জালান ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স-সহ একাধিক শিল্প সংস্থার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ওই খালে এসে মিশছে। যার ফলে শুধু যে খালের জলই দূষিত হচ্ছে তা নয়, বরং সংলগ্ন পুকুর, জলাশয় এমনকি চাষের জমিও দূষিত হয়ে চলেছে।
অঙ্কুরের ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পরিবেশ আদালত পাঁচ সদস্যের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছে। কমিটির সদস্যেরা হলেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক জন করে সিনিয়র বিজ্ঞানী, হাওড়ার জেলাশাসক বা তাঁর নির্বাচিত প্রতিনিধি, রাজ্য সেচ দফতরের এক জন সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এবং রাজ্য জল তদন্ত অধিদফতরের (স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেট বা এসডব্লিউআইডি) এক জন সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার।
আদালতের নির্দেশ, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই কমিটি দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে বড়জোলা খালের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। কোন কোন শিল্প সংস্থা নিয়ম লঙ্ঘন করে শিল্পজাত তরল বর্জ্য অপরিশোধিত অবস্থায় খালের জলে ফেলছে, তাদের নাম ও ঠিকানার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। একই সঙ্গে কী ভাবে দূষণ কমানো যেতে পারে, তার পন্থা নিজেদের রিপোর্টে উল্লেখ করতে হবে কমিটিকে। এই পুরো বিষয়ে পরিকাঠামোগত ও অন্য সাহায্যের জন্য হাওড়ার জেলাশাসকের অফিস নোডাল সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ সেপ্টেম্বর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy