ফাইল চিত্র।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের চাপানউতোর চলছে গত কয়েক মাস ধরে। নানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য টাকাও বরাদ্দ করছে না ওই দফতর। আর তার জেরেই গত চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নিযুক্ত প্রায় ৩০০ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। ফলে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাঁদের। এঁদের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষী, সাফাইকর্মী থেকে শুরু করে গাড়িচালকও রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, চতুর্থ শ্রেণির ওই কর্মীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী নন। তাঁরা বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নিযুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি বলেন, ‘‘ওঁদের বেতন বাবদ সরকার থেকে অন্যান্য খাতে টাকা আসে। ওঁদের বকেয়া টাকা দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘু দফতরকে বার বার জানিয়েও কাজ হয়নি।’’
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু দফতরের অধীনে পরিচালিত। ওই দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘গত দু’বছরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। এমনকি, সরকারের দেওয়া টাকা আলিয়া ফেরত দিলেও তার পূর্ণাঙ্গ নথিও দিতে পারেনি। বার বার বলা সত্ত্বেও ওরা ঠিক হিসাব দিতে পারেনি। যে কারণে নতুন করে টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে না।’’ সূত্রের খবর, একাধিক অনিয়মের অভিযোগে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংখ্যালঘু দফতর। এর পরেই গত দু’মাস ধরে চাপানউতোর চলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সংখ্যালঘু দফতরের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের কথায়, ‘‘দু’পক্ষের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের শিকার হচ্ছেন সংস্থা নিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনশো কর্মী।’’
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালতলার ক্যাম্পাসে নিযুক্ত এক নিরাপত্তারক্ষীর কথায়, ‘‘টাকার অভাবে দ্বাদশ শ্রেণির ছেলের টিউশন বন্ধ করতে হয়েছে। ঘরে ভাত জুটছে না। লোকের কাছে কত দিন ধার করে চলবে!’’ ওই ক্যাম্পাসেরই আর এক নিরাপত্তারক্ষী বলছেন, ‘‘পুজোয় ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় তো দূরের কথা, পেটের খাবারই জোটাতে পারছি না।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অবশ্য বলছেন, ‘‘ওঁদের বেতন দিতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয়েছে। উনি অর্থ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন আলিয়াকে টাকা দিতে।’’ কিন্তু পুজোর আগে কি বকেয়া বেতন পাবেন ওই কর্মীরা? উপাচার্যের কথায়, ‘‘অর্থ দফতর থেকে টাকা না পেলে বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের তহবিল থেকেই ওঁদের বেতন দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy