ট্যাঙ্কার মালিকদের ধর্মঘটের জেরে তেল সরবরাহ নিয়ে সঙ্কটের আশঙ্কা। বহু পেট্রল পাম্পে বন্ধ পেট্রল ও ডিজেল সরবরাহ। শুক্রবার শ্যামবাজারের একটি পেট্রল পাম্পে গাড়ির ভিড়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
কোথাও পেট্রল পাম্পের পুরো পরিষেবাই বন্ধ করে দিতে হল বিকেলের পরে। কোথাও দিনভর বিক্রি হল স্রেফ ডিজ়েল। কোথাও আবার পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেই আশঙ্কায় জ্বালানি কিনতে আসা লোকজনকে বলা হল, ‘‘হয় বেশি দামের প্রিমিয়াম তেল নিন, নয়তো যাঁদের ট্যাঙ্ক ফাঁকা, তাঁদের আগে আসতে দিন।’’ বাগবাজারের একটি পাম্পে এই ঘোষণাতেও কাজ হয়নি। ট্যাঙ্ক সম্পূর্ণ ভরার পরে একটি ফাঁকা পাত্রেও জ্বালানি ভরে নেন এক ব্যক্তি!
ট্যাঙ্কার ধর্মঘটে তেলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার দিনভর শহরের বিভিন্ন পাম্পে দেখা গেল উৎকণ্ঠার এমনই ছবি। ক্রেতাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল পাম্প মালিকদের। যার জেরে আজ, শনিবারই বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক প্রসেনজিৎ সেন বললেন, ‘‘সন্ধ্যার আগেই বহু পাম্প শুকনো। ক্রেতাদের কাছে হেনস্থা হতে হয়েছে আমাদের। কী করণীয়, ঠিক করতেই বৈঠক।’’ পাম্প মালিকেরা জানাচ্ছেন, হাওড়ার মৌড়িগ্রামে ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিপোয় বিক্ষোভ চলায় ওই সংস্থার সমস্ত পাম্পে তো বটেই, এইচপিসিএল-এর ৫০-৬০ শতাংশ এবং বিপিসিএল-এর ২০-৩০ শতাংশ পাম্পেও তেল সরবরাহ বন্ধ।
চাঁদনি চকে বিপিসিএল-এর একটি পাম্পে দেখা গেল গাড়ির লম্বা লাইন। এক কর্মী বললেন, ‘‘ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে তেল না মেলায় এখানে ভিড় হচ্ছে। গাড়ির চাপে বসা যাচ্ছে না।’’ চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে এইচপিসিএল-এর একটি পাম্পের এক কর্মী বললেন, ‘‘এত চাপ যে, পাম্পে গাড়ি দাঁড় করানোরও জায়গা নেই। যাঁদের একেবারে তেল নেই, তাঁদেরই আগে দেওয়া হচ্ছে।’’
বাগবাজারে ইন্ডিয়ান অয়েলের একটি পাম্পের ম্যানেজার সুনীত ঝা বললেন, ‘‘বুধবার বৃষ্টির জেরে বহু পাম্পে তেল আসেনি। তার উপরে ধর্মঘট। তবে আমাদের অনেকটা তেল রয়েছে। কয়েক দিন সমস্যা হবে না।’’ বিধান সরণিতে ওই সংস্থারই একটি পাম্প বিকেলে ঝাঁপ বন্ধ রাখার বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। তা সত্ত্বেও একটি বাইকে তেল ভরতে দেখে প্রশ্ন করায় ম্যানেজার বললেন, ‘‘তেলের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া বাইকটা ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভদ্রলোক। যতই অভাব হোক, এটুকু সাহায্য করাই যায়।’’
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশন’-এর মৌড়িগ্রাম ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘প্রশ্ন তো শুধু গ্রাহকদের সমস্যা নিয়ে নয়, যাঁরা ট্যাঙ্কার চালান, তাঁদের রুটি-রুজিরও। আমরা এই কঠিন পরিস্থিতি দ্রুত শেষ করতেই লড়াই চালাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy