রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত অন্তত হাজার দুয়েক শিশু প্রতি মাসে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসে। কিন্তু, পুরোদমে চিকিৎসা শুরুর আগেই বেপাত্তা হয়ে যায় অনেকে। আবার, তাদের একটা বড় অংশ কয়েক বার আসার পরে আচমকাই চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। সেই অবস্থার বদল ঘটাতে এ বার এন আর এসের সঙ্গে হাত মেলালেন ক্যানসার নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরা।
মঙ্গলবার এন আর এসের বহির্বিভাগের দোতলায় চালু হল ওই সংগঠনের সহায়তা কেন্দ্র। সেটি উদ্বোধনের পরে ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, ‘‘রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে আসা শিশুদের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের পরিবার মাঝপথেই চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। সেখানে সেতুবন্ধনের কাজ করবে এইসংগঠন। পাশাপাশি, সুস্থ হওয়ার পরে একটি শিশুকে পুনরায়স্কুলে ভর্তি করা থেকে শুরু করে অন্যান্য ভাবেও প্রয়োজনে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে তারা।’’ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তীও জানাচ্ছেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রক্তের ক্যানসারের বহু রোগী চিকিৎসা করাতে এলেও মাঝপথে হারিয়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রচেষ্টারমাধ্যমে সেই প্রবণতার ১০ শতাংশ কমাতে পারলেও অনেকটা উপকার হবে।’’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির ক্যানসার সচেতনতা ও নিয়ন্ত্রণ কমিটির চেয়ারম্যান পার্থ সরকার জানান, এসএসকেএমেও তাঁরা এমন সহায়তা কেন্দ্র খুলেছেন। যাতে প্রত্যন্ত জেলা থেকে আসা মানুষেরা ক্যানসারের চিকিৎসার নামে দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত না হন। পার্থ আরও বলেন, ‘‘এন আর এসে চিকিৎসা করাতে আসা শিশুদের তথ্য দেখে, পরবর্তী চেকআপের আগেই তাদের ফোন করা হবে। তখন যদি দেখা যায় কেউ আসতে চাইছেন না, তা হলে তার কারণ জেনে সেই মতো ব্যবস্থাকরা হবে।’’
তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রয়োজনে বাড়ি থেকে আসার বন্দোবস্তও করে দেওয়া হবে। আবার, সরাসরি সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে যে কোনও পরীক্ষা, ওষুধপত্র-সহ অন্যান্য বিষয়েও বন্দোবস্ত করা হবে। এর উদ্দেশ্য, মাঝপথে কেউ যেন চিকিৎসা বন্ধ না করে। তবে রোগীর পরিজনেদের হাতে কোনও টাকা দেওয়া হবে না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)