Advertisement
E-Paper

বিদ্যুৎ বন্ধ, গরমে নষ্ট হতে পারে বহু দুষ্প্রাপ্য নমুনা

প্রয়োজন ছিল আলাদা বড় একটা ঘরের। যেখানে পুরনো দুষ্প্রাপ্য প্রাণীদের (ভিতরে খড় ভরা, বাইরে আসল চামড়া, আঁশ ও লোম-সহ) সংরক্ষণ করা যাবে। জায়গার অভাবে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের দোতলার বারান্দায় কাঠের ফ্রেম দিয়ে কাচের শো-কেসে রাখা ছিল স্টাফ করা প্যাঙ্গোলিন, মার্মোসেট। কাচের পাত্রে ফর্মালিনে ডোবানো ছিল ডলফিন, ভালুক, সিংহের ভ্রূণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৬ ০১:১৬
স্টাফ করা কাঠবিড়ালি। পুড়ে যাওয়ার আগে ও পরে। — নিজস্ব চিত্র

স্টাফ করা কাঠবিড়ালি। পুড়ে যাওয়ার আগে ও পরে। — নিজস্ব চিত্র

প্রয়োজন ছিল আলাদা বড় একটা ঘরের। যেখানে পুরনো দুষ্প্রাপ্য প্রাণীদের (ভিতরে খড় ভরা, বাইরে আসল চামড়া, আঁশ ও লোম-সহ) সংরক্ষণ করা যাবে। জায়গার অভাবে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের দোতলার বারান্দায় কাঠের ফ্রেম দিয়ে কাচের শো-কেসে রাখা ছিল স্টাফ করা প্যাঙ্গোলিন, মার্মোসেট। কাচের পাত্রে ফর্মালিনে ডোবানো ছিল ডলফিন, ভালুক, সিংহের ভ্রূণ। সোমবার বিকেলের আগুনে তাদের বেশির ভাগই পুড়ে ছাই। পুড়ে যাওয়া কালচে কঙ্কালটা শুধু দেখা যাচ্ছে।

এ সব তো আছেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান পার্থিব বসুর আরও বেশি উদ্বেগের কারণ, সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রাণীর কোষগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়াটা। ওই কোষের মধ্যেই রয়েছে লুপ্ত হওয়া প্রাণীগুলির ডিএনএ। আগুন সেই সব নমুনাকে ছোঁয়নি বটে, কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই সব ‘অমূল্য’ সামগ্রী। পার্থিববাবু বলেন, ‘‘ওই কোষগুলির নমুনা সংরক্ষণ করা হয় মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়। যার জন্য সারা বছর, সকাল থেকে রাত ২৪ ঘণ্টা বিশেষ রেফ্রিজারেটর চালু থাকে। সোমবার আগুন লাগার পর থেকেই বিদ্যুৎ নেই। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তা ফিরে আসেনি।’’

পার্থিববাবুর আশঙ্কা, ‘‘সঠিক তাপমাত্রা না থাকায় ওই সব নমুনা খারাপ হয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে কিছু নমুনা আমরা বিভাগের অন্য রেফ্রিজারেটরে সরাতে পেরেছি। কিন্তু, ইতিমধ্যেই সেগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে কি না, তা জানি না।’’

অধ্যাপক এনা রায় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কলেজের দোতলার বারান্দায় রাখা তিনটি রেড পান্ডার দেহ পুরো পুড়ে গিয়েছে। সেগুলির বয়স ১০০ বছরের বেশি। পুড়ে গিয়েছে অ্যান্টার্কটিকার লেপার্ড সিল-এর মুখ। এ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার নদীর ডলফিন, দক্ষিণ আমেরিকার স্পাইডার মাঙ্কির মূর্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পার্থিববাবুর কথায়, ‘‘বিভিন্ন দান ও উপহার থেকেই এই সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছিল।’’

করিডরের পাশে একটি বড় ঘরে আরও একটি সংগ্রহশালা আছে। আগুনে সেই সংগ্রহশালার প্রধান দরজা পুড়ে গেলেও ঘরের ভিতরে আগুন ঢুকতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে। এনাদেবীর অভিযোগ, ‘‘করিডরে যে সব স্টাফ করা প্রাণী রাখা ছিল, সেগুলো তো ওখানে রাখার কথাই নয়। বহু দিন ধরে বলা হয়েছে আলাদা ঘর দিতে। কিন্তু পাওয়া যায়নি।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিত এ দিন বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব নতুন করে সংগ্রহশালা তৈরি করে ফেলতে হবে।’’

জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে মার্চ মাসেই এক বার আগুন লেগেছিল সায়েন্স কলেজের অ্যানিমাল হাউসে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ছিল বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৫০০ জ্যান্ত ইঁদুর। আগুনে ইঁদুরগুলো পুড়ে মারা যায়।

এ বার নষ্ট হয়ে গেল তার থেকেও মূল্যবান সামগ্রী।

Ballygunge Science College specimens no electricity damage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy