Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফের সেতু? চায় না এলাকা

ভেঙে পড়ে যেন শাপে বর হয়েছে। নির্মাণের আগে আপত্তি ছিল। কিন্তু তখনও সেই আপত্তিগুলো একজোট হয়নি। নির্মীয়মাণ অংশ রাস্তায় ভেঙে পড়ায় এবং চব্বিশ জনের প্রাণ হারানোর পরে ‘না’-এর দাবি জোটবদ্ধ হয়েছে। আর উড়ালপুল-কাণ্ডের এক বছর পরে আরও জোর গলায় দাবি উঠছে, বিবেকানন্দ উড়ালপুল তৈরি করতে হবে না।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

ভেঙে পড়ে যেন শাপে বর হয়েছে।

নির্মাণের আগে আপত্তি ছিল। কিন্তু তখনও সেই আপত্তিগুলো একজোট হয়নি। নির্মীয়মাণ অংশ রাস্তায় ভেঙে পড়ায় এবং চব্বিশ জনের প্রাণ হারানোর পরে ‘না’-এর দাবি জোটবদ্ধ হয়েছে। আর উড়ালপুল-কাণ্ডের এক বছর পরে আরও জোর গলায় দাবি উঠছে, বিবেকানন্দ উড়ালপুল তৈরি করতে হবে না।

২০১৬-র ৩১ মার্চ নির্মীয়মাণ বিবেকানন্দ উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে গণেশ টকিজে। তার পরে কেটে গিয়েছে এক বছর। কিন্তু উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। আর এই অনিশ্চয়তাই যেন স্বস্তি দিচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।

বিবেকানন্দ উড়ালপুল তৈরি হলে উত্তর ও মধ্য কলকাতায় যানজট কমবে। কিন্তু এলাকার বাসিন্দা বা ব্যবসায়ী— কেউই চান না উড়ালপুল তৈরি হোক। বরং তাঁদের দাবি, পোস্তা এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা হোক। তা হলেই এলাকায় যানজট সমস্যার সমাধান হবে।

উড়ালপুলে কেন আপত্তি বাসিন্দাদের? তাঁরা জানান, এলাকার বহু বাড়ির বারান্দা বা জানলার সঙ্গে নির্মীয়মাণ ওই উড়ালপুলের দূরত্ব এক হাতেরও কম। এহেন কান ঘেঁষা উড়ালপুল তৈরি হওয়ায় তাঁদের আপত্তি ছিল। ঘিঞ্জি এলাকায় এমন উড়ালপুল স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হবে, এই আশঙ্কায় ভুগছিলেন তাঁরা। তা ছাড়া নির্মাণকাজ চলাকালীন ধুলো-বালির জেরে বহু মানুষের স্বাস্থ্যহানি হয়েছিল। যান চলাচল শুরু হলে তো দূষণ আরও বাড়ত। বাড়তো স্বাস্থ্যের সমস্যাও। শুক্রবার স্থানীয় এক বাসিন্দা বিন্দু খৈতান বলেন, ‘‘আমার বারান্দা ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। উড়ালপুল তৈরি হলে যা গাড়ি চলত, তাতে তো ঘরে থাকতেও সমস্যা হতো। এ ভাবে বসত বাড়ির কান ঘেঁষে কোনও উড়ালপুল বানানো যায় না কি!’’

আরও পড়ুন: সওয়াল করে চমক ধৃতদের

কেউ কেউ আবার অবশিষ্ট অংশ ভেঙে ফেলারও দাবি করছেন। নির্মীয়মাণ অংশের নীচে বাস যাতায়াত না করায় সমস্যা হচ্ছে স্থানীয়দের। আর এই ভেঙে ফেলার দাবির পিছনে সবচেয়ে ব়়ড় কারণ ‘আবার ভাঙার’ আতঙ্ক। তবে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গড়ে তোলার আগেই যদি এ ভাবে একজোট হওয়া যেত, তাহলে এত বড় বিপত্তি হয়তো এ়়ড়ানো যেত। উড়ালপুল-কাণ্ডে মৃত তপন দত্তের স্ত্রী কুমকুমদেবী শুক্রবার জানান, ‘‘এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় হয়। দেশে উন্নয়ন হোক, কিন্তু এমন যেন না হয় যাতে প্রাণ চলে যাওয়ায় আশঙ্কা থাকে।’’ উড়ালপুল তৈরির আগে বাসিন্দারা কাউন্সিলর ও পুলিশের কাছে তাঁদের আপত্তির কথা জানালেও তা ধোপে টেকেনি। কিন্তু এ বার তাঁদের দাবি গুরুত্ব পাবে বলে আশা বাসিন্দাদের।

কী ভাবছেন জন প্রতিনিধিরা? কাউন্সিলর ইলোরা সাহা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তবে বাসিন্দারা যে চান না, তা জানি।’’ মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক শশী পাঁজা বলেন, ‘‘উড়ালপুল নিয়ে উচ্চস্তরে আলোচনা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vivekananda Flyover
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE